আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডায়োজিনিসের শুভনাস্তিক (cynic-প্রচলিত সবকিছুতেই ত্রুটি খোজা) দর্শন

পরিভ্রাজক

ডায়োজিনিস, গ্রীক শুভনাস্তিক দার্শনিক (প্রচলিত সবকিছুতেই ত্রুটি খোজার দর্শন), তার চমকপ্রদ, অপ্রথানুবর্তী জীবন যাপনের জন্য সুবিখ্যাত হয়ে আছেন ইতিহাসে। কথিত আছে একদা আলেকজান্ডার দি গ্রেট তার সাক্ষাত লাভের জন্য তিনি যে গোলাকার ব্যারেলে (তার আবাসস্থল) থাকতেন তার সম্মুখে দন্ডায়মান হয়ে জানতে চাইলেন তিনি কোনভাবে তার কোন সেবা করতে পারেন কিনা! ডায়োজিনিসের সেই ইতিহাস-খ্যাত উত্তর প্রবল প্রতাপশালী মানুষটার প্রতি: "I have nothing to ask but that you would remove to the other side, that you may not, by intercepting the sunshine, take from me what you cannot give". ('আমার কিছুই চাইবার নাই, তুমি আমার রোদ আগলে দাড়িয়ে আছ এবং তা থেকে বঞ্চিত করছো আমাকে যা তুমি অন্যকে দিতে পারোনা') আলেকজান্ডার আক্ষেপ করে বলেছিলেন 'আমি যদি আলেকজান্ডার না হতাম তবে নিশ্চয় আমি ডায়োজিনিস হতাম!' ডায়োজিনিস মনে করতেন আনন্দ সহজাত প্রয়োজনগুলো (natural needs) মেটানোর মধ্যেই নিহিত এবং এই প্রয়োজন মেটানোতে লজ্জাকর বা অশোভন কিছু নেই। ডায়োজিনিসকে যখন দাস হিসেবে বিক্রী করা হচ্ছিল তখন তিনি একজনকে দেখিয়ে বললেন,"Sell me to this man; he needs a master." ('আমাকে এই লোকের কাছে বিক্রী করো কেননা এর একজন প্রভুর দরকার আছে')। লোকটি পরবর্তীতে ঠিক তাই করেছিল তার সহায়-সম্পদ এবং সন্তানের শিক্ষার ভার ডায়োজিনিসের হাতে ছেড়ে দিয়েছিলেন নিশ্চিন্ত মনে। ডায়োজিনিসের ব্যক্তিগত সম্পদ বলতে ছিলো একটা পানি পান করবার পাত্র।

এক বাচ্চাকে আজলা ধরে পানি খেতে দেখে ডায়োজিনিস তার সেই সম্বল ছুড়ে ফেলে স্বগোক্তি করেছিলেন "A child has beaten me in plainness of living." ( সরল জীবন যাপনের ব্রতে এক মামুলী শিশু আমাকে হারিয়ে দিলো) ফলাফল হলো সেই অমুল্য সম্পদ 'পানি পাত্র' ডায়োজিনিস ছুড়ে মারলেন। কি হবে এত সম্পদ রেখে!! ডায়োজিনিসকে একবার দেখা গেলো তিনি স্পষ্ট দিবালোকে একটা হারিকেন নিয়ে হাটছেন। এর হেতু জানতে চাওয়া হলে তিনি বললেন 'আমি একজন সৎ মানুষ খুজছি দৃশ্যতই সৎ মানুষ তিনি খুজে পাননি। কারণ এথেন্সবাসীদের কেউই বলতে পারেননি 'আমি সৎ মানুষ!' এই প্রশ্ন করতে যে যোগ্যতা লাগে ততটুকু যোগ্যতা অর্জনে কতটা পথ পেরুতে হয়? এতো ভয়াবহ পথচলা? ডায়োজিনিসের আক্ষেপ ছিলো খিদে নিয়ে। তিনি এর পরিত্রাণ চেয়েছিলেন 'যদি এমন হতো যে হাত-বুলালেই খিদে মিটে যেতো!' এই অনবদ্য জিজ্ঞাসা- দর্শনের একটা অনন্ত আধার!! যখন একেবারে বৃদ্ধ তখনও ডায়োজিনিসের এত কিসের ব্যস্ততা, এথেন্সবাসী জানতে চায়।

ডায়োজিনিস বলেন 'গোল পোস্টের কাছে এসে কি আমার দৌড় কমানো উচিৎ?' বয়স বাড়ছে বলে আমাদের যে আক্ষেপ তা নিতান্তই গৌণ ছিলো ডায়োজিনিসের কাছে। ::দর্শনের কোন আলোচনা সরাসরি এই লেখাতে আনিনি ইচ্ছে করেই। ব্লগিং এ নিতান্তই নতুন বলে জানিনা এ বিষয়ে আগে কেউ পোস্ট দিয়েছিলেন কিনা। যদি দিয়ে থাকেন তবে এটি তার অনুষঙ্গ বলে বিবেচিত হবে আশারাখি। References: Diogenes Laertius: Lives of the Eminent Philosophers (1925) translated by R. D. Hicks (Loeb Classical Library); Juvenal and Persius (1940) translated by G. G. Ramsay (Loeb Classical Library); J. W. Waterhouse (2002) by Peter Trippi.


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।