যা লিখি তাই অখাদ্য হয়। তবুও চেষ্টায় আছি....
কালকের ট্রেন দুর্ঘটনায় আমি খুবই মর্মাহত। আমি ভেবে পাইনা একটি দেশের ব্যস্ত রাজধানীর একটি রেলক্রসিং এভাবে উন্মুক্ত থাকে কি করে?অন্যান্ন দেশের সিটির ভিতরের ট্রেনলাইনগুলো সব মাটির নিচ দিয়ে আর নাহয় অন্তত ক্রসিং যেখানে সেখানে ফ্লাইওভার করা থাকে। যাতে যানবাহনগুলো ট্রেনলাইনগুলোর উপরদিয়ে অথবা আস্তট্রেনটিই মাটির নিচ দিয়ে যেতে পারে। যাই হোক শুধু কালকের দুর্ঘটনা না আমাদের দেশের প্রায় সব দুর্ঘটনাই দুর্ভাগ্যজনক এবং আমরা দুর্ভাগ্যনিয়ে জন্মগ্রহন করা জাতি।
ঢাকার যানযট নিরসনে আমি এখানে কিছু প্রস্তাবনা উপস্থাপন করলাম। আষা করি বিষয়টি নিয়ে ব্যপক ভাবার অবকাশ আছে।
একবার ভাবেনতো,যদি টংগী থেকে যাত্রাবাড়ী কিংবা নারায়নগন্জ মাত্র একঘন্টায় পৌছানো যায় তাহলে ব্যপারটা কেমন হয়?ভাবতেই কেমন ভালো লাগছে তাই না?এখনকার ঢাকার রাস্তাঘাট এবং যানজটের যা অবস্থা তাতে এমনটা ভাবাটা কল্পনামাত্র। কিন্তু আমি যেই প্লানটা দিবো সেটা বাস্তবায়ন করতে পারলে ঢাকার যানযট/মানুষজনের ভোগান্তি পুরোপুরি নাহলেও ৭০/৮০%কমানো সম্ভব। এবার প্লানটা বলি....
আপনারা হয়তো সবাই জানেন যে চিটাগাং এবং উত্তরবংগ থেকে যে ট্রেন লাইন ঢাকার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছে সেটি টংগী হয়ে এয়ারপোর্ট,কুড়িল মোড়,কাকলী হয়ে মহাখালী,ফার্মগেটের খুব কাছদিয়ে মগবাজার হয়ে কমলাপুরে শেষ হয়েছে।
আবার কমলাপুর থেকে যাত্রাবাড়ী,জুরাইন হয়ে নারায়নগন্জ চলে গেছে আর একটি লাইন। তাহলে কি দাড়ালো?টংগী থেকে নারায়নগন্জ পর্যন্ত অলরেডী ট্রেনলাইন আমাদের রেডীই আছে। প্রশ্ন উঠতে পারে ট্রেনলাইনতো কবে থেকেই আছে তাহলে এর সাথে যানজট কমানোর সম্পর্ক কি?এই প্রশ্নের উত্তরই আজকের আমার আইডিয়া। যারা বুদ্ধিমান তারা হিসেব কষতে শুরু করুন। দেখেন কিছু বের হয় কিনা?এবার দেখুন আমার মাথা থেকে কি বেড়িয়েছে যার জন্য আমি এই পোষ্ট লিখছি।
আমার কথা হলো,ট্রেন লাইন আমাদের আছে। কিন্তু এটাকে আমরা আসলে ঠিকমত ইউটিলাইজ করতে পারছি না। সেই সম্ভবত ব্রিটিশরা যেভাবে ট্রেন লাইন বানিয়েছে,ওরা যেভাবে ট্রেন চালিয়েছে আমরা এখনো সেভাবেই চালাচ্ছি। এর পিছনে মাথা খাটাইনি। যাইহোক এবার আসল কথায় আসি।
আমি যেভাবে এই ট্রেন লাইনটিকে ব্যবহার করতে চাই তা বলছি। আমার এই মতের সাথে অনেকরে দ্বিমত থাকতে পারে বা আরো ভাবনা,পরামর্শ যোগ হতে পারে। আপনারা চাইলে অবশ্যই কিছু যোগ করতে পারেন অথবা এ বিষয়ে আরো আলোচনা হতে পারে।
আমার প্লানে প্রথমেই যেটা করতে হবে সেটা হলো,কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশনকে সরিয়ে ঢাকার বাইরে নিতে হবে। সেটা নেওয়া যেতে পারে টংগীরেলওয়ে ষ্টেশনের যে যায়গাটায় চিটাগাং ও উত্তরবংগ থেকে ট্রেন লাইন এসে একযায়গায় মিশেছে সেখানে।
