আপনি একজন নিরাপদ ব্লগার! মানে আমি একজন....
যারা ছবি তোলা শিখে ফেলেছেন তাদের কাছে এই পোষ্টের কোন মুল্য থাকবে না বিধায় এটি পড়ে দয়া করে সময় নষ্ট করবেন না।
লেখাটির কপিরাইট আমি নিজের কাছেই রাখছি!
© russel.mahmud
এই লেখাটি ধীরে ধীরে পুরোটা শেষ করার ইচ্ছে আমার আছে। এ লেকাটিকে আরো ভালো করতে কারো মন্তব্য কিংবা উপদেশ থাকলে জানাবেন। ধন্যবাদ। ...
গত কয়েকদিন ধরে যেসব লেখা এখানে প্রকাশিত হচ্ছে তাতে একজন ডিজিটাল ফটোগ্রাফারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক ধারনা এখানে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মুলত আমি চেষ্টা করছি যেন প্রাথমিক পর্যায়ে একজন ফটোগ্রাফার অটো মোড থেকে বেরিয়ে আসার প্রাথমিক ধারনাটি এখান থেকে পান। এর আগের পোষ্টগুলিতে মুলত এক্সপোজারের মুল তিন বিষয়ের দুটি আইএসও এবং শাটার স্পীড নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের আজকের বিষয় তৃতীয়টি: এপার্চার।
মুল বিষয়ে যাওয়া আগে বলে নেই,এই এপার্চার বিষয়টিকে রপ্ত করতে পারলে আপনি আপনার তোলা ছবিগুলোতে ক্রিয়েটিভ হওয়ার সুযোগ পাবেন। এখানেই লুকিয়ে আছে ফটোগ্রাফির ম্যাজিক।
এপার্চার কি? সহজ কথায় এপার্চার হলো ছবি তোলার সময় লেন্স কতখানি খোলা রয়েছে সেটি। আপনি যখন ক্যামেরার শাটার রিলিজ বোতামে চাপ দিচ্ছেন, সেটি ক্যামেরার লেন্স/ ফিল্মের সামনে একটি ছোট্ট জানালা খুলে দেয়। তার কারনেই ক্যামেরার ভেতরে আলো প্রবেশ করতে পারে। এখানে এপার্চার হলো সেই জানালার আকার। জানালার আকার যত বড় হবে ততই বেশি আলো প্রবেশ করবে আর আকার যত ছোট ততই কম আলো প্রবেশ করবে।
সাধারনত এপার্চার মাপা হয় এফ-স্টপ দিয়ে। বেশিরভাগ সময় এগুলো এভাবে লেখা হয়, যেমন এফ/২.৮, এফ/৫.৬, এফ/৮, এফ/২২ এরকম। একটার থেকে আরেকটা এফ স্টপ-এ গেলে আলো হয় দ্বিগুন বৃদ্ধি পায় অথবা অর্ধেকে নেমে আসে। যেমনটা শাটার স্পিডের ক্ষেত্রেও আমি বলেছিলাম।
তাহলে একটু মনে রাখুন, শাটার স্পিড এক ধাপ বাড়িয়ে দিয়ে যদি আপনি এপার্চার একধার কমিয়ে দেন তাহলে আসলে আপনি একই পরিমান আলো আপনার ক্যামেরার ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন।
নতুন ফটোগ্রাফাররা একটি বিষয়ে একটু ঝামেলায় পড়েন এই ভেবে যে এপারচারের নম্বর যত বড় হবে ততই বেশি আলো ক্যামেরায় প্রবেশ করবে। আসলে এপার্চারের ক্ষেত্রে নম্বর যত কম হবে সেটি তত বড় জানালা নির্দেশ করবে। একই ভাবে বড় নম্বরগুলিতে জানালার আকার ছোট হতে থাকবে। তার মানে হলো এফ/২.৮ আসলে কিন্তু এফ/২২ এর তুলনায় অনেক বড় জানালা বোঝায়। শোনাতে উল্টো মনে হলেও এটিই মনে রাখতে হবে বেশী করে।
ডেপথ অব ফিল্ড এবং এপার্চার: ছবি তোলার সময় এপার্চারে পরিবর্তানের কারনে ছবিতে বেশকিছু প্রভাব পরে। এর মাঝে যেটি আপনি মনে রাখতে হয়তো উৎসাহিত হবেন সেটি হলো ছবির ডেপথ অব ফিল্ডের পরিবর্তন।
সহজ কথায় ডেপথ অব ফিল্ড হলো আপনার তোলা ছবিতে যে জায়গাটি ফোকাসে থাকে। ডেপথ অব ফিল্ড বেশী হলে পুরো ছবিটাতে যা আছে সবই পরিস্কার দেখা যাবে। ধরুন একটি সিড়ির ২০ টি ধাপ আছে, আপনি এক মাথা থেকে ওই সিড়ির ছবি তুলেছেন।
