হাঁটা পথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে হে সভ্যতা। আমরা সাত ভাই চম্পা মাতৃকাচিহ্ন কপালে দঁড়িয়েছি এসে _এই বিপাকে, পরিণামে। আমরা কথা বলি আর আমাদের মা আজো লতাপাতা খায়।
প্রথম আলো পত্রিকায় গত আট সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত আমার 'শিশুদের নিয়ে বড়দের বেহুঁশ বিনোদন থামান' লেখাটি লেখা হয়েছিল যা শৈশবের পণ্যকরণের মাধ্যমে যৌনকরণের হুল্লোড় বন্ধ করার দাবিতে। কপোঁরেট সংস্কৃতির ভারতীয় সংস্করণের এ আগ্রাসন একইসঙ্গে সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়কেও বিপন্ন করছে।
কাজটি মূলত টেলিভিশনের মাধ্যমে হিন্দি স্যাটেলাইট চ্যানেল দিয়ে হলেও দেশি মিডিয়া, পোশাক-ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি এবং কিছু কিছু অভিজাত স্কুলও ভূমিকা রাখছে। অনেকে পারাবারিক পরিমণ্ডলে একে মেনেও নিচ্ছেন। বাকিদের অনেকেই ছোটো বিষয় মনে করে উচ্চবাচ্য করবার প্রয়োজন মনে করছেন না। উদাসীনতা চিরকালই আরামদায়ক। যারা বা মানতে পারছেন না, তাদেঁর একটি অংশ হয়তো একা একাই ভাবছেন আর কষ্ট পাচ্ছেন।
আমরা একে বন্ধ করায় সরকারি নীতিমালা ও সামাজিক নজরদারি দাবি করেছি। চেয়েছি মানুষ সোচ্চার হোক। এই লেখা ও এই দাবি আট সেপ্টম্বরের প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে সর্বাধিক পঠিত ও আলোচিত হয়েছে। এটা একটা সূচক এবং একে শিক্ষিত-নাগরিক-শহুরে মধ্যশ্রেণীর জনপ্রিয় দাবিও বলা যেতে পারে। প্রচলিত জরিপগুলো এর থেকে সীমিতভাবে জনমত যাচাই করে জনমত জানায়।
সেই বিচারে বলা যায় এটা জনমতেরই দাবি। এই সরকার (কোন সরকার না?) মধ্যবিত্ত আশ্রিত উচ্চবিত্তের সরকার। (সমস্যার আলোচনাটাও হয়েছে মধ্যবিত্ত পরিসরে। রাষ্ট্র যাদের পোছে না সেইসব হতদরিদ্র উপেক্ষিত শিশু ও তাদের পরিবারের কথা বলা হয় নাই এবং ভদ্রলোকি মিডিয়ায় তাদের প্রবেশাধিকার নাই। ) তো সেই মধ্যবিত্ত আশ্রয় করে চলা সরকার কেন এই দাবি আমলে নেবে না? আর কেনই বা আমরা যার যা সাধ্য সে অনুসারে আওয়াজ তুলব না??? ইভ টিজিংয়ের চেয়ে এটি তো কম বড় সমস্যা না? এখনই ঠেকাতে না পারলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই ক্ষতির খেসারত আমাদের টানতে হবে।
বিনোদনের ছাপ্পা যদি আমাদের অন্তরাত্মাকে, আমাদের সামাজিক দায়কে নিস্তেজ না করে থাকে, যদি নিজ নিজ শিশুদের প্রতি, অনাগত প্রজন্মের প্রতি, সংস্কৃতির অবশিষ্ঠ জোরগুলি রক্ষার প্রতি আমরা নির্বিকার ঔদাসীন্য না দেখাই, তাহলে লিখুন, বলুন, করুন এবং আওয়াজ তুলুন: স্যাটেলাইট চ্যানেল তথা হিন্দি চ্যানেলের রিয়েলিটি শো'র মাধ্যমে শিশুদের যৌন-উপাদান করার প্রচেষ্টা বন্ধ করুন।
শিশুদের নিয়ে বড়দের বেহুঁশ বিনোদন থামান
রাষ্ট্রের পতন হয় সশব্দে, কিন্তু নীতি-নৈতিকতার মৃত্যু ঘটে নীরবে, দিনে দিনে। আমাদের সমাজে নীতির মৃত্যু এ রকম নিঃশব্দেই হচ্ছে। টেলিভিশনের কিছু কিছু অনুষ্ঠানে তার আভাস মিলছে। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের শিশুদের উটের দৌড়ের জকি করা নিয়ে দুনিয়াজুড়ে অনেক কথা হয়েছে।
টেলিভিশনের মাধ্যমে শিশুদের বিনোদনের জকি করা নিয়ে সরব হওয়ার সময়ও চলে এসেছে।
বাকী অংশ দেখুন
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।