এই মাত্র বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১০ এর প্রথম সেমিফাইনাল শেষ হলো । যাতে ৩-২ গোলে জয়ী নেদারল্যান্ড এবং এর মধ্যে দিয় তৃতীয় বারের মতো তারা বিশ্বকাপ ফাইনালে । এটি ছিলো একটি চমৎকার - পরিচ্ছন্ন ম্যাচ । দুই দলই "জোগো বনিতা" বা সু্ন্দর ফুটবল খেলেছে ।
১. খেলার শুরুর দিকে আধিপত্য ছিলো নেদারল্যান্ডের ।
এক সময়ে বলের পজেশন ছিলো নেদারল্যান্ডের পক্ষে ৬৭-৩৩। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যে উরুগুয়ে বুঝিয়ে দিলো - আমাদের আন্ডার ডগ ভেবে হেলাফেলা করো না । এরপর তারা পাল্লা দিয়ে খেলতে থাকলো নেদারল্যান্ডের সাথে । কিন্তু সেকেন্ড হাফের অর্ধেকের পর আবার এলোমেলো হয়ে যায় তারা । এসময় নেদারল্যান্ড মুহুর্মুহু আক্রমন করে তছনছ করে ফেলে উরুগুয়ের ডিফেন্স ।
এবং এসময়েই দুটি গোল করে জয় নিশ্চিন্ত করে নেদারল্যান্ড । শেষ মুহুর্তে একটি গোল করে উরুগুয়ে ম্যাচে উত্তেজনা ফিরিয়ে আনলেও তা যথেষ্ট ছিলো না ।
২. প্রথমার্ধের দুটি গোল্ই ছিলো অসাধারন । ১৮ মিনিটের সময়ে নেদারল্যান্ডের ভ্যান বনক্রস্টের গোলটি ছিলো ৩০ মিটার দূর থেকে । দুর্দান্ত শটে উরুগুয়ের গোলরক্ষকের কিছুই করার ছিলো না ।
বল বারে লেগে জালে জড়ায় । এই গোলটি দিয়েগো ফোরলান শোধ করেন ৪১ মিনিটে । অনেকটা একইরকম গোল । এদুটি গোলের মতো গোল আসলে দর্শকরা প্রত্যাশা করেছিলো মেসি/রোনালদো/কাকা র কাছ থেকে ।
কিন্তু এইসব মেগাস্টারদের লজ্জা দিয়ে অসাধারন গোল করছেন লাইমলাইটের বাইরে থাকা খেলোয়াড়রা ।
৩. ৬৮ মিনিটে নেদারল্যান্ড সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলো । রোবেনের স্কোর করা উচিত ছিলো । কিন্তু ফাকা গোলপোস্টে বল বারের উপর দিয়ে মারলেন তিনি । মনে হচ্ছিলো এর জন্য হয়তো চড়া দাম দিতে হবে নেদারল্যান্ডকে । কিন্তু বেশিক্ষন অপেক্ষা করতে হয়নি তাদেরকে ।
৭০ মিনিটে স্নেইডার চমৎকার গোল করে এগিয়ে নেন নেদারল্যান্ডকে । দুই মিনিট পরই রোবেন হেড থেকে গোল করেন । চমৎকার গোল এবং বাজে কীপিং । কিন্তু এই গোলের পরও বলবো এই ম্যাচের ফ্লপ তারকা ছিলেন আ্যারিয়েল রোবেন । ৮৬ মিনিটের মাথায় তিনি আরো একটি সহজ সুযোগ মিস করেন ।
গোলরক্ষককে একা পেয়েও দৃষ্টিকটুভাবে তার হাতে বল তুলে দেন । ইনজুরি টাইমে উরুগুয়ের পেরেইরা গোল করলে আরেক দফা উত্তেজনা তৈরি হয় ম্যাচে । কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা যথেষ্ট ছিলো না ।
৪. এই ম্যাচে আবারো গোল করেছেন স্নেইডার এবং আবারো ম্যান অব দি ম্যাচ তিনি । গোলটি করে ৫ গোল করে তিনি ডেভিড ভিলার সাথে এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
গোল্ডেন বল এবং গোল্ডেন বুট - দুটির লড়াইয়েই জোরেশোরে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি ।
৫. ওভার অল, এটি ছিলো একটি পরিচ্ছন্ন , চমৎকার হাই স্কোরিং ম্যাচ । দুই দলই জয়ের জন্য খেলেছে । "জোগো বনিতা" - কি তা দেখিয়েছে নেদারল্যান্ড - উরুগুয়ে । দুই দলের খেলাই দর্শকদেরকে যথেষ্ট আনন্দ দিয়েছে ।
যোগ্য দল হিসেবেই নেদারল্যান্ড জিতেছে এবং উরুগুয়েও যথেষ্ট সমীহ কুড়িয়েছে । আর্জেন্টিনা - ব্রাজিলকে লজ্জা দেয়ার মতো "জোগো বনিতা " খেলেছে দুই দলই ।
তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে নেদারল্যান্ড । আগের দুইবার তারা হেরে রানার্স আপ হয়েছিলো । এবার সুযোগ এসেছে আবারো ।
আজকে যা খেলেছে তা ধরে রাখতে পারলে আমার ফেভার থাকবে নেদারল্যান্ডের প্রতি । বেস্ট অব লাক ,নেদারল্যান্ড ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।