কয়েক বছর আগেকার কথা। গ্রীষ্মের দুপুরে ইতালির এক সমুদ্র সৈকতে শুয়ে আছি। চারিদিকে পরী আর পরী। এইসব পরীদের ডানা নাই, কাপড়চোপড়ও নাই। দেখে দেখে মনের আশ মিটে যাবার দশা।
এক সময় রীতিমতো বোরিং লাগা শুরু করল। এমন সময় আমার এক ইতালিয়ান বন্ধু বলল, কেমন মেয়ে তোমার পছন্দ। মোটা না চিকনা?
আমি বললাম , মোটা।
- কেন ?
বললাম, ঠিক জানি না কেন। তবে পৃথুলা নারী আমার বেশ লাগে ...
বন্ধু উত্তর দিল, অধিকাংশ পোলাপান স্লিম ফিগার পছন্দ করে।
কিন্তু জানো ...আমার রুচিও তোমার মতো। আমিও স্থলকায়া মেয়েদের বেশ পছন্দ করি। কেন করি জানো? মোর ফ্যাট, মোর স্পেস টু টাচ । ( এই বাক্যের বঙ্গানুবাদ আমার পক্ষে করা সম্ভব না। ) আজ ডয়েচে ভেলে একটি খবর দেখে মনটা বড়উ উতলা হয়ে গেল।
যারা পৃথুলা রমনী পছন্দ করেন, খবরটা তাদেরও আন্দোলিত করবে, সন্দেহ নাই ...
ইটালিতে সেরা নাদুসনুদুস সুন্দরী প্রতিযোগিতা
সৌন্দর্য কি শুধুই পেন্সিল মার্কা লিকলিকে ফিগারে? বিশ্বের তারকারা যখন লিকলিকে দেহ গড়ার চেষ্টায় মত্ত ঠিক তখনই তাদের বিরুদ্ধে যেন প্রতিশোধ নিলেন ইটালির সৌন্দর্য শিল্পীরা৷ বেছে নিলেন সেরা মিস নাদুসনুদুস৷
বিউটি কুইন মনোনীত হলেন ১৭০ কিলোগ্রাম ওজনের পুষ্ট দেহের আঞ্জেলা স্কগনামিলিও৷ তাঁকে দেওয়া হলো ‘মিস চাবি' পদক৷ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় ইটালির পিসা শহরের কাছে টাসক্যানি অঞ্চলের ফোরকোলি গ্রামে৷ ৩০ জন প্রতিযোগীকে হারিয়ে বিউটি কুইন হলেন নেপলস শহরের এই রানী৷ এই খেতাব জয় করে খুবই উচ্ছ্বসিত ৩৩ বছর বয়সি স্কগনামিলিও৷ বললেন, ‘‘আমি যেন বিশাল অঙ্কের লটারি জয় করে ফেলেছি৷''
২০ টি পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয় এই জমকালো প্রতিযোগিতা৷ আর তাতে অংশগ্রহণের শর্তই ছিল, ওজন হতে হবে একশ' কেজির বেশি৷ স্থানীয় একটি হোটেলে প্রায় আড়াই হাজার দর্শকের সামনে গায়ে গাউন চড়িয়ে নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করেন গোলগাল নাদুসনুদুস সুন্দরীরা৷ তবে যারা আরো একটু বেশি কিছু দেখাতে চান, তারা শুধু অন্তর্বাস পরেই হাজির হলেন মঞ্চে৷ মূলত অতিরিক্ত স্বাস্থ্য নিয়ে যারা বিড়ম্বনার শিকার তাঁদের জন্য একটু স্বস্তি ফেরাতেই ছিল এই আয়োজন৷ একইসাথে লিকলিকে ফিগার বানাতে সচেষ্ট সুন্দরীদের বিরুদ্ধেও এ যেন এক প্রতিশোধ৷
বিজয়িনীর জন্য পুরস্কার বিশাল আকারের একটা কেক যা সকলের সঙ্গে ভাগ করে খাওয়া যায়৷
এই ব্যতিক্রমী সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী মারিলেনা আমাতো বললেন, ‘‘আমরা যখন বাসে উঠি, তখন অন্যরা একে-অপরের দিকে চাওয়া-চাওয়ি করে, ফিসফিস করে হাসি-তামাশা করি৷ এমনকি সমুদ্র সৈকতে গিয়েও দেখি একই অবস্থা৷'' অপর প্রতিযোগী আন্তোনিয়া বার্তোলো বলেন, ‘‘আমরা অনেক ধরণের বৈষম্যের শিকার৷ মনে হয়, আমরা যেন দ্বিতীয় শ্রেণীর মানুষ৷'' মিলানে সেবিকা হিসেবে কাজ করেন ৩৭ বছর বয়সি বার্তোলো৷ তাঁর কথায়, ‘‘বিনোদনের পাশাপাশি একই ধরণের সমস্যা আর বঞ্চনার যারা শিকার তাদের সাথেও দেখা, পরিচয় এবং মত বিনিময়ের সুযোগ হলো এই প্রতিযোগিতায় এসে৷''
আর এর মাধ্যমে নারীর অন্যরকম সৌন্দর্য তুলে ধরা হয়েছে বলে মনে করেন উদ্যোক্তা জিয়ানফ্রাঙ্কো লাজ্জেরেশি৷ ‘‘সৌন্দর্যের সংজ্ঞা কেন কারো দ্বারা এককভাবে নিয়ন্ত্রতি হবে? বরং সৌন্দর্য সম্পর্কে একটি নতুন বার্তা পৌঁছে দিয়েছি আমরা এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে,'' বলেন লাজ্জেরেশি৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।