আগামীকাল ২৪ অক্টোবর ২০১০ রবিবার শুরু হতে যাচ্ছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ডাকে ঢাকা-বড়পুকুরিয়া-ফুলবাড়ী লংমার্চ। উন্মুক্ত না, বিদেশী না, রপ্তানী না- এই শ্লোগান নিয়ে জনগণের সম্পদের ওপর জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার ৭ দফা দাবিতে এই লং মার্চ । যে যেখান থেকে পারেন, লংমার্চে যোগ দিন, লংমার্চকে সরব সমর্থন জানান ।
লং মার্চ সম্পর্কে:
২৪-৩০ অক্টোবর ঢাকা-ফুলবাড়ী-বড়পুকুরিয়া লং মার্চ-এর রুট
২৪ অক্টোবর : মুক্তাঙ্গন > নাবিস্কো মোড় > কাকলী মোড় > আব্দুল্লাপুর > টঙ্গী (দুপুর) > বোর্ড বাজার > চেরাগআলী > চান্দনা চৌরাস্তা > গাজীপুর (রাত্রি যাপন)
২৫ অক্টোবর : গাজীপুর > কোনাবাড়ি > মৌচাক > চন্দ্রা > কালিয়াকৈর > পাকুল্লা > করটিয়া > টাঙ্গাইল (দুপুর) > এলেঙ্গা > সেতুরপূর্ব পাশ কড্ডা মোড় > সিরাজগঞ্জ (রাত্রিযাপন)
২৬ অক্টোবর : সিরাজগঞ্জ > নলকা > হাটিকুমরুল > ঘুরকা > ভূইয়াগাতি > চান্দাইকোনা > শেরপুর (দুপুর) > বনানী > বগুড়া (রাত্রিযাপন)।
২৭ অক্টোবর: বগুড়া > মাটিরঢালি > মহাস্থানগড় > মোকামতলা > গোবিন্দগঞ্জ (দুপুর) > পলাশবাড়ী > গাইবান্ধা (রাত্রিযাপন)।
২৮ অক্টোবর : পলাশবাড়ি > ধাপেরহাট > পীরগঞ্জ (দুপুর) > ষটিবাড়ি > মিঠাপুকুর > দরগারহাট > মর্ডান মোড় > রংপুর (রাত্রিযাপন)।
২৯ অক্টোবর : রংপুর > মেডিকেল > পাগলাপীর > তারাগঞ্জ > সৈয়দপুর (দুপুর) > রানীর বন্দর > ১০ মাইল > দিনাজপুর (রাত্রিযাপন)।
৩০ অক্টোবর : দিনাজপুর > চিনিরবন্দর > পার্বতীপুর > বড়পুকুরিয়া > ফুলবাড়ী (বিকাল ৩টায় ফুলবাড়ীতে মহাসমাবেশ)।
জাতীয় কমিটির সাত দফা দাবি
১। যেহেতু ৫০ বছরের জ্বালানি চাহিদার তুলনায় বাংলাদেশের স্থলভাগে ও সমুদ্রে তেল-গ্যাস-কয়লা মজুদ অনেক কম, সেহেতু কোনোভাবেই তেল-গ্যাস-কয়লা খনিজদ্রব্য নিয়ে কোনো রপ্তানিমুখী চুক্তি করা যাবে না।
কোনো চুক্তি বা সমঝোতা হয়ে থাকলে তা বাতিল করতে হবে। জাতীয় কমিটি প্রস্তাবিত ‘খনিজ সম্পদ রপ্তানি নিষিদ্ধকরণ আইন’ অবিলম্বে পাশ করতে হবে।
২। রপ্তানিমুখী ‘মডেল পিএসসি ২০০৮' বাতিল করে শতভাগ দেশীয় মালিকানার শর্ত রেখে নতুন নীতিমালার ভিত্তিতে তেল-গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সমুদ্রে বাংলাদেশের ন্যায্য সীমানা নির্দিষ্টকরণ ও এই এলাকায় সার্বভৌম কর্তৃত্ব নিশ্চিত করবার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩। আবাদি জমি-পানি সম্পদ-খাদ্য নিরাপত্তা ও মানুষ বিনাশী কয়লা উত্তোলনের উন্মুক্ত খনন পদ্ধতি নিষিদ্ধ এবং এই পদ্ধতির পক্ষে দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং প্রতারণামূলক অপতৎপরতার সঙ্গে যুক্ত এশিয়া এনার্জিসহ বিভিন্ন ব্যাক্তি ও গোষ্ঠীকে অবিলম্বে বহিষ্কারসহ জনগণের সঙ্গে সরকারের স্বাক্ষরিত ৬ দফা ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। উন্মুক্ত পদ্ধতি অনুমোদনের চেষ্টায় কয়লানীতি ঝুলিয়ে না রেখে ‘উন্মুক্ত না, রপ্তানি না, বিদেশি না’ নীতিমালার ভিত্তিতে পরিবেশ অনুকূল পদ্ধতি গ্রহণ করে দ্রুত কয়লা সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। এই বিষয়ে জাতীয় সংস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৪।
