ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হয়নি। কাউন্সিলরদের নাম চেয়ে চিঠিও পাঠানো হয়নি এখন পর্যন্ত। অথচ ঘর গোছানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নির্বাচনে আগ্রহীরা। গতকাল জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিমিয় সভা শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিবির সভাপতি পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন। এর আগেও নির্বাচন করার কথা বলেছিলেন তিনি।
তবে সেটা ছিল শর্তসাপেক্ষ। শুধু পাপনই নন, নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীও।
গতকাল নাজমুল হাসান চারটি বিভাগ ও ২৮ জেলার সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন বিসিবিতে। বৈঠকে বিসিবি সভাপতিকে সমর্থন দেন কর্মকর্তারা। এরপরই বিসিবি সভাপতি নির্বাচন করার ঘোষণা দেন আনুষ্ঠানিকভাবে, 'প্রথমে নির্বাচন করব বলে ভাবিনি।
কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, নির্বাচন করতে মনস্থির করেছি। কতিপয় লোক নির্বাচন নিয়ে যেভাবে নোংরামি ও মিথ্যাচার করছে, তাতে অনেকেই ভয়ে সরে যেতে চাইছিল। এর জবাব দিতে নির্বাচন করার কথা ভেবেছি। একবার যখন দাঁড়িয়ে গেছি, তখন নির্বাচন করবই। '
৩২ জেলা ও বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গতকাল প্রায় ৫ ঘণ্টা বৈঠক করেন বিসিবি সভাপতি।
সেখানে সবাই নির্বাচন করার জন্য বলেছেন তাকে। অথচ কিছুদিন আগে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোর সংগঠন ফোরামের সভাপতি ইউসুফ জামিল বাবু স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলেন, বিসিবির নির্বাচনে পাপনকে সমর্থন না দেওয়ার কথা। ফোরাম সভাপতি শুধু প্রত্যাখ্যানই করেননি, কাউন্সিলর মনোনয়নে বিসিবি সভাপতি হস্তক্ষেপ করছেন বলেও জানিয়েছিলেন। এর উত্তরে বিসিবি সভাপতি বলেন, 'কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে আমি জানতে চেয়েছি সমস্যার কথা। কতিপয় লোক অপপ্রচার করছে, কাউন্সিলর মনোনয়নে হস্তক্ষেপ করছি আমি।
কিন্তু সেটা কীভাবে? এখন পর্যন্ত কাউন্সিলরের নাম চেয়ে তো কোনো চিঠিই পাঠানো হয়নি। তাহলে প্রভাব বিস্তার বা হস্তক্ষেপ করব কীভাবে?' কাউন্সিলর মনোনয়নের বিষয়ে আমি জেলা ও বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদকদের বলেছি, 'আপনারা যাদের নাম দেবেন, সে নামই আসবে। কেউ যদি প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে, তাহলে আমাকে বলবেন আমি সাহায্য করার চেষ্টা করব। ' জেলা ও বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সমর্থনের ব্যাখ্যায় পাপন বলেন, 'আমাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য তাদের আমি অনুরোধ করিনি। আমি তাদের বলেছি ক্রিকেটের জন্য যেটা ভালো এবং আপনারা যেটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, যা দিয়ে ক্রিকেট উপকৃত হবে, সেটাই করবেন।
তারা আমার কথায় সম্মতি দিয়েছেন। ' ফোরাম সম্পর্কে বিসিবি সভাপতির অবস্থান আগের মতোই। আগেও বলেছিলেন। গতকালও ফোরামের অস্তিত্ব নিয়ে বললেন, 'কতিপয় কর্মকর্তা যদি মনে করেন তারা ফোরাম নামে একটি সংগঠন করেছেন বলে সব জেলা ও বিভাগ তাদের হাতের মুঠোয়। এটা ঠিক নয়।
অথচ এত দিন তারা এটাই মনে করে আসছিল। ' নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। জানাননি বিসিবির সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচন করবেন কিনা। পাপনবিরোধী পক্ষ কিছুদিন আগে অভিযোগ করেছে, ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করলে নির্বাচন প্রভাবিত হবে।
গতকাল বিসিবি সভাপতির সঙ্গে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার ৩২ জন সাধারণ সম্পাদক যে বৈঠক করেন, তার নেতৃত্ব দেন অ্যাডহক কমিটির পরিচালক ও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির।
বিসিবি সভাপতিকে সমর্থন প্রসঙ্গে নাছির বলেন, 'নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা মতবিনিমিয় সভা করেছি। উপস্থিত ছিলেন ৪ বিভাগ ও ২৮ জেলার সাধারণ সম্পাদক। উপস্থিত সবাই বিসিবির আসন্ন নির্বাচনে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন নাজমুল হাসানকে। ' ফোরাম সভাপতির বিসিবি সভাপতিকে সমর্থন না দেওয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করেন নাছির, 'এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ার অধিকার তাদের নেই। এ রকম বক্তৃতা দেওয়ার আগে ফোরামের কোনো সভা হয়নি।
সুতরাং এটাকে ব্যক্তি বিশেষের বক্তব্য হিসেবে ধরাই ভালো। '
গতকাল জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোর সাধারণ সম্পাদকদের সমর্থনে এখন অনেকটাই পরিষ্কার বিসিবির সভাপতি জিততে নিজের অবস্থান বেশ গুছিয়ে নিয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।