আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাংবাদিকতায় সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ প্রেস কাউন্সিলের



সাংবাদিকতায় যোগ দিতে পরীক্ষার মাধ্যমে সনদ বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল। একটি সাপ্তাহিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায়ে প্রেস কাউন্সিল এ পরামর্শ দেয়। রায়ে বলা হয়, অ্যাডভোকেটদের জন্য বার কাউন্সিল ও চিকিৎসকদের জন্য মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল এর মতো সাংবাদিকতায়ও পরীক্ষার মাধ্যমে সাংবাদিকতার সনদ না নিয়ে এ পেশায় ঢোকা যাবে না এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসে গেছে। বুধবার একটি তথ্যবিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়। প্রেস কাউন্সিলের রায়ে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিকদের জন্য যে অনুসরণীয় আচরণ বিধি প্রণয়ন করেছে তা এ বিষয়ে যথেষ্ট নয়।

ঢাকা থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক শীর্ষ কাগজ’-এ একজন কাস্টমস কর্মকর্তাকে দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ওই কর্মকর্তা পত্রিকাটির বিরুদ্ধে প্রেস কাউন্সিলে মামলা দায়ের করেন। মামলার রায় পত্রিকার বিরুদ্ধে গেলে পত্রিকাটি প্রেস কাউন্সিলকেও অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিকতার সনদ প্রদানের এ পরামর্শ দেয়। প্রেস কাউন্সিলের গত ২০ অক্টোবরের বিস্তারিত রায়ে বলা হয়, কাস্টমস বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মোঃ মতিউর রহমান সাপ্তাহিক শীর্ষ কাগজের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ করেন যে, পত্রিকাটি ধারাবাহিকভাবে পরপর কয়েক সংখ্যায় তাকে দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে এবং এসব প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে তার পাঠানো প্রতিবাদলিপিকেও বিকৃত করে তাকে পুনরায় দুর্নীতিবাজ বলে আখ্যায়িত করে তার সম্মানহানি করে। অন্যদিকে প্রেস কাউন্সিলে লিখিত জবাবে যাচাই করে খবরের সত্যতা নিশ্চিত হয়েই এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে বলে শীর্ষ কাগজ থেকে দাবি করা হয়।

দু’পরে বিস্তারিত শুনানির পর প্রেস কাউন্সিলের ৫ এপ্রিল ২০১০-এর রায়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনসমূহকে ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করা হয় এবং পত্রিকাটিকে ভর্ৎসনা ও তিরস্কার করে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে পত্রিকাটি মামলার বাদির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পুনরাবৃত্তির পাশাপাশি মামলাটির বিচারের সাথে সম্পৃক্ত প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিরুদ্ধে বাদির কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ উত্থাপন করে পরপর প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ ব্যাপারে বাদির পক্ষ থেকে পুনরায় আবেদন করা হলে প্রেস কাউন্সিল পত্রিকাটির জবাব জানতে চায়। কিন্তু এবারও পত্রিকাটি প্রকাশিত প্রতিবেদনকে সমর্থন করে এবং একইসাথে প্রেস কাউন্সিলের বিচার কমিটির প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে। ফলে মামলাটির শুনানির জন্য প্রেস কাউন্সিলকে বিচারিক কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।

কিন্তু কমিটির চেয়ারম্যান পরিবর্তনের বিধান না থাকায় কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকেই আগের মতো দায়িত্ব পালন করতে হয়। দ্বিতীয় মামলার শুনানির দিন বাদির আইনজীবী হাজির হন কিন্তু পত্রিকা পরে কোন প্রতিনিধি হাজির হননি, এমনকি সময় প্রার্থনাও করেননি। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০ অক্টোবর প্রকাশিত মামলার রায়ে প্রেস কাউন্সিলের পক্ষ থেকে পত্রিকাটির তীব্র সমালোচনা করা হয়। এ রায়ে বলা হয় শীর্ষ কাগজ সম্পাদক পূর্ববর্তী মামলার বিচারিক কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিরুদ্ধে যে সকল মিথ্যা, বিদ্বেষপূর্ণ ও কুরুচিকর বক্তব্য প্রকাশ করেছিলেন তা শুধু সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা এবং সাংবাদিকদের জন্য অনুসরণীয় আচরণবিধির পরিপন্থী নয়, তা একজন সাধারণ ভদ্রলোকের আচরণেরও পরিপন্থী। বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের রায়ে আরো উল্লেখ করা হয়- আধা বিচারিক কর্তৃপরে আদালত অবমাননার মতো অপরাধের শাস্তি দেওয়ার মতা না থাকায় শীর্ষ কাগজের সম্পাদক প্রেস কাউন্সিলের বিচারিক কমিটির বিরুদ্ধে এধরনের বিরুপ মন্তব্য প্রকাশ করতে উৎসাহিত হয়েছেন।

পত্রিকাটির আচরণকে গর্হিত উল্লেখ করে এ রায়ে সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং সাংবাদিকতায় সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ দেয়া হয়

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।