"ব্লগকে সিরিয়াসলি নেবার কিছু নেই"...গরীব স্ক্রীপ্ট রাইটার
১
রিক্সার উপরে চুল ছেড়ে দিয়ে বাতাসে উড়াতে উড়াতে যাচ্ছে জেরী, ২পাশে তার ২ ক্লাসমেট টুশকি আর চানাচুর। জেরী থেকে এরা ৬বছরের ছোট, জেরী ফেল করতে করতে এদের ক্লাসমেট এখন। এরা সে কারণে জেরীকে গুরু মানে, ওদেরও ইচ্ছা হয় গুরুর মত রিক্সার উপরে চুল উড়িয়ে যেতে কিন্তু যেহেতু জেরী বলেছে সে ই উপরে বসবে তাই ওরা কখনো নিজেদের ইচ্ছা প্রকাশ করে না।
রিক্সা কলেজ গেটে এসে পৌঁছানোর সাথে সাথেই টুশকি আর চানাচুর রিক্সা থেকে এক প্রকার লাফ মেরে ‘হাওয়াই মিঠাই হাওয়াই মিঠাই’ বলে চিৎকার করতে করতে দৌড় মারলো। জেরী ভয়ানক বিরক্ত হলো।
সে তার ব্যাগ খুলে রিক্সা ভাড়া দিতে দিতে বললো, শয়তান ছেমড়ি দুইডার জ্বালায় আইজ রিশকা ভাড়া দেয়া লাগতাছে!
সে রিক্সাওয়ালা আশরাফকে দশ টাকা ভাড়া দিতে গেলে সে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বললো, পোনারো টাকা ভাড়া! দশ টাকা দিতাছেন কেন......
জেরী বললো, ওই ভাড়া আট টাকা! তোরে দশ টাকা দিছি রাইখা দে।
আশরাফ বললো, কুনো জায়গায় দেখছেন আট টাকা রিশকা ভাড়া আছে?
জেরী আরও দুই টাকা আশরাফের দিকে এগিয়ে বললো, এই নে দুই টাকা বাড়ায়া দিলাম....
আশরাফ বললো, নিমু না....
‘যা তোর নিয়া লাগবো না’ বলে জেরী রিক্সা থেকে দ্রুত নামতে যাবে ঠিক তখন তার ওড়নাটা রিকশার সাথে বেঁধে গেল। কিন্তু সে পিছন দিকে না তাকিয়ে অনুমান করলো তার ওড়না ধরে কেউ টানছে। ঠিক এই মুহূর্তে রিক্সাওয়ালা আশরাফ জেরীর ওড়নাটা রিক্সা থেকে ছাড়াতে যাচ্ছিল। জেরী ভাবলো আশরাফকে সে ভাড়া দেয়নি বলে সে এই কাজ করছে।
পিছন ফিরে রিক্সাওয়ালা আশরাফকে কষে চড় বসালো।
ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব রিক্সাওয়ালা আশরাফ গালে হাত দিয়ে বলল, আমারে মারলেন কেন?? আমার অপরাধ কি?
চড় খাওয়ার পরও ওড়না ছাড়ছে না দেখে জেরী ‘বাঁচাও ....বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে লাগলো।
এরই মধ্যে চানাচুর আর টুশকি দুইজনে হাতে তিনটা হাওয়াই মিঠাই নিয়ে হাজির হলো।
তারা কিছুই জানে না তখন। কিন্তু জেরীর চিৎকার শুনে তারাও ‘হেল্প..হেল্প...হেল্প’ বলে চিৎকার করতে লাগলো।
যেখানেই প্রয়োজন সেখানেই আমি আর জন, সাইকেলারোহী নাড়িয়ার আগমন। আশরাফের কলার চেপে ধরলো নাড়িয়া। বল! বল শয়তান তুই কি করেছিস!
আশরাফ ঘটনা বলার আগেই জেরী তার ছোটবেলা থেকে প্রাকটিস করা কান্না শুরু করলো, জেরী ফুপিয়ে ফুপিয়ে বলার চেষ্টার অভিনয় দেখে নাড়িয়া বলল, আপনাকে আর বলতে হবে না!
আশরাফের নাক বরাবর ঘুষি মারলো, ঘুষি খেয়ে আশরাফ চোখে মুখে আন্ধার দেখা শুরু করলো, সে খেয়ে না খেয়ে রিকশা ফেলে দৌড় দিল।
এরপরের ঘটনা যা হয় আর কি! চলুন আপনাকে বাড়ি পৌছে দিই! জেরীও হ্যান্ডসাম নাড়িয়াকে না বলতে পারলো না.... তারা সাইকেলে চলে গেল পিছনে আবেগ আপ্লুত টুশকি আর চানাচুর দাড়িয়ে আলোচনা করতে লাগলো, দু’জনকে যা মানিয়েছে।
২
ফোনে কথোপকথন অনুজ আর জেরী।
অনুজ প্রায় কাঁদো কাঁদো হয়ে জেরিকে বললো: ওহ্ জেরি তুমি কেন বুঝতে পারছো না আমি তোমাকে কতটা ভালবাসি....আ...আ.আ..আ.মি যদি আমার বুকের ভেতরটা তোমাকে দেখাতে পারতাম তাহলে তুমি বুঝতে......
জেরি: তুমার বুকের ভিত্রে কি দেখমু ওখানে তো ফা ভাবী আছে যে কিনা একটা পুলা! এমন হাবলা কিসিমের পুলা তুমি প্রেম করছো একটা পুলার লগে ....ছি...ছি...
অনুজ: জেরী তুমি কেন বুঝতে পারছো না দ্যাট ওয়াজ জাস্ট এ মিশ্টেক.....
জেরী: তুমার মতন ছাইয়া প্রেমিকের লগে আমার কুনো কথা নাই প্রেম তো পরের কথা! ফুন রাখো! ফের ফুন করবা তো তোমার বাসায় গিয়া ফুন কাইড়া নিমু!
খটাশ করে জেরী ফোনটা নামিয়ে রাখলো।
আর ওপাশ থেকে অনুজ হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো পাশে বসে থাকা রমজানের কাধে মাথা রেখে আর বলল:আমার কি অপরাধ বলতো রমজান! আমি ফা কে চোখ বুজে বিশ্বাস করেছিলাম....ভেবেছিলাম আমার আপন একজন....এটাই কি আমার অপরাধ....আমার ভালবাসার অপরাধ??.....ফা প্রতারণা করেছে এর জন্য কি আমি দায়ী??....আমি কি আর কাউকে ভালবাসতে পারবো না??...
রমজান: কবি বলেছেন, সংকীর্ণ মনের অধিকারী যারা তারা ই প্রেমে পড়ে একবার...
কুশীলব:
জেরী
চানাচুর
টুশকি
নরাধম = নাড়িয়া
আশরাফ মাহমুদ = আশরাফ
অন্যরকম = অনুজ
মানুষ = রমজান
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।