কারন,এতটুকু একটা সিটির মধ্যে ইন্টারডিস্ট্রিক্ট একটা ট্রেন ষ্টেশন রাখার কোন মানেই হয়না। যেখানে একঘন্টা পরপর একটা ট্রেন আসে আর তার জন্য অনেকগুলো সিগনালে গাড়ি আটকে থাকে। এরপরে যেটা করতে হবে সেটা হলো,প্রত্যেকটা সিগনালে হয় ছোট ছোট ফ্লাইওভার বানাতে হবে আর নাহয় মাটির তলাদিয়ে ট্রেনলাইন নিতে হবে শুধু সিগনালের যায়গা গুলো দিয়ে এর সাথে কিছু নতুন ষ্টেশনও বানানো যেতে পারে যেখানে যেখানে দরকার। বাকি লাইন যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে। এরপরে আসেন ট্রেন এর কথায়।
৫ টা কি ৬ টা হাইস্পীড/বুলেট ট্রেন বসান যেগুলো দুইদিকেই চলাচল করতে পারে। প্রত্যেকটা ট্রেন প্রতিটি প্লাটফরমে একমিনিট করে দাড়াবে। অনেকটা মালয়েশিয়ার মনোরেইল বা ভারতের মেট্রৌর মতো। এবার হিসাব করুন টংগী থেকে নারায়নগন্জ যেতে কতক্ষন লাগবে। আসেন এবার আনুসাংগিক প্রসংগে বলি।
এই আইডিয়া বাস্তবায়ন করতে গেলে আরো কিছু আনুসাংগিক কাজ সরকারকে করতে হবে। যেমন,যদি কমলাপুর ষ্টেশন টংগীতে স্থানান্তর করা হয় তাহলে ওখানেও একটা কনটেইনার ডিপো করতে হবে। কন্টেইনারগুলো ওই ডিপো থেকে এর আমদানিকারকরা সংগ্রহ করবে। এবং এগুলো রাত ১২টার পরে ঢাকার রাস্তায় আনা নেওয়া করাতে হবে। যারা প্রাইভেট গাড়ী ব্যবহার করেন তারা অফিস টাইমে শুধুমাত্র একজনের জন্য গাড়ী ব্যবহার করতে পারবে না।
সিংগাপুরে অনেকটা এরকম নিয়ম আছে মনেহয়। কোন রিকশাওয়ালাকে মেইন রোডে উঠতে দেয়া যাবে না। যেখানে দ্রুতগামী গাড়ী চলাচল করে। রিকশাওয়ালাদের বিকল্প কর্মসংস্থান করতে হবে। মানুষজনকে বাইসাইকেল/মটরসাইকেল ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে।
পর্যায়ক্রমে মিরপুর ১২ নং থেকে ফার্মগেট,নাবিস্কো,গুলশান ১ হয়ে মধ্যবাড্ডা পর্যন্ত এবং কুড়িল মোড় হতে মৌচাক,কাকরাইল,গুলিস্থান হয়ে বাবুবাজার ব্রীজ পর্যন্ত দুটি মনোরেইল করতে হবে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন,আমার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সরকারকে র্যাংগস ভবনের মত কোন স্থাপনা ভাংতে হবে না বা কোন জমি অধীগ্রহনও করতে হবে না। রেললাইন তো করাই আছে। মনোরেইলের জন্যও লাগবে না। কারন মনোরেইল রাস্তার মাঝে যে আইল্যান্ড আছে সেটির উপরেই জাস্ট ইংরেজি T শেপ এর একটি পিলারের উপরেই মনোরেইলের কাঠামো তৈরি করা সম্ভব।
তাই এখানে জমি অধিগ্রহনের কোন দরকার নেই। গাড়ি চলাচলের রাস্তার উপরই এটি বানানো সম্ভব। এই মনোরেইল গুলি অনেক দ্রুত চলাচল করে এবং কম্পিউটারাইজড। তাই সময় হিসেব করেই চলাচল করে।
আমার লেখার মুল কথা হলো,যদি আমরা ট্রেন সার্ভিসকে কার্যকর করতে পারি তাহলে মানুষজনের যাতায়াতের জন্য একটা নির্ঝন্ঝাট ব্যবস্থা করতে পারবো কারন একটি ট্রেন এ বাসের চেয়ে অনেক বেশী যাত্রী বহন করা যায় এবং খুব কমসময় লাগে।
মানুষের কর্মঘন্টাও নষ্ট হয় কম।
পরিষেশে আমি এটা বলতে চাই যে,আমি এখানে যত সহজে বল্লাম কাজটি হয়তো তত সহজ না। কিন্তু ভেবে দেখতে দোষ কোথায়?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।