আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যালিগুলা

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
রোমান সম্রাট ক্যালিগুলা (১২-৪১ খ্রিস্টাব্দ) মাত্র ৪ বছর রোমান সাম্রাজ্য শাসন করেছিলেন। এই অল্প সময় শাসন করে ইতিহাসে অন্যতম খুনি ও উন্মাদ সম্রাট হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছেন। অস্বাভাবিক আচরণ ও অজাচারের জন্যও ক্যালিগুলা কুখ্যাত।

স্বৈরাচারী সম্রাট হিসেবেও বির্তকিত। একবার বলেছিলেন: Would that the Roman people had but one neck! রাজক্ষমতার লোভে তরুণ বয়েসে লিপ্ত হয়েছিলেন ষড়যন্ত্রে। সাম্রাজ্যে বৈধ উত্তরাধিকারী টাইবেরিয়াস জার্মেলাস কে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন। পরবর্তীকালে সম্রাট হয়ে সাধারণ জনগনের কাছে জনপ্রিয় হওয়ার জন্য উঠিয়ে দিয়েছিলেন মূল্য সূচক কর বা ভ্যাট ... অথচ পতিতাদের ওপর ট্যাক্স আরোপ করেছিলেন ... মানচিত্রে রোমান সাম্রাজ্য; রোমান সভ্যতা দুই অংশে বিভক্ত। (ক) রোমান রিপাবলিক ও (খ) রোমান সাম্রাজ্য।

খ্রিস্টপূর্ব ৫০৯ সালে রোমান রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়ে রোমান রিপাবলিকের পত্তন হয় এবং টিকে ছিল সুদীর্ঘ ৪৮২ বছর। খ্রিস্টপূর্ব ২৭ সালে রোমান রিপাবলিকের পতন হয় যখন রোমান সিনেট রোমান সাম্রাজ্যের প্রথম শাসক জুলিয়াস সিজারকে অপরিমেয় ক্ষমতা প্রদান করে। ক্যালিগুলা রোমান সাম্রাজ্যের তৃতীয় রোমান সম্রাট। ক্যালিগুলার পুরো নাম গাইউস জুলিয়াস সিজার জারমানিকাস। জন্ম ৩১ অগাস্ট ১২ খ্রিস্টাব্দ।

জন্ম অ্যান্টিনাম-এ। জায়গাটা বর্তমান ইতালির অ্যানজিও। মা, আগরিপপিনা দি এলডার ছিলেন রোমান রাজকুমারী। এর মা জুলিয়া ছিলে প্রথম রোমান সম্রাট অগাস্টাস এর কন্যা। ক্যালিগুলার বংশ জুলিও-ক্লাউডিয়ান বংশ নামে পরিচিত।

রোমান সম্রাট অগাস্টাস থেকে সম্রাট নিরো- এই প্রথম পাঁচ সম্রাট এই জুলিও-ক্লাউডিয়ান বংশের অর্ন্তগত। ক্যালিগুলার বাবা রোমান সেনাপতি জার্মানিকাস সিজার। জার্মানিকাস সিজার। জার্মানিকাস সিজার ছিলেন সম্রাট টাইবেরিয়াস- এর ভাইয়ের ছেলে ও দত্তক পুত্র ১৯ খ্রিস্টাব্দে সিরিয়ায় এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে মৃত্যু হয়েছিল। প্রথম শতাব্দীতে রোমান সাম্রাজ্য পশ্চিমে প্রায় ব্রিটেন অবধি বি¯তৃত ছিল।

এর অর্ন্তগত ছিল রাইনল্যান্ডে (বর্তমান জার্মানি) সেনাপতি জার্মানিকাস সিজার এর সৈন্য শিবির ছিল রাইনল্যান্ডে । ক্যালিগুলার মা আগরিপপিনা দি এলডার রোম থেকে চলে যান রাইনল্যান্ডে। শিশু ক্যালিগুলার তখন বয়স মাত্র ২। ৪ বছর অব্দি রাইনল্যান্ডেই ছিল ক্যালিগুলা। ওই সময়ে সৈন্যরা তার নাম দেয় ক্যালিগুলা।

