আল বিদা
ভুভুজেলা নামে যে বাশির শব্দ বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার সময় পাওয়া যাচ্ছে এমন একটি শব্দ সারাদিন রেয়ন মিল থেকে আসত। আর এই রেয়ন মিলের পাশেই ছিল পেপার মিল। আর বিসিআইসির এই দুই কারখানা আর এর মানুষজন নিয়েই চন্দ্রঘোনার জীবন। কারখানা দুটির নামই ছিল কর্নফুলী নদীর নামে।
আমার আব্বা চাকরী করত কর্নফুলী রেয়ন মিলে।
বাসা ছিল রেয়ন মিলের কাছেই কর্নফুলী নদীর পাশে। ইজ্ঞিনিয়ারস কলোনী নামেই লোকে ডাকত। নদীর পাশে টিলার উপর আমাদের বাসা, আবার বাসার পাশে আরেকটি টিলা উঠে গেছে। এই টিলার ঢাল ছিল বেশ মসৃন আর ঘাসে ঢাকা। বেশ মনে আছে এই ঢালে পাটি বিছিয়ে পিছলা খেতাম।
বাসার চারদিকে গাছ পালা ভরা। এই টিলার বাসায় আমাদেরই ছিল কচুক্ষেত, আম, কলা, খেজুর, জামগাছ। আর বাসার সাথে বাগান করে ফুলগাছ লাগানো তো ছিল সবারই অভ্যাস।
কারখানার কাজ জাপানের লোকজনরা করেছিল। তাই তাদের জন্য বিশেষভাবে তৈরী বাড়িঘর, গাড়ী সব ছিল।
তারা কাজ শেষে চলে যাওয়ার পর তা দেশী কর্মীরাই ব্যবহার করত। আমাদের জন্য অফিসের গাড়ী সবসময় ছিল যদিও আমার আব্বা খুব সিনিয়র কোন অফিসার ছিল না। এমনকি সিনেমা দেখতে যাওয়ার জন্যও গাড়ী পাওয়া যেত।
আমার স্কুলিং শুরু হল এই টিলার উপর বাসা থেকেই। ভর্তি হলাম কর্নফুলী শিশু বিদ্যালয়ে।
দল বেধে হেটে হেটেই সবাই স্কুলে যেতাম। খুব সুন্দর ছোট্ট স্কুল ছিল। স্কুলের সাথেই বড় মাঠ। ক্লাসের শুরুতে পিটি। টিফিন পিরিয়ডে 'রেস গো' খেলা।
স্কুল শেষে আবার দল বেধে বাসায় ফেরা। তখন বুঝি নাই, এখন বুঝি আফসোস করার মত এক শৈশব ছিল আমাদের। আমাদের বাসা ছিল নদীর পারে, পাহাড়ের পাশে। নিরিবিলি শান্ত পরিবেশ, পথঘাট ছিল পুরোপুরি নিরাপদ। দূর্ঘটনা বা দুষ্টলোক কিছু নিয়েই চিন্তার কিছু নেই।
এলাকার সব লোকজন ছিল পরিচিত।
চন্দ্রঘোনায় ছিলাম জীবনের প্রথম ৭ বছর। এলাকা পরিচিতি আজে দেয়ার চেষ্টা করলাম। বাকি ইতিহাস কালকে বলার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। ব্লগার জুন এর উৎসাহে লেখা শুরু করলাম।
তাই ভাল লাগলে পুরো ক্রেডিট তারই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।