দুঃখিত,নীতিমালা ভঙ্গের কারনে প্রভাষক-এর কমেন্ট ব্যান করা হয়েছে; তবে তিনি "নিরাপদ" ব্লগার!!!
হজ্জ্ব ও কোরবানী প্রসঙ্গঃ~~~ (তাফসীর ইবন কাছীর এবং তফসীর মাআরেফুল ক্বোরআন-এর আলোক-এ)
আল কোরআন-এ হজ্জ্ব সম্পর্কিত মোট ৮-টি আয়াত আছে।
সুরা আল ইমরান-এর আয়াত-টি হচ্ছে এই সম্পর্কিত ১ম আয়াত, যা হিজরী ৩য় বছর ওহুদ যুদ্ধের প্রাক্কালে অবতীর্ণ হয়েছিলো; যার মাধ্যমে হজ্জ্ব ফরজ হওয়ার শর্ত-সমূহ এবং মর্মার্থ ও ক্ষমতা থাকা সত্ত্ব-ও হজ্জ্ব না-করার কঠিন পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু, এখান-এ ওমরা সম্পর্কে কিছু বলা হয়-নি।
সুরা বাক্বারা-এর ১৯৬ নং আয়াত-টি হচ্ছে এই সম্পর্কিত ২য় আয়াত, যা মুফাস্সেরীন-এর ঐক্যমত অনুযায়ী হোদাবিয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে অবতীর্ন হয়েছে, যেটি ৬ষ্ঠ হিজরী-তে সংঘটিত হয়েছিলো। এ আয়াত-এর উদ্দেশ্য হজ্জ্ব ফরজ হওয়ার বিষয় বাতলানো নয়, তা পূর্বে-ই বাতলে দেয়া হয়েছে, বরং এখান-এ উদ্দেশ্য হলো হজ্জ্ব ও ওমরা-এর কিছু বিশেষ নির্দেশ বর্ণনা করা।
আয়াত-টির অনুবাদঃ...
সুরাঃ ২ আয়াতঃ ১৯৬
আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ্ব ও ওমরাহ পরিপূর্ণভাবে পালন কর। যদি তোমরা বাধা প্রাপ্ত হও, তাহলে কোরবানীর জন্য যাকিছু সহজলভ্য, তাই তোমাদের উপর ধার্য। আর তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মাথা মুন্ডন করবে না, যতক্ষণ না কোরবাণী যথাস্থানে পৌছে যাবে। যারা তোমাদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়বে কিংবা মাথায় যদি কোন কষ্ট থাকে, তাহলে তার পরিবর্তে রোজা করবে কিংবা খয়রাত দেবে অথবা কুরবানী করবে। আর তোমাদের মধ্যে যারা হজ্জ্ব ওমরাহ একত্রে একই সাথে পালন করতে চাও, তবে যাকিছু সহজলভ্য, তা দিয়ে কুরবানী করাই তার উপর কর্তব্য।
বস্তুত যারা কোরবানীর পশু পাবে না, তারা হজ্জ্বের দিনগুলোর মধ্যে রোজা রাখবে তিনটি আর সাতটি রোযা রাখবে ফিরে যাবার পর। এভাবে দশটি রোযা পূর্ণ হয়ে যাবে। এ নির্দেশটি তাদের জন্য, যাদের পরিবার পরিজন মসজিদুল হারামের আশে-পাশে বসবাস করে না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক। সন্দেহাতীতভাবে জেনো যে, আল্লাহর আযাব বড়ই কঠিন।
আয়াটির শান-এ নযুলঃ...
এ আয়াত-টি হোদাবিয়ার ঘটনা প্রসংগে অবতীর্ণ হয়েছে। তখন মহা-নবী ও সাহাবীগন এহরাম অবস্থায় ছিলেন, কিন্তু মক্কার কাফের-রা তাদেরকে হরম-এর সীমানায় প্রবেশ করতে দেয়-নি।
ব্যাখ্যাঃ...
যেহেতু এহরাম বাধার পর-ও রাসূল ও তার সাহাবী-রা ওমরা আদায় করতে পারে-নি। তখন আদেশ হলো, এহরাম-এর ফিদইয়া স্বরূপ একটি করে কুরবানী কর; কোরবানী করে এহরাম ভেংগে ফেলো। কিন্তু সাথে সাথে পরবর্তী আয়াত-এ বলে দেয়া হয়েছে যে, এহরাম খোলার শরীয়ত সম্মত ব্যবস্থা মাথা মুড়ানো ততক্ষণ পর্যন্ত জায়েয নয়, যতক্ষন-না এহরামকারীর কুরবানীর নির্ধারিত স্থান-এ পৌছবে।
ইমাম হানীফা-এর মতে, নির্ধারিত স্থান-এর সীমানা হচ্ছে হরম-এর এলাকায় পৌছে কুরবানী-এর পশু যবেহ করা। তা নিজে না-পারলে, অন্যের দ্বারা জবাই করতে হবে।
এ-আয়াত-এ অপরাগতা অর্থ হচ্ছে রাস্তায় শত্রু কর্তৃক বাধা-প্রাপ্ত হওয়া বা প্রাণ-নাশ-এর আশংকা থাকা। তবে, ইমাম হানীফা- এবং আরো কয়েক-জন-এর মতে, অসুস্থতাকে-ও অপরাগতার অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
মহা-নবী-এর আমল দ্বারা-ও প্রমাণিত হয়, কুরবানী করেই এহরাম ছাড়তে হয় এবং বাতিল-কৃত হজ্জ্ব বা ওমরা-এর ক্বাজা আদায় করা ওয়াজিব।
