আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

***ধনধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা***


চল চল চল ঊর্দ্ধ গগনে বাজে মাদল নিম্নে উতলা ধরণী তল অরুণ প্রাতের তরুণ দল চল রে চল রে চল চল চল চল। । ঊষার দুয়ারে হানি' আঘাত আমরা আনিব রাঙা প্রভাত আমরা টুটাব তিমির রাত বাঁধার বিন্ধ্যাচল। । নব নবীনের গাহিয়া গান সজীব করিব মহাশশ্মান আমরা দানিব নূতন প্রাণ বাহুতে নবীন বল।

চলরে নওজোয়ান, শোনরে পাতিয়া কান মৃত্যু তোরণ দুয়ারে দুয়ারে জীবনের আহ্বান ভাঙ্গরে ভাঙ্গ আগল চল রে চল রে চল চল চল চল। । আমি মারের সাগর পাড়ি দেব বিষম ঝড়ের বায়ে আমার ভয়ভাঙা এই নায়ে । । মাভৈঃ বাণীর ভরসা নিয়ে ছেঁড়া পালে বুক ফুলিয়ে তোমার ওই পারেতেই যাবে তরী ছায়াবটের ছায়ে ।

। পথ আমারে সেই দেখাবে যে আমারে চায়- আমি অভয় মনে ছাড়ব তরী, এই শুধু মোর দায় । দিন ফুরালে, জানি জানি, পৌছে ঘাটে দেব আনি আমার দুঃখ দিনের রক্তকমল তোমার করুণ পায়ে । । খরবায়ু বয় বেগে, চারি দিক ছায় মেঘে, ওগো নেয়ে, নাওখানি বাইয়ো।

তুমি কষে ধরো হাল, আমি তুলে বাঁধি পাল- হাঁই মারো, মারো টান হাঁইয়ো । । শৃঙ্খলে বারবার ঝন্ঝন ঝঙ্কার নয় এ তো তরণীর ক্রন্দন শঙ্কার- বন্ধন দুর্বার সহ্য না হয় আর, টলোমলো করে আজ তাই ও । হাঁই মারো, মারো টান হাঁইয়ো । ।

গণি গনই দিন খন চঞ্চল করি মন বোলো না 'যাই কি নাই যাই রে' । সংশয়পারাবার অন্তরে হবে পার, উদ্বেগে তাকায়ো না বাইরে । যদি মাতে মহাকাল, উদ্দাম জটাজাল ঝড়ে হয় লুন্ঠিত, ঢেউ উঠে উত্তাল, হোয়ো নাকো কুন্ঠিত, তালে তার দিয়ো তাল- জয়-জয় জয়গান গাইয়ো । হাঁই মারো, মারো টান হাঁইয়ো । ।

বিধির বাঁধন কাটবে তুমি এমন শক্তিমান- তুমি কি এমনি শক্তিমান ! আমাদের ভাঙাগড়া তোমার হাতে এমন অভিমান- তোমাদের এমনি অভিমান । । চিরদিন টানবে পিছে, চিরদিন রাখবে নীচে- এত বল নাই রে তোমার, সবে না সেই টান । । শাসনে যতই ঘেরো আছে বল দুর্বলেরও, হও-না যতই বড়ো আছেন ভগবান ।

আমাদের শক্তি মেরে তোরাও বাঁচবি নে রে, বোঝা তোর ভারী হলেই ডুববে তরীখান । । এবার তোর মরা গাঙে বান এসেছে, 'জয় মা' ব'লে ভাসা তরী। । ওরে রে ওরে মাঝি, কোথায় মাঝি, প্রাণপণে, ভাই, ডাক দে আজি- তোরা সবাই মিলে বৈঠা নে রে, খুলে ফেল্ সব দড়াদড়ি ।