কারণ ক্যালিগুলার জুতোর আকার ছিল ছোট। ছোট্ট সৈন্যদের বুটজুতা। লাতিন ভাষায় বুটকে বলে ক্যালিগো। নিরো ও ড্রুসুস নামে ক্যালিগুলার আরও দু’জন ভাই ছিল । ক্যালিগুলার বোনদের কথায় পরে আসছি।

ক্যালিগুলার মা আগরিপপিনা দি এলডার ১৯ খ্রিস্টাব্দে স্বামী ও সন্তানসহ সিরিয়া ভ্রমন করেন। সেখানে সিরিয়ার গর্ভনরের সঙ্গে জার্মানিকাস সিজার-এর বিরোধ বাধে। এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তার মৃত্যু হয়। শোকার্ত বিধবা আগরিপপিনা দি এলডার সন্তানসহ রোমে ফিরে আসেন এবং রোমের প্যালাটাইন হিল এ বসবাস করতে থাকেন। অচিরেই রাজকীয় প্রহরী সেজানুস এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকেন।

যা হোক। সম্রাট তখন টাইবেরিয়াস। সম্রাট আগরিপপিনা দি এলডার এর আচরনে বিরক্ত হলেন। ক্যালিগুলার মা আগরিপপিনা দি এলডার। অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলেন তৎকালীন রোমে।

সম্রাট টাইবেরিয়াস এর নির্দেশে নিরো ও ড্রুসুস সহ আগরিপপিনা দি এলডার কে গেরেপতার করা হল । প্যানডাটারিয়া দ্বীপে নির্বাসিত করা হয়। কারাগারে রোমান আর্মি অফিসার প্রচন্ড মারধোর করে। ফলে আগরিপপিনা দি এলডার এর চোখ নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিবাদে আগরিপপিনা দি এলডার অনশন করেন।

এবং ৩৩ খ্রিস্টাব্দের ১৮ অক্টোবর মারা যান। ছেলেদের মধ্যে ড্রুসুস-এর একই পরিনতি হয় এবং নিরো আত্মহত্যা করে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সম্ভবত আঠারো বছর বয়েসী ক্যালিগুলা জীবনের শূন্যতা সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠেছিল... সম্রাট টাইবেরিয়াস সে সময় রোমান সম্রাট টাইবেরিয়াস এর বয়স প্রায় ৭০ এবং তিনি ছিলেন ক্যাপ্রি নামে একটি দ্বীপে। দ্বীপটির অবস্থান ইটালির দক্ষিণে নেপলস উপসাগরে। ক্যাপ্রি দ্বীপের সম্রাটের বিলাসবহুল প্রাসাদ।

সম্রাট দয়াপরবশ হয়ে ক্যালিগুলাকে সে প্রাসাদে আশ্রয় দিলেন। সম্রাটের সঙ্গে ছিল নাতী জার্মেলাস টাইবেরিয়াস । সম্রাটের ইচ্ছে জার্মেলাস টাইবেরিয়াস কে রোমান সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার মনোনীত করবেন। রোমান সম্রাটরদের ঘিরে থাকত দেহরক্ষীরা। দেহরক্ষীদের বলা হত প্রাক্টরিয়ান গার্ড।

অধিকর্তার নাম প্রিফেক্ট। রোমান সম্রাটদের ভাগ্য নির্ভর করত অনেকটা এই প্রক্টোরিয়ান গার্ড দের ওপর। ক্যালিগুলা প্রতিশোধ নিতে চক্রান্তে মেতে উঠলেন। সে সময় সম্রাট টাইবেরিয়াস এর প্রিফেক্ট ছিলেন মাকরো । ক্যালিগুলার সঙ্গে তার নিবিড় সখ্য গড়ে ওঠে।

