লেখতাম কম, পড়তাম তারচে' বেশী। কমেন্টাইতাম তারচে'ও বেশী। ব্লগীয় যাদু টোনা বান ইত্যাদি হৈতে মডারেটর মহোদয়গনের কাছে "নিরাপদ" আশ্রয় কামনা করি।
লোহা গরম থাকতে হাতুড় মারো। রাজনিতির এই রিতি।
উন্নত বিশ্বেও যা আমাদের ৪০ বছরের শিশু দেশেও তা। তবে আমাদের দেশের মানুষ হয়তো এব্যাপারে এখনো তেমন ওয়াকিবহাল নয় অথবা সচেতন লোকের সংখ্যা এতোই অল্প যে রাজনিতিবিদরা পাত্তা দেওয়ার প্রয়োজনই মনে করেনা। এরচে বরং আবেগতাড়িত সহজ সরল সংখ্যাগড়িষ্ঠের মনজয় করতেই বেশি সচেষ্ট তারা। রাজনৈতিক ষ্টান্টবাজি ব্যাপারটার সাথে আমরা আজকে পরিচিত হইনি। মনে পরে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের কথা।
বন্দুকের ডগায় ভড় করে ক্ষমতা দখল, অসংখ্য রাজনৈতিক হত্যা, রাজনিতির নামে ছাত্রদের ক্যাডারবাজিতে উদ্বুদ্ধকরন ইত্যাকার নানাবিধ অপরাধে অপরাধি হয়েও দেশের একশ্রেনীর জনতার কাছে তিনি বিধাতা, ত্রানকর্তা, পূন্যাত্মা। এমন একজন লিডার যে খাল খননরত শ্রমিকের হাত থেকে কোদাল নিয়ে মাটিতে দুই কোপ মেরে আর শ্রমিকের পাশে মাটিতে বসে পরে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। এখনো মনে পরে একসময় ব্যাপকহারে প্রচারিত সেই পোস্টারটির কথা। যেখানে রেব্যান সানগ্লাস, গেন্জি-ট্রাউজার পরিহিত জিয়া বসে আছেন মাটিতে। ব্যাক গ্রাউন্ডে আছে কোদাল টুকরি।
সূক্ষ গর্ব আর আভিজাত্যমন্ডিত চেহারা। হ্যাঁ, সাধারন মানুষের কাছে একজন প্রেসিডেন্ট, একজন মন্ত্রী বা সচিব ইত্যাদি ছিল (হয়তো এখনো অনেকের কাছে তাই আছে) উঁচু তলার অভিজাত মানুষ, প্রভূ। সেই প্রভূ যদি আসমান থেকে নেমে এসে একজন মাটির মানুষের পাশে বসেন তবে অনেকের হুঁশ জ্ঞান লোপ পায়। এরকম ছোটবড় অনেক স্টান্টবাজির মহরা সবসময়ই চলে আমাদের রাজনিতির বাজারে। বিশদ উদাহরনের দিকে না হয় নাই গেলাম এইবেলা।
যে কথা বলতে এই পোস্টের অবতারনা তা হলো দুটি শোকস্তব্ধ মেয়ের তুরুপের তাসে পরিনত হওয়া। শেখ হাসিনা এবং তার সাংগপাংগ তল্পিবাহকেরা এতটুক নীচে না নামলেও পারতেন। আমাদের ভারতবর্ষীয় এক বা একাধিক ধর্মেতো নিকটাত্মীয় কেউ মারা গেলেবছরটাক বিয়ে শাদির কথা ভুলেই যেতে হয়। ইসলাম ধর্মে হয়তো এধরনের কোনো বাধাধরা রিতি নাই। কিন্তু মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে ভেবে দেখুন।
ঐ মেয়েদুটির স্থানে নিজেকে কল্পনা করতে পারছেন কি? যে দুর্ঘটনা থেকে তারা বেঁচে গেল নিতান্ত দৈবক্রমে সেই দুর্ঘটনাই অকষ্মাৎ কেড়ে নিল তাদের পরিবারের আর সব সদস্যদের। সেই সব লোক যাদের সংগে এদের একজীবনের ভালোবাসার সম্পর্ক। সুখ দুঃখ, মান অভিমান আর হাজারো স্মৃতিমিসৃত সেই লোকগুলোকে আগুনের ঐ লেলিহান শিখা কেড়ে নিল এক লহমায়। এমন ঘটনার জন্য কি প্রস্তুত থাকে কেউ? এমন একটা আঘাতের তিন দিনের মাথায় এই বিয়ের নাটক ঘটানোটাকি এতোই জরুরী ছিল?
সস্তা এবং বস্তাপচা ঢাকাই সিনেমা মার্কা এসব সেন্টিমেন্টাল আয়োজন গেলার লোক কি বাংলাদেশে এখনো অবশিষ্ট আছে? জনগনের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ এবং সর্বোপরি নিশ্চেষ্ট সরকার আর কত মানুষের মনযোগ অন্যদিকে ফিরানোর চেস্টা করে যাবে? আমাদের দেশ যেসব ব্যাধিতে জর্জরিত, যে সব ব্যাধি সাধারন জনতার জানমালের নিরাপত্তা বিধানের পথে অন্তরায়, তার অন্যতম হচ্ছে দুর্নিতি। স্বাধীনতার পর থেকে আজ অব্দি যত দল এসেছে ক্ষমতায় তাদের কেউ সরকার পরিচালনায় দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেনি বা দিতে চায়নি।
অদক্ষ এসব রাজনিতিকদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে বেড়ে উঠেছে দুর্নিতীর দুরারোগ্য ব্যাধি। স্বল্পবেতনের বিদ্যুৎকর্মিকে কিছুটাকা ঘুষ দিলেই চুরি করা যায় বিদ্যুৎ, রাজউকের কর্মচারিকে ঘুষ দিলেই একতলার ফাউন্ডেশনের উপর করা যায় ৫ তালা বাড়ি। আর এরা ঘুষ খাবে না কেন? ঘুষ খাওয়ার পথ বন্ধ করে কালো টাকার জন্মরোধ করলে সরকারের যে রাজস্ব আয় বাড়বে তাতে দেশের লাভ। ক্ষমতাসীন দলগুলির নেতাফেতাদের লাভ তো আর না?! কাজেই উপায় জানা থাকলেও দুর্নিতী বন্ধ করার কোনো গরজ উপর থেকে শুরু করে নীচ পর্যন্ত কারো নাই। এরচে' বরং স্টান্টবাজির নয়া নয়া অভিনব কায়দা আবিস্কারে সচেস্ট সবাই।
কিন্তু কতদিন এরা আমাদের বোকা বানিয়ে যাবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।