বেশি ডেপথ অব ফিল্ড হলে দেখবেন ক্যামেরার কাছের দিককার ধাপ থেকে শুরু করে সবকটি ধাপই পরিস্কার দেখা যাচ্ছে। সহজ কথায় বলা যায় সাধারনত বড় নম্বরের এপার্চারে তোলা ছবির ডেপথ অব ফিল্ড বেশি হয়।
আবার ডেপথ অব ফিল্ড কম হলে দেখবেন, ছবির একটি অংশ পরিস্কার। আগে যে সিড়ির উদাহরনটি দিলাম, সেটি দিয়েই বোঝানো যায় ব্যাপারটি। ২০ টি সিড়ির মধ্যে যদি মাঝের দুটি পরিস্কার দেখা যায় আর সামনে পেছনে বাকি ধাপ গুলো ছবিতে ঝাপসা হয়ে আসে তাহলে ডেপথ অব ফিল্ড হলো ছবির পরিস্কার হয়ে আসা এক কিংবা দেড়ফুট ওই অংশটুকুই।
সাধারনত কম নম্বরের এপার্চারে তোলা ছবির ডেপথ অব ফিল্ড কম হয়।
তারমানে হলো ডেপথ অব ফিল্ড এর উপরে এপার্চারের প্রভাব অনেক। এখানে লেন্সেরও প্রভাব আছে, সেটি নিয়ে আমরা পরে আলোচনা করবো আশা করি। ছোট নম্বরের এপার্চার যেটিতে সবচেয়ে বড় জানালা থাকে সেখানে ডেপথ অব ফিল্ড কম হয়। আর বেশি নম্বরের এপার্চার যেখানে জানালা ছোট হয়, সেখানে আপনি ডেপথ অব ফিল্ড বেশি পাবেন।
ঝামেলা না করে সহজে বলি, ছোট এপার্চার নম্বর মানে ছোট ডেপথ অব ফিল্ড, বড় এপার্চার নম্বর মানে বড় ডেপথ অব ফিল্ড।
সবচেয়ে ভালো হয়, ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে দুর থেকে একটি ফুলের ছবি তোলার চেষ্টা করুন। একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ফুলের ক্লোজ আপ ছবি তুলুন। প্রতিটি ছবি তোলার আগে এক ধাপ করে বড় এপার্চার দিন। ছবিগুলোর পার্থক্য নিজেই দেখুন।
তাহলেই বুঝবেন এপার্চারের উপরে নিয়ন্ত্রন কতটা পার্থক্য এনে দিতে পারে ছবিতে।
কোথায় কেমন ডেপথ অব ফিল্ড: ধরুন আপনি দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ দেখাতে চাইছেন। যেখানে ক্যামেরার কাছের জিনিস থেকে শুরু করে দুরের আকাশ পর্যন্ত যা আছে তা পরিস্কার দেখাতে হবে। যাকে বলা হয় ল্যান্ডস্কেপ ফটো। এখানে ডেপথ অব ফিল্ড দরকার বড়।
তাই বড় নম্বরের এপার্চার ব্যবহার করতে হবে এখানে।
অনদিকে কারো একক ছবি তুলতে চাইছেন। যাকে বলে, পোট্রেট ছবি। সেখানে আসলে কম ডেপথ অব ফিল্ড দরকার। একানে আরো দরকার আপনার সাবজেক্টের পরিস্কার ছবি এবং তার সামনে-পেছনে ব্লার।
এমনটা চাইলে আপনার দরকার কম নম্বরের এপার্চার।
এছাড়াও ম্যাক্রো ছবি তোলার ক্ষেত্রে কম নম্বরের এপার্চার দরকার। কারন ম্যাক্রো ছবিতে মুল সাবজেক্টটিকেই সবার নজরে আসা প্রয়োজন। আর সাবজেক্ট ছাড়া বাকি সব কিছু থাকবে ব্লার বা আউট অব ফোকাস। সেক্ষেত্রে কম ডেপথ অব ফিল্ডই যুক্তিযুক্ত।
আশা করি এপার্চারের ব্যাপারটি বোঝাতে পেরেছি। এটি দিয়েই শেষ হচ্ছে এক্পোজার-এর প্রাথমিক পাঠ।
এক নজরে চারটি পাঠের আলোচ্য ছিলো
১. এক্সপোজারের প্রাথমিক পাঠ
২. আইএসও
৩. শাটার স্পিড
৪. এপার্চার
সামনে টিউটোরিয়াল গুলোতে আমরা দেখবো কিভাবে ডিজিটাল ক্যামেরার বভিন্ন সেটিংস এবং ফিচার গুলো নিয়ে কাজ করা যায়। এছাড়াও কিছু টিপস এন্ড ট্রিক্সও দিতে চেষ্টা করবো সবার জন্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।