গুজব আছে সম্রাট টাইবেরিয়াস এর মৃত্যুকে তরান্বিত করার লক্ষে প্রিফেক্ট মাকরো সম্রাটের মুখে বালিশ চেপে রেখেছিল। ৩৩ খ্রিস্টাব্দ। সম্রাট টাইবেরিয়াস মারা গেলেন। প্রিফেক্ট মাকরোর তৎপরতায় জার্মেলাস টাইবেরিয়াস কে বন্দি করে ক্যালিগুলা কে সম্রাট ঘোষনা করা হল। এর কিছুকাল পরে ক্যালিগুলার নির্দেশে জার্মেলাস টাইবেরিয়াস ও প্রিফেক্ট মাকরো কে হত্যা করা হয়।

এই শুরু ... প্রাচীন রোম নগরী। এই নগরেই ক্যালিগুলা নির্মাণ করেছিলেন এক বিচিত্র অধ্যায়। এই নগরীর জনগনও ছিল স্বেচ্ছাচারী সম্রাটের খেয়াল খুশির শিকার ... ২৪ বছর বয়েসী সম্রাট রোমকেন্দ্রীক রোমান সাম্রাজ্যে অসম্ভব জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন। তার কয়েকটি কারণ আছে। ক্যালিগুলার বাবা জার্মানিকাস সিজার রোমান সাম্রাজ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন, তার শরীরে বইত প্রথম রোমান সম্রাট অগাস্টাস এর রক্ত।

অন্যদিকে সম্রাট অগাস্টাস, টাইবেরিয়াস প্রমূখ সম্রাটগন ছিলেন মিতব্যয়ী এবং জনগনকে কঠোর নিয়মনীতির মধ্যে আটকে রাখতে চাইতেন। পূর্ববর্তী আমলের দুঃশাসন থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য রোমান জনগন তরুণ সম্রাটকে স্বাগত জানালো; ক্যালিগুলা করলেন কী-রোমান জনগনের জন্য অপব্যয়ী ও জাঁকজমকপূর্ন ক্রিড়াকে উন্মুক্ত করে দিলেন। (মনে রাখতে হবে বিখ্যাত রোমান কলোসিয়াম নির্মিত হয়েছিল ক্যালিগুলার মৃত্যুর অনেক পরে, ৭০ খ্রিস্টাব্দে। সাধারণ ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে ক্যালিগুলা বিক্রয় কর (মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট?) মওকুফ করে দিলেন। রোমান পাবলিক বাথ।

তৎকালীন রোমান সমাজে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে যৌথস্নানের প্রথা ছিল। স্নানাগারগুলি ছিল সুরম্য ভবনে। কাজেই জনপ্রিয় হওয়ার জন্য ক্যালিগুলার ব্যয়ের খাত অনুমান করা যায় ... নিরো ও ড্রুসুস নামে ক্যালিগুলার দু’জন ভাইয়ের কথা আগেই বলেছি । আগরিপপিনা দ্য ইয়াংগার, ড্রুসিলা ও লিভিল্লা নামে ক্যালিগুলার তিন জন বোনও ছিল। এদের জড়িয়ে ক্যালিগুলার বিরুদ্ধে অজাচার বা ইনসেস্ট এর অভিযোগ আছে।

(অভিধানে ইনসেস্ট এর বাংলা দেখলাম অগম্য-গমন) ... বোনদের নাকি অন্য পুরুষের দিকেও ঠেলে দিতেন! তিন বোনের জন্য নজীরবিহীন নাগরিক সম্মানের আয়োজন করেছিলেন ক্যালিগুলা। সৈন্যরা ক্যালিগুলার তিন বোনের কাছে শপথ করত। ৩৮ খ্রিস্টাব্দে ড্রুসিলার মৃত্যু হয় । এর পরের বছর মারা যায় আগরিপপিনা। লিভিল্লা সম্রাটের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছিল- এই অভিযোগে লিভিল্লা কে রোম থেকে করা হয় নির্বাসিত ।