এহরাম অবস্থায় মাথা মুন্ডন করা-কে এহরাম ভংগ-এর কারণ বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে যদি অসুস্থতার কারণ-এ মাথায় সমস্যা হয় বা চুল কাটতে হয়; তাহলে ফিদইয়া দিতে হবে। আর তা হচ্ছে রোজা রাখা বা সদাকা দেয়া বা কোরবানী করা। কোরবানী-এর জন্য হরম-এর সীমা-রেখা নির্ধারিত রয়েছে; কিন্তু রোজা রাখা বা সদকা দেয়ার জন্য কোনো বিশেষ স্থান নির্ধারিত নেই, তা যে-কোনো স্থান-এ আদায় করা চলে।
আবার কোরআন-এর শব্দ-এর মধ্যে রোজা-এর কোনো সংখ্যা নির্ধারিত নেই এবং সদাকা-এর-ও কোনো পরিমাণ নির্দেশ করা হয়-নি।
কিন্তু সাহাবী কা'ব ইবনে ওজরা-এর কর্তৃক এমনি অবস্থার প্রেক্ষিত-এ এরশাদ আছে, "তিন-টি রোজা এবং ছয়-জন মিসকীন-কে মাথা-পিছু অর্ধসা' গম দিতে হবে। " (বোখারী)
হজ্জ্ব এবং ওমরা একত্রে আদায় করা কেবল-মাত্র মীকাত-এর অভ্যন্তর-এ বসবাস-কারী-দের জন্য-ই নিষেধ; যারা দূর-দূরান্ত থেকে যাবেন, তাদের জন্য দস্তুর আছে। কারণ, দ্বিতীয়-বার যাওয়া তাদের জন্য অসুবিধা-জনক।
যারা হজ্জ্ব-এর মৌসুম-এ হজ্জ্ব এবং ওমরা একত্রে আদায় করেন, তাদের জন্য এ দু'টি এবাদত-এর শুকরিয়া আদায় করা ওয়াজিব। তা হচ্ছে কুরবানী করার সামর্থ্য যাদের আছে তারা বকরী, গরু, উট প্রভৃতি যা তাদের জন্য সহজলভ্য হয় তা থেকে কোনো একটি পশু কুরবানী করবে।
কিন্তু যাদের আর্থিক সংগতি নেই; অর্থাৎ, আর্থিক অ-সামর্থ্য-জনিত কারণ-এ পশু না-পাওয়া গেলে; তারা দশটি রোজা রাখবে। হজ্জ্ব-এর ৯ তারিখ পর্যন্ত ৩টি আর হজ্জ্ব সমাপণ-এর পর ৭টি রোজা রাখতে হবে। এ ৭টি রোজা যখন যেখান-এ সুবিধা আদায় করতে পারে। হজ্জ্ব-এর মধ্যে যে ব্যক্তি ৩টি রোজা পালন করতে না-পারে; ইমাম হানীফা এবং কিছু সংখ্যক বিশিষ্ট সাহাবী-এর মতে তাদের জন্য কুরবানী করা-ই ওয়াজিব। যখন সামর্থ্য হয়, তখন কারো মাধ্যমে হরম শরীফ-এ কুরবানী আদায় করবে।
। ।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
{{পাঠকগণ লক্ষ্য করুণঃ... এখান-এ... পশুর অভাব সম্পর্কে কিছু বলা হয়-নি!!!... বলা হয়েছে... হাজী বা ওমরা-কারী-গন আর্থিক অসামর্থ্য-এর কারণ-এ কুরবানী না দিতে পারলে!!!...
কিন্তু... জনাব মাহফুজ ভাই ব্যাখ্যা করেছেন যে, পশু না পাওয়া গেলে রোজা রাখতে হবে!!!
Click This Link
অথচ, সউদী আরব-এর বাদশাহ্ কর্তৃক মুদ্রিত পবিত্র কোরআনুল করীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর)-গ্রন্থ-এ... এই বিষয়-টির ব্যাখ্যা উপরে উল্লেখ করা হলো (পৃষ্ঠা নং- ১০০-১০৩)!!!...
একই সঙ্গে... আমি কিন্তু উৎস সম্পর্কে-ও বলে দিচ্ছি... অথচ... তিনি কেন বলছেন-না... আমার জানতে ইচ্ছে করছে... কোথায় এই ব্যাখ্যা পেয়েছেন তিনি???... বিষটা কি কোরআন-এর শুদ্ধ আয়াত-এর ভুল ব্যাখ্যা নয়???... যেখান-এ ইবন কাছীর বা মুহাম্মদ শাফী' তাদের তাফসীর গ্রন্থ-এ বিষয়-টি-এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন.... সেখান-এ কোনো এক লেখক কি-ভাবে ব্যাখ্যা করেন পশু-র অভাব-এর জন্য!!!...
কাজেই বলতে-ই হচ্ছেঃ
ইসলামপন্থীরা-ই ইসলাম-এর এবং কোরআন-এর প্রধান ভুল-ব্যাখ্যাকারী!!!...}}
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি নাস্তিক্য-বাদী... ধর্মগ্রন্থ-এর মধ্যে কি-আছে বা এর ব্যাখ্যা নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই... কিন্তু তাই বলে জানি-না ভেবে কেউ যদি ধাপ্পা-বাজি করে উল্টা-পাল্টা আয়াত দিয়ে... কিংবা... এক অর্থ-বোধক আয়াত-এর ব্যাখ্যা নিজের মন-মতো অন্য-কিছু দিয়ে গিলিয়ে দিতে চায়... তাহলে তাকে জবাব দিতে-ই বাধ্য হই...
ধন্যবাদ সবাই-কে...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।