আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গরমেও পারফেক্ট



( বিস্তারিত ভোরের কাগজের ৩০ মে এর ফ্যাশন ফিচার পাতাতে রয়েছে ) এই রোদ এই বৃষ্টি। আবহাওয়াটাই যেন কেমন! এই ভ্যাপসা গরমে ত্বকের যতœ আর পোশাক পরিচ্ছদ নিয়ে কমবেশি সবাইকেই কিছু ভাবনা-চিন্তায় পড়তে হয়। অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেকেই এড়িয়ে চলে ভারী পোশাক। মেকআপ, হেয়ার স্টাইলিং নিয়েও তাকে বাড়তি চিন্তা। তবে নিত্য-নতুন প্রসাধনী, রূপচর্চার কৌশল আর ডিজাইন কনসেপ্টের কারণে এ বিষয়গুলো এখন অনেকের কাছেই আর দশটা সহজ কাজের মতোই।

মৌলিক সব চাহিদা মেটাতেই যেখানে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে মনের মতো করে নিজেকে সাজিয়ে তোলা কিংবা প্রিয় কোনো পোশাক পড়ে প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর স্বপ্নটা হয়তো দূরতম কল্পনা হিসেবেই থেকে যায়। অথচ মাত্র এক প্রজন্ম আগে আপনার মা - খালাদের জীবনটাও এতো বেশি যান্ত্রিক ছিল না। হাল আমলের নানা তকমা আটা প্রসাধনীর সান্নিধ্য না পেলেও প্রকৃতির নানা উপাদান দিয়ে ত্বক কিংবা চুলের ন্যুনতম প্রয়োজনটা হয়তো মেটাতে পারতেন তারা। কিন্তু যান্ত্রিক এ সময়ে প্রাকৃতিক কিংবা ভেষজ উপাদান দিয়ে রূপচর্চার যে আদি ও অকৃত্রিম পদ্ধতি সেটা অনেকের কাছেই ঝামেলার নামান্তর। যদিও আধুনিক সময়ে এই আফসোসের উল্টোপিঠে একটা স্বস্তিও কিন্তু সঙ্গী হতে পারে রূপসচেতন মানুষের।

আগে হাতেগোনা যে কয়েকটি উপাদান দিয়ে মানুষ ত্বকের যতেœর কথা ভাবতো এখন কমসে কম তার দ্বিগুন উপাদানের কথা জানা আছে প্রত্যেকেরই। তার উপর বিপণনের এই যুগে রূপচর্চার অধিকাংশ উপাদানই যেখানে মোড়কে বন্দী হয়ে হাজির হচ্ছে একেবারে হাতের নাগালে সেখানে অতো-শতো বিষয়ে কেই-বা মাথা ঘামায় বলুন। আগেই বলেছি, হাল আমলে রূপচর্চার উপাদানের সংখ্যা আর উপায় এতোটাই বেশি যে এর প্রতিটি নিয়েই আলাদা করে প্রচ্ছদ রচনা হতে পারে। তবে সময়টা যেহেতু গ্রীষ্ম তাই রূপসচেতন মানুষের বর্তমান ভাবনায় গ্রীষ্মকালীন রূপচর্চাই এখন অগ্রগণ্য। গ্রৗষ্মের এই সময়টাতে যারা ঘরের বাইরে যান কিংবা যারা যান না তাদের সবাইকেই কমবেশি কিছু সাধারণ সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়।

প্রথমত এই সময়ে প্রকৃতি জুড়ে যে তীব্র দাবদাহ চলতে থাকে তার প্রভাবে ত্বক প্রচুর পরিমাণে আর্দ্রতা হারায়। ত্বকের লাবণ্যতা হারিয়ে গিয়ে সেখানে পাকাপোক্ত স্থান করে নেয় রক্ষতা। আর ত্বকের উপরিভাগের মৃতকোষের সাথে গরমের ঘাম যোগ হয়ে তৈরি করে বিতিকিচ্ছিরি এক অবস্থা। ফলাফল, একটা প্রাণহীন ত্বক নিয়ে সারা দিনমান ঘুরে বেড়ানো। কাজেই গরমের সময়টাতে নিজের রূপটুকু সঠিকভাবে প্রকাশ করতে কি ধরণের সাজ-পোশাক বা প্রসাধনীর দ্বারস্থ হবেন সেটি ভাবার আগে ভাবতে হবে এইসব সমস্যার সমাধানের কথা।