ক্যালিগুলার বিচিত্র উন্মাদ জীবন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের যে আগ্রহী করে তুলবে তাতে আর সন্দেহ কী... ছেলেবেলা থেকে ক্যালিগুলার মৃগীরোগ ছিল। ঘোরের মধ্যে অযৌক্তিক আচরণ করতেন, এক ধরনের দৈব আবেশ হত, রাতে ভালো ঘুম হত না। হলেও দুঃস্বপ্ন দেখতেন। রাতের বেলায় প্রাসাদে হাঁটতেন ভোরের অপেক্ষায়। এ ছাড়া অবাধ যৌনসংসর্গ সিফিলিস (উপদংশ) সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি করে।

ক্যালিগুলার যৌনজীবন যে উদ্দাম ছিল সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত। সাত মাস শাসনের পর তরুণ সম্রাটটি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। অসুখটার নাম নিউরোসিফিলিস। এটি সংক্রামক যৌনব্যাধি বা উপদংশ থেকে হয় আর নার্ভে ক্ষত সৃষ্টি করে। নার্ভের ক্ষত এক ধরনের উন্মাদ অবস্থার সৃষ্টি করে।

ক্যালিগুলারও তাই হল। আমৃত্যু নিউরোসিফিলিস রোগে ভুগেছিলেন সম্রাট। গবেষকদের মতে, সীমাহীন নিষ্ঠুরতা, অপব্যয় ও বিকৃত যৌনাচারের পিছনে নিউরোসিফিলিস ক্রিয়াশীল ছিল। তবে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিলেন কিনা সে বিষয়ে আধুনিক ঐতিহাসিকদের সংশয় আছে। ক্যালিগুলার আচ্ছন্নতা ও ক্রোধের কথা সমকালীন ইতিহাস লেখকগন উল্লেখ করেছেন ।

নিছক আনন্দের জন্য খুন করতেন সম্রাট। পরস্ত্রীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতেন, পরে সে সবের রগরগে বর্ননা দিতেন। বহু অর্থ ব্যয়ে রাজকীয় ভবন নির্মাণ, জনগনের জন্য রাজসিক বিনোদনের ব্যবস্থা করা, বেশীর ভাগ আত্মীয়স্বজনকে হত্যা করা, সন্দেহবশত একে-ওকে টর্চার করা ক্যালিগুলার জীবনের নিয়মিত অংশ হয়ে উঠেছিল। খাওয়ার সময় নির্যাতন দৃশ্য দেখে পুলক অনুভব করতেন সম্রাট। একবার।

এম্পিথিয়েটারের প্রাঙ্গনে হত্যা করার মতো আর অপরাধী ছিল না। ক্ষুধার্ত পশুরা গর্জন করছিল। ক্যালিগুলা সৈন্যদের নির্দেশ দিলেন দর্শকের একাংশকে পশুর মুখে ফেলার জন্য। তাই করা হল। কখনও সৈন্য পাঠিয়ে সাধারন লোকালয়কে পতিতালয় করে তুলতেন।

পতিতাদের ওপর ট্যাক্স আরোপ করেন ও রাজপ্রাসাদের একাংশে ব্রথেল গড়ে তোলেন। ক্যালিগুলা মুভির একটি দৃশ্য ক্যালিগুলা নিজেকে দেবতাও ঘোষনা করেছেন । এই উপলক্ষে উপাসনালয়ও নির্মান করেছিলেন। ফিলিস্তিনে ইহুদিদের ক্ষেপিয়ে তুলেছিলেন। কেননা, ওখানকার উপাসনালয়ে নিজের মূর্তি স্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

রোমান দেবতাদের পোশাক পরে ক্যালিগুলা জনগনের সামনে আসতেন। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাতের সময় নিজেকে জুপিটার বলে পরিচয় দিতেন। রোমে দুটি উপাসনালয় ও এশিয়া মাইনরের মাইলেটাসে নির্মিত .. হয়েছিল। রোমান উপাসনালয়ে দেবতাদের মাথা সরিয়ে নিজের মাথা বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ ছাড়া ক্যালিগুলা রোমান সিনেট-এর কট্টর সমালোচনা করতেন।

