পাপ কখনও পিছু ছাড়ে না আজ হোক কাল হোক সে মূল্য নিতে আসবেই ।
ড.আলী আসগর
MBBS,FCPS,Phd(UK)
বিরক্ত চোখে তাকিয়ে আছেন। তার সামনে বসা রোগীটি অনেকক্ষন ধরে বসে আছে । কিছুই বলছে না ।
ড.আলী আসগর তৃতীয়বারের মত জিঞ্জাসা করলেন আপনার সমস্যা কি ?
রোগীটি এবার একটু নড়েচড়ে বসলেন।
ড.আলী আসগর ভ্রু কুচকালেন । তাকে আরও কয়েকজন রোগী দেখতে হবে ।
ড.আলী আসগর সাধারনত রাত নয়টার পর রোগী দেখেন না ।
আর এখন বাজছে ০৮:৪৭ মিনিট ।
ড.আলী আসগর এবার দরাজ গলায় বললেন আপনার সমস্যা বলুন ।
তার সামনে বসা রোগীটি মৃদু বললেন - আমারে পিপড়ায় কামড়ায় ।
ড.আলী আসগরের বিরক্ত আর ধরে না । একজনকে পিপড়ায় কামড়াতেই পারে । এটা কোন সমস্যা আর এজন্য কি ডাক্তারের কাছে আসতে হয় ?
ড.আলী আসগর শহরের একজন নামকরা ডাক্তার । সে ভিজিট প্রতি নেয় ১৫০০ টাকা ।
রোগীকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে গ্রাম খেকে আসা ।
এরা ডাক্তার দেখায়ে ভিজিট দেবার সময় টাকা নিয়ে নানা বাহানা করে ।
ডাক্তার আবার বললেন আপনার সমস্যা কি ?
আমারে পিপড়ায় কামড়ায় ।
ড.আলী আসগর এবার বিরক্ত হয়ে বলল এটা কোন সমস্যা না । আপনি চলে যান আমার দেখা শেষ আমি বাইরে বলে দিচ্ছি আপনাকে ভিজিট দিতে হবে না ।
রোগীটি এবার বললেন ডাক্তার সাব আমার সমস্যাটা একটু বুঝেন আমারে পিপড়ায় কামড়ায় ।
ড.আলী আসগরের বিরক্ত সীমা চরমে । সে বিরক্ত চেপে রেখে বলল-যান বাড়ি যান । যাবার সময় পিপড়া মারার ঔষধ নিয়ে যাবেন। বাড়ি পরিস্কার রাখবেন ।
খাবারের উচ্ছিষ্ট বাড়ি হতে দূরে ফেলবেন আর শোবার ঘরে খাবার খাবেন না । তাহলে আর পিপড়া কামড়াবে না ।
হয় না ডাক্তার সাব । অনেক চেষ্টা করছি । ডাক্তার সাব আমার কথাটা একটু ধ্যান করে শোনেন ।
টাকা দেয়া আমার জন্য বেপার না ।
আমি সাথে কইর্যার ৫০ হাজার টেকা লইয়্যা আছি । এইডা আপনে রাখেন । কিন্তু আমার সমস্যাটা একটু শুনেন ।
ভাল সমস্যায় পড়া গেল ।
ড.আলী আসগর তার এসিসটেন্সকে ডেকে বলল কয়জন রোগী আছে রিয়াদ ?
৫ জন স্যার
ঠিক আছে ওদের কে বল আজ আর দেখব না । কাল ওদের সিরিয়ালটা আগে দিও ।
হা এবার বলুন আপনার সমস্যা।
আমার নাম ছগীর। মাদারিপুরের রাজারচরে আমার বাড়ি ।
আমার স্বয় সম্পত্তি ঐখানে ব্যাপক । আমি ঐলাকায় ক্ষমতাধর একজন ব্যাক্তি ।
আমার এক খালা ছিল । অল্প সময়ে তার স্বামী মারা যাওয়াতে সে আমার বাসায় এসে উঠল তার পনের বয়সের মেয়েকে নিয়ে ।
আমার বাসায় থাকায় জায়গার অভাব ছিল না ।
তাই সে থাকত এখানেই ।
কিন্তু তার চিন্তা ছিল তার মেয়েকে নিয়ে । তার মেয়েটি ছিল অনেক সুন্দরী।
আপনাগো ঢাকার সুন্দর সুন্দর মাইয়্যা আর নায়িকারা রাহেলার নখের কাছেও যায় না । আমার খালার মেয়ের নাম রাহেলা ।
খালা তার মেয়েকে চোখে চোখে রাখত । কারন আমি মানুষ ভাল ছিলাম না ।
খালা রাতে ঘুমাত না । রাহেলাকে দেখে রাখত ।
থালা এত সতর্ক থাকার পরও শেষ রক্ষা করতে পারল না ।
একদিন দুপুর বেলা আমি ঘটনা ঘটিয়ে দিলাম ।
বাচ্চা মাইয়্যা আছিল । সহ্য করতে পারে নাই ।
রক্তে ঘর দুয়ার ভাসাইয়্যা দছিল । এখানেই শেষ ।
ঐ সময় আমি খালারে আমার লোক দিয়া দূরে সরাইয়া রাখছিলাম । আর এই ঝামেলার কারনে আমি আর রাহেলার লাশ সরাইবার পারি নাই ।
পরে রাইত্যের বেলা আমি রাহেলার ঘরে ডুইক্যা দেহি ঘর ভর্তি পিপড়া । ঝাকে ঝাকে পিপড়া তারে ধইর্যাে আছে ।
আমি সহ্য করতে না পেরে ঘর হতে বাহির হইয়্যা যাই ।
ঐ রাতেই রাহেলার লাশ আমি নদীতে ভাসাইয়্যা দিই ।
গ্রামে আমার ক্ষমতা থাকার কারনে আমি এই ঘটনা চাপা দিয়ে দিই ।
ঘটনা এটা না আসল ঘটনা ঘটে ২ মাস পরে ।
এক দুপুর বেলা আমার ঘুম ভাংগে পিপড়ার কামড়ে । আমি ভালোমত গোসল করি ।
ভাবলাম খাবারের কিছু হয়ত লেগে ছিল শরীরে । কিন্তু তার পর থেকে আমি কোথায় দশ মিনিট স্থর হয়ে থাকলেই পিপড়া চলে আসে ।
আমি অনেক ঔষধ লাগাইছি । কাজ হয় নাই । আমি গায়ে কেরোসিন মাইখ্যা ছিলাম।
তারপরও পিপড়া কমে নাই ।
আমি নদীর মাঝখানে নৌকা নিয়ে ৩ রাত ছিলাম। কিন্তু এক দিন পরেই পিপড়া এসে হাজির ।
পিপড়া আমারে কামড়ায় ।
ড.আলী আসগর লক্ষ্য করে দেখলেন ছগীর যেখানে বসে আছে সেখানে থেকে তার টেবিলের নিচ পর্যন্ত লম্বা পিপড়ার একটা লাইন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।