আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভুঁইফোড় দুটি সংগঠনকে আইএসআইয়ের অর্থায়ন!

বাংলাদেশের দুটি সংগঠনকে পাকিস্তানের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের অর্থায়নের অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের ১১ জানুয়ারি ‘মুক্তচিন্তা ফাউন্ডেশন’ ও ‘স্বাধীনতা ফোরাম, বাংলাদেশ’ নামের দুটি সংগঠনের নামে আইএসআই ৪০ হাজার মার্কিন ডলার ছাড় করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক মতাদর্শী এই সংগঠনগুলোর কাজ হচ্ছে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রেসক্লাব বা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আলোচনা সভা করা। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা। একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, এই সম্পর্কিত বিষদ ডকুমেন্ট তাদের হাতে রয়েছে।

কী কারণে পাকিস্তানি একটি গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশের এরকম দুটি সংগঠনকে অর্থ দিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই অর্থের সঙ্গে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকাতে ষড়যন্ত্র কিংবা জঙ্গি তৎপরতা চালানোর কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সম্প্রতি ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের স্কাইপি সংলাপ ফাঁস কিংবা আমার দেশ সম্পাদকের সঙ্গে এ দুটি সংগঠনের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না তা নিয়েও তদন্ত হচ্ছে বলে জানান ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা। আইএসআইয়ের পক্ষ থেকে অর্থগ্রহণের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে সংগঠন দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, কোনো স্বার্থান্বেষী মহল তাদের বিতর্কিত করতে সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে থাকতে পারে। সংগঠন দুটি জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।

এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই বলেও দাবি করেন তারা। মুক্তচিন্তা ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক ও দিগন্ত টেলিভিশনের সাংবাদিক আমিরুল মোমেনীন মানিক জানান, সাংবাদিকতার পাশাপাশি জনস্বার্থ বিষয়ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন তারা। এই সংগঠনের নামে আইএসআইয়ের অর্থ গ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের একটি অনুষ্ঠান করতে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকার বেশি প্রয়োজন হয় না। এরই মধ্যে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক আমাদের ৫০ হাজার টাকা পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। তাতেই আমাদের তিন-চারটি অনুষ্ঠান করা সম্ভব।

আমাদের অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসে বয়োজ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী যুদ্ধাপরাধের বিচার চেয়ে বিএনপির নীরব থাকার কথা উল্লেখ করেন। অপর আইনজীবী ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি করে বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধের যে বিচার প্রক্রিয়া চালু করেছিলেন বর্তমান সরকারকেই তা নিষ্পত্তি করতে হবে। আমিরুল মোমেনীন আরো বলেন, আমাদের সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে আইএসআইয়ের কাছ থেকে অন্য কেউ অর্থ সংগ্রহ করতে পারে। আর তদন্তের ব্যাপারেও আমাদের কিছুই জানা নেই এবং তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। ২০১০ সালে মুক্তচিন্তা ফাউন্ডেশন আত্মপ্রকাশের পর ৭-৮টি অনুষ্ঠান করা হয়।

আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম অনুষ্ঠান। দ্বিতীয় অনুষ্ঠানের অতিথি হয়ে আসেন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ। এর পর ধারাবাহিকভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে আসেন ড. কামাল হোসেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, আ স ম আব্দুর রবসহ বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব। আহ্বায়ক আশীষ কুমার সেন ও আমিরুল মোমেনীন মানিকের স্বাক্ষরেই ব্যাংক হিসাব পরিচালনা হয়ে আসছে বলে জানালেন তারা। অপর সংগঠন স্বাধীনতা ফোরামের প্রতিষ্ঠা ১৯৯৪ সালের ৩০ মার্চ।

সংগঠনটির সভাপতি আবু নাসের মো. রহমত উল্লাহ জানান, নিজেদের উদ্যোগে এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করছি। সংগঠন সংশ্লিষ্টরাই এর পৃষ্ঠপোষক। তিনি ছাড়া অন্য কেউ অর্থনৈতিক লেনদেন করেন না বলেও জানান তিনি। আইএসআইয়ের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলেও জানান তিনি। সংগঠনের সঙ্গে জড়িতদের অর্থায়নেই বিভিন্ন প্রকার সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, আলোচনা সভার আয়োজন করে থাকেন বলেও তিনি দাবি করেন।

রহমত উল্লাহ বলেন, সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর ব্যানারে নানারকম সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। লিনক ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।