। দিনে দিনে বাড়ল দেনা, ও ভাই, করলি নে কেউ বেচা কেনা- হাতে নাই রে কড়া কড়ি । ঘাটে বাঁধা দিন গেল রে, মুখ দেখাবি কেমন ক'রে- ওরে, দে খুলে দে, পাল তুলে দে, যা হয় হবে বাঁচি মরি । আমরা মিলেছি আজ মায়ের ডাকে ঘরের হয়ে পরের মতন ভাই ছেড়ে ভাই ক'দিন থাকে? প্রাণের মাঝে থেকে থেকে 'আয়' ব'লে ওই ডেকেছে কে, সেই গভীর স্বরে উদাস করে- আর কে কারে ধরে রাখে? যেথায় থাকি যে যেখানে বাঁধন আছে প্রাণে প্রাণে, সেই প্রাণের টানে টেনে আনে- সেই প্রাণের বেদন জানে না কে? মান অপমান গেছে ঘুচে, নয়নের জল গেছে মুছে- সেই নবীন আশে হৃদয় ভাসে ভাইয়ের পাশে ভাইকে দেখে । ।

কত দিনের সাধনফলে মিলেছি আজ দলে দলে- আজ ঘরের ছেলে সবাই মিলে দেখা দিয়ে আয় রে মাকে। । সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে। সার্থক জনম, মা গো, তোমায় ভালোবেসে । ।

জানি নে তোর ধনরতন আছে কি না রানীর মতন, শুধু জানি আমার অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায় এসে । । কোন্ বনেতে জানি নে ফুল গন্ধে এমন করে আকুল, কোন্ গগনে ওঠে রে চাঁদ এমন হাসি হেসে । আঁখি মেলে তোমার আলো প্রথম আমার চোখ জুড়ালো, ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে । ।

আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস ওমা আমার প্রাণে বাজায় বাঁশী। ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনের ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায়, হায় রে- ও মা অঘ্রাণে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কি দেখেছি মধুর হাসি। কি শোভা, কি ছায়া গো, কি স্নেহ, কি মায়া গো- কি আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কুলে কুল। মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মত, মরি হায়, হায় রে- মা, তোর বদনখানি মলিন হলে , ও মা, আমি নয়ন জলে ভাসি।

তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিল রে, তোমারি ধূলা মাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি। তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কি দীপ জ্বালিস ঘরে, মরি হায়, হায় রে- তখন খেলাধূলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি। ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়া ঘাটে, সারাদিন পাখি-ডাকা ছায়া-ঢাকা টোমার পল্লীবাটে, তোমার ধানে-ভরা আঙ্গিনাতে জীবনের দিন কাটে, মরি হায়, হায় রে- ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা তোমার রাখাল তোমার চাষী। ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে - দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমর মাথার মানিক হবে। ও মা, গরীবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে, মরি হায়, হায় রে- আমি পরের ঘরে কিনবো না, মা, তোর ভূষণ বলে গলার ফাঁসি।

আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে । । আমার এই দেহখানি তুলে ধরো, তোমার এই দেবালয়ে প্রদীপ করো- নিশিদিন আলোকশিখা জ্বলুক গানে । । আঁধারের গায়ে গায়ে পরশ তব সারা রাত ফোটাক তারা নব নব ।

। নয়নের দৃষ্টি হতে ঘুচবে কালো, যেখানে পড়বে সেথা দেখবে আলো- ব্যথা মোর উঠবে জ্বলে উর্ধ্ব-পানে। । ধনধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে যে স্মৃতি দিয়ে ঘেরা এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি। ।

পুষ্পে পুষ্পে ভরা শাখি কুঞ্জে কুঞ্জে গাহে পাখি গুঞ্জরিয়া আসে অলি পুঞ্জে পুঞ্জে ধেয়ে তারা ফুলের ওপর ঘুমিয়ে পড়ে ফুলের মধু খেয়ে। । ভায়ের মায়ের এত স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ ওমা তোমার চরণ দুটি বক্ষে আমার ধরি আমার এই দেশেতে জন্ম যেন এই দেশেতে মরি। ।
 


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।