বিশ্বজুড়ে যারা ত্বকের নানা সমস্যার সমাধানের কথা হররোজ ভেবে চলেছেন, তাদের মতে প্রকৃতিতে প্রাপ্ত স্ট্রবেরি আর পিচ এইসব সমস্যার সমাধান করতে পারে সহজেই। কিন্তু বাংলাদেশে বসে স্ট্রবেরি আর পিচের মতো বস্তুর সন্ধান করা আর আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগ খোঁজা অনেকের কাছে প্রায় একই কথা। তবে বিপণনের যুগ বলে কথা। তাই চাইলে স্ট্রবেরি কিংবা পিচের নির্যাসও রোজ হাজির করা সম্ভব আপনার রূপ-রুটিনে। বিশ্বখ্যাত সৌন্দর্য সাবান লাক্স ইতোমধ্যেই তাদের প্রডাক্ট লাইনে নিয়ে এসেছে স্ট্রবেরি এবং পিচ সমৃদ্ধ সাবান।

এতে প্রাকৃতিক উপাদানের বাস্তব পরশ না মিললেও ত্বকে অনায়াসে যোগান দেয়া যাবে গ্রীষ্মের প্রয়োজনীয় পুষ্টি। উদহারণস্বরূপ স্ট্রবেরি একদিকে যেমন ত্বকের ভেতর জমে থাকা অবাঞ্চিত তেল ও ময়লা ভেতর থেকে পরিস্কার করবে অন্যদিকে এটি ত্বকের উপরিভাগের মৃতকোষ সরিয়ে ত্বকে যোগান দেবে বাড়তি আর্দ্রতা। আর পিচ এর ছোঁয়ায় আপনার ত্বক ফিরে পাবে হারানো সজীবতা ও কোমলতা। পাশাপাশি রোদে ত্বক পুড়ে গেলে কমলালেবুর খোসাবাটা ও শসার রস একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। রোদ থেকে এসে শসার রস ও তরমুজের রস একত্রে মিশিয়ে ১০ মিনিট মুখে লাগান।

রোদে থেকে চুল রুক্ষ হয়ে গেলে হেয়ার রিপেয়ারিং মাস্ক ব্যবহার করুন। গরমে ক্রিমজাতীয় প্রসাধনী ব্যবহার করলে তা গলে যেতে পারে। তাই চেষ্টা করুন পাউডার জাতীয় কসমেটিক্স ব্যবহার করতে। এতো গেলো গ্রীষ্মের রূপচর্চাকে সহজ করার যৎকিঞ্চিত কলাকৌশল এর কথা। কিন্তু সুন্দর সাজ এর সাথে পোশাক এর যথাযথ সম্মিলন না হলে তাকে কি আর ‘পারফেক্ট’ সাজ-পোশাক বলা যায়।

একটা লেখার সংক্ষিপ্ত পরিধিতে হয়তো এ বিষয়টাকে পরিপূর্ণভাবে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব নয়। তবু সাধারণ যে বিষয়গুলো মনে না রাখলেই নয় তাহলো, গ্রীষ্মের পোশাক হিসেবে ত্বকের রঙের সাথে মানানসই উজ্জ্বল যেকোনো পোশাকই হতে পারে কার্যকর। যারা একটু ফর্সা তারা পোশাকের রঙ হিসেবে বেছে নিতে পারেন সাদা, নীল কিংবা আকাশীকে। স্টাইলিশ টিনএজারদের পরনে থাকতে পারে জিন্স উইথ পিঙ্ক টি-শার্ট, কোর্তা। আর কর্মব্যস্ত নারীরা রাতের নিমন্ত্রণে প্রাধান্য দিতে পারেন লাল কিংবা পিচের মতো অভিজাত রঙকেও।

অন্যদিকে যাদের গায়ের রঙ একটু চাপা তারা সরাসরি উজ্জ্বল রঙের পোশাক ব্যবহার না করে উজ্জ্বল যেকোনো রঙের শেডযুক্ত পোশাক পড়তে পারেন। পোশাক : এবি ফ্যাশন মেকার মডেল : আনিলা তাবাসসুম হৃদি, আলোকচিত্রী: আবদুল লতিফ অপূর্ব তথ্য সহায়তা : নুরাঙ্গীনী আক্তার, বিউটি ও হেয়ার থেরাপিস্ট,পারফেকশন ( গ্রীণ রোড )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।