আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভুঁইফোড় সংগঠন

সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায়......

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনগুলোর নামে সংগঠন-সমিতির যেন শেষ নেই। রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে নানা সংগঠন-সমিতি ও অঙ্গসংস্থা। এসবের নামকরণে কোন না কোনভাবে প্রাধান্য পাচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা এবং তদীয় ভাই-ভ্রাতা এমনকি ভ্রাতৃবধূদের নামও। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের পূর্বসূরি ও উত্তরাধিকারপ্রাপ্ত কাউকেই বাদ দেয়া হচ্ছে না। বিপুল ভোট ও জনসমর্থনে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতাসীন একটি সরকারের জন্য এটা অল্পবিস্তর বিব্রতকর হলেও নেতাদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, জমি দখল, ভ‚মি দখল, ভবন দখলসহ নানা সুযোগ-সুবিধা এবং তদবির চালানোর সুবিধার্থে কিছু মতলববাজ করে থাকে এসব।

অতীতে চারদলীয় জোট সরকারের আমলেও এমন তৎপরতা দেখা গেছে। তখনও মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তার দুই পুত্রের নামে সমিতি-সংগঠনের বিরাম ছিল না। মাঝে মাঝে এ সম্পর্কে গণমাধ্যমে সতর্কবাণীও প্রচার করা হয়ে থাকে। তবে কে শোনে কার কথা! দুর্জন ও সুবিধাবাদীদের অপতৎপরতা থেমে থাকে না। সম্প্রতি সংসদ ভবনে সরকারদলীয় সভাকক্ষে আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি দলের সভায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এসব ভুঁইফোড় সংগঠন, সমিতি ও ব্যক্তি সম্পর্কে হুশিয়ার করে দিয়েছেন সবাইকে।

দলটির সাধারণ সম্পাদক, প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ অনেক মন্ত্রী-এমপিও এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে থাকেন। এতে বোঝা যায়, সরকারের দায়িত্বশীল নেতাকর্মীরা এ ব্যাপারে সচেতন। তারপরও থেমে নেই ‘বসন্তের কোকিল’ বলে অভিহিত সুযোগসন্ধানী ও সুবিধাবাদীদের হীনতৎপরতা। এসব ভুঁইফোড় নেতাকর্মী নামসর্বস্ব প্যাড, রাবার স্ট্যাম্প ও ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে সময়ে সময়ে সভা-সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করে থাকে। দিনের পর দিন ধরনা দিয়ে, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে, চেষ্টা-তদবির করে কোন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপি নিদেনপক্ষে কোন পাতিনেতাকে ধরে এনে প্রধান অতিথি বানায়।

সভাপতির আসনে সমাসীন হয় স্বয়ং। ব্যবসায়ী সমাজসহ এর-তার কাছ থেকে নাম ভাঙিয়ে জোগাড় করে তহবিল। তারপর প্রেস রিলিজ কম্পিউটার কম্পোজ করে অথবা হাতে লিখে নিজেই ছবিসহ গলদঘর্ম হয়ে ছোটে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের অফিসে। বহু চেষ্টা-তদবির করে দু’একটি দৈনিকে ছবি ও সংবাদ ছাপা হলে তো কথাই নেই। না হলেও এসব স্বঘোষিত নেতাকর্মীর অপতৎপরতা চলতে থাকে।

কোথাও চাকরির তদবির ও বদলি, চাঁদাবাজি, জমি-ভবন-জলাশয় দখল, সাইনবোর্ডসর্বস্ব অফিস খোলা, এলাকায় অমুক-তমুক নেতার নাম ভাঙিয়ে হুমকি-ধামকিসহ মাস্তানি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, নিয়মিত চাঁদা আদায় ইত্যাদি চলতেই থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম ভাঙিয়ে তৎপরতা চালানোয় অনেক সময় স্থানীয় থানা-পুলিশ ও প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে। পরে এক পর্যায়ে এরাই পরিণত হয় ফ্রাঙ্কেনস্টাইনরূপী দানবে। অথচ দলের কোন বিপর্যয় বা দুঃসময়ে, তা সে নির্বাচনের মাধ্যমেই হোক অথবা অন্য কোন উপায়ে, রাতারাতি সটকে পড়ে এসব মতলববাজ নেতাকর্মী। সান্তনার কথা, এ বিপদ সম্পর্কে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে সচেতনতা লক্ষ করা যায়।

এখন সময় এসেছে এদের কঠোর হাতে দমনের। রাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সরকারি দল এ বিষয়ে জর“রি পদক্ষেপ নেবে বলেই প্রত্যাশা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।