সমকালীন একজন ঐতিহাসিক লিখেছেন, ক্যালিগুলা তার ইনসিটাটাস নামে প্রিয় ঘোড়াকে কাউন্সিল বা পরামর্শদাতা নিয়োগ করেছিলেন। তা ছাড়া নিজের আর্থিক সুবিধার জন্য রাষ্ট্রদোহী বিচারের উৎসাহ দিতেন। রোমান নারী। ক্যালিগুলা বেশ ক’টি বিবাহ করেছিলেন। তার কয়েকজন স্ত্রীর নাম: জুনিয়া ক্লাউডিল্লা, ওরেসটিল্লা,লোললিয়া পাউলিনা, মিলোনা সিসোনিয়া।

ক্যালিগুলার একটি মেয়ে ছিল। নাম: জুলিয়া ড্রুসিল্লা। সম্রাটের চতুর্থ ও শেষ স্ত্রী মিলোনা সিসোনিয়া। খুব একটা সুন্দরী ছিলেন না, বিয়ের সময় আগের ঘরের তিন কন্যা ছিল; সমকালীন ঐতিহাসিকদের ভাষ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত জীবনে মিলোনা সিসোনিয়া ছিলেন অপব্যয়ী ও ভোগী। কী কারণে সম্রাট মিলোনা সিসোনিয়া কে গভীরভাবে ভালোবাসতেন।

ক্যালিগুলাকে হত্যার পর মিলোনা সিসোনিয়া কে ঘাতকেরা অত্যন্ত নির্মমভাবে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। ক্যালিগুলা ৩৯ থেকে ৪০ খ্রিস্টাব্দে রাইনল্যান্ড ও গল (ফ্রান্স) অভিমূখে সামরিক অভিযান পরিচালনা করেন। তবে তিনি যুদ্ধের পিছনে ব্যয় করতে কুন্ঠিত ছিলেন। তবে মজার কথা হল ক্যালিগুলা যুদ্ধ না-করেও পূর্ববর্তী সম্রাটদের গৌরব চাইতেন। ইংল্যান্ড অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

তবে ক্যালিগুলা ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি না দিয়ে রোমান সৈন্যদের ঝিনুক কুড়োতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই হেঁয়ালির কারণ আজও আবিস্কৃত হয়নি। ক্যালিগুলা। রোমান ইতিহাসের অন্ধকার যুগের প্রতীক ক্যালিগুলার অস্বাভাবিক আচরনে রোমান সিনেট ভিতরে ভিতরে অত্যন্ত ক্ষেপে উঠেছিল। ক্ষেপে উঠেছিল রোমান অভিজাতরা।

উন্মাদ সম্রাটের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সংগঠিত হতে থাকে। অবশেষে ৪১ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি প্রক্টোরিয়ান গার্ড দের আকস্মিক ছুরিকাঘাত ক্যালিগুলা নিহত হন। আন্ডারগ্রাউন্ড করিডোরে হাঁটার সময় এই আক্রমনের নেতৃত্ব দিয়েছিল প্রাক্টরিয়ান গার্ড-এর প্রিফেক্ট ক্যাসিয়াস চায়েরিয়া। এই হত্যাকান্ডের পিছনে বেশির ভাগ রোমান সিনেটরদের সমর্থন ছিল। ক্যালিগুলাকে প্রথমে ছুড়িকাঘাত করে প্রিফেক্ট ক্যাসিয়াস চায়েরিয়া পরে অন্যরা ঝাঁপিয়ে পড়ে।

ক্যালিগুলাকে প্রায় তিরিশ বার ছড়িকাঘাত করা হয়েছিল। ক্যালিগুলার নিজস্ব জার্মানিক দেহরক্ষী ছিল। তারা আসার আগেই উন্মাদ সম্রাট নিহত হন। এরপর সম্রাটের চতুর্থ ও শেষ স্ত্রী মিলোনা সিসোনিয়া কে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করা হয়। কন্যা জুলিয়া ড্রুসিল্লার মাথা দেওয়ালে ঠুকে থেতলে দেয়।

ছবি ও তথ্য: ইন্টারনেট।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।