জাবেদ ইকবাল। ছোটকা থেকেই লেখালেখি তার এক ধরণের বদ অভ্যাসে পরিণত হয়।
জাবেদ ইকবাল
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডি
বিখ্যাত ব্রিটিশ লেখক রোয়াল্ড ডালের সাবেক স্ত্রী ও অস্কার জয়ী অভিনেত্রী প্যাট্রিসিয়া নিল আর বেঁচে নেই। হলিউডের এই কিংবদন্তী অভিনেত্রী গত ০৮ আগস্ট ররিবার ৮৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত প্যাট্রিসিয়া নিল ম্যাসাচুসেটস’র এডিনবার্গ শহরে নিজ বাসভবনে মারা যান।
মৃত্যুর সময় পরিবারের অনেকেই তার পাশে ছিলেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্যাট্রিসিয়া নিল তার ক্যারিয়ারের শুরুতেই তিনবার স্ট্রোকে আক্রান্ত হন এবং তখন থেকেই কিছুটা পাঘাতগ্রস্থ হয়ে পড়েন। তারপর বহুদিন ধরেই তিনি কথা বলতে অম ছিলেন।
প্যাট্রিসিয়া নিল তার অভিনয় জীবনে ত্রিশটিরও বেশি ছবিতে কাজ করেছিলেন। মূলত ১৯৪৯ সালে কমেডি ছবি ‘জন লাভস মেরি’ এর মাধ্যমে অভিনয়ের জগতে তার অভিষেক ঘটে ।
ছবিতে এই অভিনেত্রীর বিপরীতে ছিলেন প্রয়াত সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান। তারপর ১৯৫০ সালে ‘দ্য হ্যাস্টি হার্ট ’ এবং একই বছর আর্নেস্ট হেমিংওয়ের ‘টু হ্যাভ অ্যান্ড হ্যাভ নট’-এর উপর ভিত্তি করে ‘দ্য ব্রেকিং পয়েন্ট’ ছবিতে অভিনয় করেন। ২১ বছর হবার আগেই প্রখ্যাত এই অভিনেত্রী লিলিয়ান হেলম্যানস-এর নাটক ‘আনাদার পার্ট অব দ্য ফরেস্ট’-এ অভিনয়ের জন্যে টনি অ্যাওয়ার্ড পান।
‘হুড’ ছবিতে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য নিল ১৯৬৪ সালে অস্কার পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এক বছর পরেই তার তিনটি স্ট্রোক হয় এবং তিন সপ্তাহের জন্য কোমায় চলে যান।
তারপর রোগের সাথে লড়াই করে পুনরায় ১৯৬৮ সালে তিনি আবার ‘দ্য সাবজেক্ট ওয়াজ রোজেস’-ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে ফিরে আসেন। এই ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য তিনি পুনরায় অস্কার মনোনয়ন পান। ১৯৭১ সালে ‘দ্য হোম কামিং:অ্যা ক্রিসমাস স্টোরি’ টেলিভিশন সিরিজে অলিভিয়া ওয়াল্টন চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় তাকে এনে দেয় এমি অ্যাওয়ার্ড নমিনেশন। সর্বশেষ ২০০৯ সালে ‘ফ্যায়িং বাই’ নামে একটি ছবিতে কাজ করেছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ক্যান্টোকির খনি ক্যাম্পে একজন পরিবহন ব্যবস্থাপকের ঘরে ১৯২৬ সালে জন্ম গ্রহণ করেন প্যাট্রিসিয়া নিল ।
তার পরিবার নক্সভিল ছেড়ে যাওয়ার পর তিনি নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্বাবদ্যালয়ে ভর্তি হন। এখান থেকেই শুরু হয় তার অভিনয় জীবন। ১৯৫৩ সালে বিখ্যাত ব্রিটিশ লেখক রোয়াল্ড ডালের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তিরিশ বছরের এই দাম্পত্যজীবন ১৯৮৩ সালে ভেঙে যায়। ভেঙে যাবার অন্যতম কারণ ছিল প্যাট্রিসিয়ার ঘনিষ্ট বান্ধবীর সঙ্গে গভীর প্রেমে জড়িয়ে পড়েন রোয়াল্ড ডাল।
দাম্পত্যজীবনে তাদের রয়েছে পাঁচ সন্তান। তারমধ্যে অন্যতম ব্রিটিশ লেখক তেসা ডাল তাদেরই সন্তান।
অভিনেত্রী হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে গ্রিক ট্র্যাজেডির চরিত্রের মতো মনে করতেন প্যাট্রিসিয়া নিল। ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত তাঁর আত্মজীবনীতে ‘অ্যাজ আই এম’ গ্রন্থে লিখেছেন সে কথা। তাছাড়া মধ্য বয়স থেকে বরাবর পাঘাতের সঙ্গে লড়াই করেছেন তিনি।
আর এ দুঃসহ অভিজ্ঞতা তাকে একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র চালু করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। নক্সভিলের যেখানে তিনি তার শৈশব কাটিয়েছেন, সেখানেই নিজ নামে পুনর্বাসন কেন্দ্রটি চালু করেন। সেখানে পাঘাতগ্রস্থ অসংখ্য মানুষ সেবা পেয়ে থাকে প্রতিবছর।
অস্কার জয়ী অভিনেত্রী প্যাট্রিসিয়া নিল পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেও ক্যাসিক কিছু ছবিতে অভিনয় নৈপুণ্য থাকে বাঁচিয়ে রাখবে দীর্ঘদিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।