স্থলভাগের ১২টি সমৃদ্ধ গ্যাস ব্লকে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য চুক্তি করার পর সাম্রাজ্যবাদী বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কর্তৃক অনুসৃত নীতি তথা বর্তমান তীব্র গ্যাস সঙ্কটের সুযোগে দেশকে জিম্মি করে দীর্ঘসূত্রিতা, প্রতারণা ও অনিয়ম অবলম্বনের নীতির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। সকল অসম পিএসসিসহ বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী সব চুক্তি বাতিল করে রাষ্ট্রীয় ও দেশীয় সংস্থার কর্তৃত্বে বা নিয়ন্ত্রণে খনিজ উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে।
মাগুড়ছড়া ও টেংরাটিলার দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বহুজাতিক কোম্পানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশের প্রাপ্য অন্তত ৩৫ হাজার কোটি টাকা আদায় করে বিদ্যুৎ সঙ্কট নিরসনে ব্যয় করতে হবে। স্থলভাগে আর কোনো পিএসসি করা যাবে না, আবিষ্কৃত সকল ক্ষেত্র উন্নয়ন ও উৎপাদন বাপেক্সসহ জাতীয় সংস্থাগুলোর দায়িত্বে হতে হবে।
৫।
পেট্রোবাংলা, বাপেক্স, জিওলজিক্যাল সার্ভে আণবিক শক্তি কমিশন জ্বালানিখাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পরিকল্পিতভাবে পঙ্গু করবার নীতি ত্যাগ করে, এই খাতকে দুর্নীতিবাজ ও বিদেশি কোম্পানির রাহুমুক্ত করতে হবে এবং জাতীয় সক্ষমতা বিকাশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬। জ্বালানি সম্পদ নিয়ে এ যাবতকালে বিভিন্ন সরকারের আমলে যেসব জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি করা হয়েছে, সেগুলো প্রকাশ করতে হবে এবং এগুলোসহ যেসব অপতৎপরতার কারণে বাংলাদেশে জ্বালানি নিরাপত্তা বিপর্যস্ত ও ভয়াবহ বিদ্যুৎ সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলার জন্য দায়ী দুর্নীতিবাজ জাতীয় স্বার্থবিরোধী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭। ২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ জাতীয় সম্পদ রক্ষায় সংগঠিত জাতীয় কমিটির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশি হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
কিছু লিঙ্ক:
১. তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি
২. তিন ‘না’ এর মধ্যে একটি ‘হ্যাঁ’ : বাংলাদেশের সম্পদ বাংলাদেশেই থাকবে - মেহেদী হাসান
৩. ‘উন্মুক্ত না, বিদেশি না, রপ্তানি না’: কেন? - আনু মুহাম্মদ
৪. জাতীয় কমিটির প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও দাবিনামা নিয়ে আনু মুহাম্মদের নোট
৫. "বিদ্যুত সংকট, জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের দুষ্টগ্রহ এবং বহুজাতিক কোম্পানির আগ্রাসন" - শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ'র বক্তৃতা
৬. "সরকার বলছে সংকট- আমি বলছি সংকট নেই, সংকট তৈরি করা হচ্ছে ভিন্ন উদ্দেশ্যে" - বিদ্যুৎ সংকট প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী বি ডি রহমতুল্লাহ
৭. নাইল্যাকাডা - দিনমজুর এর বাংলা ব্লগ
৮. লংমার্চ ও অন্যান্য প্রসঙ্গে জাতীয় কমিটির আহ্বায়কের সাক্ষাৎকার
চলো চলো ফুলবাড়ী চলো
চলো চলো বড়পুকুরিয়া চলো
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।