দৈনিক সমকাল পত্রিকার একটা নিউজ পড়তে পড়তে বিটিআরসি'র ওয়েবসাইট ভিজিট করেছিলাম আজ। হোম পেইজে প্রথমেই একটি নোটিশ নজর কাড়লো 'আর্জেন্ট নোটিস অন ইল্লিগাল ভিওআইপি'।
যেখানে লেখা আছে বিদেশ থেকে আসা কলের ক্ষেত্রে যদি বাংলাদেশের কারো মোবাইলে কলারের নাম্বার হিসেবে বাংলাদেশের কোনো মোবাইল অথবা ল্যান্ড ফোনের নাম্বার আসে তাহলে সেটি অবৈধ ভিওআইপি গেইটওয়ের মাধ্যমে আসছে এবং সে নাম্বারটি যেন বিটিআরসিকে ই-মেইল, এসএমএস অথবা ফোনে জানানো হয়। তথ্য যিনি দেবেন, তাঁর নাম-পরিচয় গোপন রাখা হবে।
হোম পেইজে স্ক্রল করা নোটিসটি পড়তেই আমার প্রায় দুই থেকে আড়াই মিনিট সময় লাগলো _ এবং সেখান থেকেই আমার কৌতুহলের সুচনা।
প্রথমত স্ক্রল এর গতি একেবারে কম, দ্বিতীয়ত এরকম গুরুত্বপূর্ণ একটি নোটিস এভাবে অদক্ষতাপূর্ণ স্ক্রলের মাধ্যমেই বা কেন দেয়া হলো তা বুঝতে পারিনি। (বর্তমানে ওয়েব টেকনোলজিতে আমার জানামতে 'মারকুয়ি' নামক ট্যাগটি আর ব্যবহৃত হয় না, এটি একেবারেই ব্যাকডেটেড)
নোটিসে দেয়া ই-মেইল এড্রেসটিতে (ভিওআইপি(এট)বিটিআরসি.গভ.বিডি) একটি মেইল পাঠিয়েছিলাম। লিখেছিলাম, এ নোটিসটি শুধু বিটিআরসির ওয়েবসাইটে সীমাবদ্ধ না রেখে দৈনিক পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিওতে প্রচারের জন্যে। আরো লিখেছিলাম- বিশেষ করে যেন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে এটি বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রচার করা হয়।
বিদেশ থেকে বাংলাদেশে যেসব কল আসে তার বেশিরভাগ গ্রামের মানুষের কাছেই আসে।
সুতরাং অবৈধ ভিওআইপির ব্যাপারে তথ্য দিলে তাঁরাই সবচেয়ে বেশি দিতে পারবেন। আর আমাদের গ্রামীণ জনগণের সিংহভাগ এখনো প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল দেখেন না, সংবাদপত্রও পড়েন না, ওয়েবসাইট পড়ার তো প্রশ্নই আসেনা। তাদের কাছে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারই বিনোদন ও তথ্যের একমাত্র উপায়।
ই-মেইলটি পাঠিয়ে মনে মনে ভাবছিলাম আমার লেখা পড়ে বিটিআরসির লোকজন নিশ্চয় হাসাহাসি করবেন। এ ধরণের পরামর্শ বাংলাদেশের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে হাসির খোরাক হিসেবেই কাজ করে।
তবে বিটিআরসির লোকজনকে হাসানোর জন্যে আমার মেইল সে পর্যন্ত পৌঁছেনি, কয়েক মিনিট পর সেটি ফেরত এসেছে। কারণ হিসেবে লেখা আছে 'অযাচিত মেইল বাছাইকরন প্রযুক্তি'র কল্যাণে সেটি গ্রহণ করা হয়নি। কিছুটা বোকা বনে গেলাম, কিছুটা হতাশ, কিছুটা কৌতুক অনুভব করলাম।
যে ই-মেইলে এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অভিযোগ পাঠাতে বলা হয়েছে, সেখানেই ই-মেইল পাঠানো যাচ্ছেনা। ভিওআইপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তো পরের কথা, বিটিআরসির এ স্ববিরোধিতার ব্যাপারে কার কাছে অভিযোগ করতে পারি।
কেউ বলতে পারেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।