Someone become successful and someone not but man loves and will love
আমরা জুয়েল থীফ। সোনা রূপার দোকানে হানা দিয়ে আমরা আখের গোছাই। প্রফেসর আমাদের মধ্যে বয়সে বড়। তাই ওর কথামত আমরা কাজ করি। কথা কটা বলে এনজেল ফেস।
এনজেল ফেস কিন্তু আসলে সুপুরুষ নয়। বাস্তবে ঠিক তার বিপরীত। তাই ব্যঙ্গ করেই সকলে তাকে এনজেল ফেস বলে ডাকে।
প্রফেসরও কিন্তু কোন কলেজ কিংবা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক নয়। সেও অন্যান্য জুয়েল-থীফদের মতই একজন।
তবে তার পরিকল্পনা অন্যান্যদের চেয়ে ভাল। তাছাড়া, তার বত্তৃতার বহরের জন্যই তাকে প্রফেসার বলে ডাকা হয়।
এহেন এনজেল ফেস দলবল ও প্রফেসার সহ দাঁড়িয়ে আছে উইটসনস্ এ্যান্ড কোম্পানী নামে একটি সোনা রূপোর দোকানের সামনে।
সেই দোকানের সামনে বেশ জোরে চলে একেবারে ঝকঝকে একটা ট্যুরার গাড়ী পার্ক করা আছে। তার পেছনেই, প্রায় গা লাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটা পুরোনো মডেলের ফ্যামিলি সেলুন গাড়ী।
এক সময় প্রফেসার তার সাঙ্গপাঙ্গদের উদ্দেশ্য করে বলে, এবার বলতো আমাদের কি করা উচিত?
সাঙ্গপাঙ্গদের ভেতর থেকে সাহস করে কেউ কিছু মন্তব্য করে না। প্রফেসর একটু সময় চিন্তা করে।
পরে জিম্ নামে একজন সাগ্রেদকে বলে, জিম, তুমি নকল চাবি দিয়ে ট্যুরার গাড়ীর দরজা খোল। এমন ভাবে গাড়ীর ভেতরে চালকের আসনে বসো যাতে তোমার ওপরে কারও সন্দেহ না হয়। তারপরেই তুমি গাড়ীতে ষ্টার্ট দেবে।
সে সময়ে আমি ও এনজেল ফেস গয়নার দোকানে হানা দেবো। কাজ হাসিল করেই আমরা গাড়ীতে উঠবো। তুমিও গাড়ী ঝড়ের বেগে ছুটিয়ে দেবে।
এবার এনজেল ফেস ট্যুরার গাড়ীর পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা ফ্যামিলি সেলুন গাড়ীটার দিকে প্রফেসারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
বলে, ট্যুরারের পেছনে যে ঝড়ঝড়ে গাড়ীটা দাঁড়িয়ে আছে সেদিকে নজর পড়েছে কি প্রফেসার?
প্রফেসার বিজ্ঞের হাসি হাসে।
বলে, তাতে কি হয়েছে?
না, কিছু হয়নি, তবে গাড়ীর ভেতরে একজন বুড়ো লোক বসে আছে। সে যদি আমাদের অনুসরণ করে?
প্রফেসার এনজেল ফেসের কথায় বিরক্ত হয়।
বলে, ফালতু কথা রাখতো। হাজার চেষ্টা করলেও ঐ বেতো গাড়ীটা আমাদের টিকি ধরতে পারবে না।
প্রফেসারের পরিকল্পনামত আমরা অতি সহজেই গয়নার দোকানে ডাকাতি করে ট্যুরার গাড়ীতে উঠে বসি।
জিম্ গাড়ী ছুটিয়ে দেয়।
প্রফেসার জিমকে গাড়ীর স্পিড বাড়ানোর নির্দেশ দেয়।
জিম্ ও প্রফেসারের নির্দেশ মত আস্তে আস্তে গাড়ীর স্পীড বাড়ায়।
হঠাৎ এনজেল ফেস্ গাড়ীর পেছন দিকে তাকায়। চমকে ওঠে।
চিৎকার করে প্রফেসরকে বলে, সেই ঝড়ঝড়ে গাড়ীটা সমানে আমাদের পিছু ধাওয়া করেছে প্রফেসার।
জিম সঙ্গে সঙ্গে গাড়ীর আয়না দিয়ে গাড়ীর পেছনটা দেখে। গাড়ীর স্পীড অস্বাভাবিক ভাবে বাড়িয়ে দেয়।
ফলে, রাস্তার ট্রাফিকের নির্দেশ মানা সম্ভব হয় না। গাড়ীতে বেশ শব্দ হতে শুরু করে।
কিন্তু আশ্চর্য্যরে বিষয়, সেই ঝড়ঝড়ে গাড়ীটাও সমান স্পীড বাড়িয়ে ট্যুরার পিছু ছাড়ে না। দাড়িওলা বৃদ্ধ লোকটা গাড়ীর ষ্টিয়ারিং শক্ত হাতে ধরে আছে।
এবার প্রফেসার জিমকে নির্দেশ দেয় গাড়ীটা একটা বাঁকে ঢুকিয়ে হঠাৎ দাঁড় করিয়ে দিতে। তাতে পেছনের গাড়ীটা স্পীডের মাথায় মাইলখানেক এগিয়ে যেতে বাধ্য হবে। সে সুযোগে ট্যুরারকে পাশের রাস্তায় নিয়ে গিয়ে বুড়োকে ফাঁকি দেওয়া যাবে।
জিম প্রফেসারের কথা অরে অরে পালন করে। ট্যুরারকে একটা বাঁকে ঢুকিয়ে থামিয়ে দেয়।
পেছনের ঝড়ঝড়ে গাড়ীটা কিন্তু প্রফেসারের অনুমান মত পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যায় না। উপরন্তু গাড়ীটা হুড়মুড় করে ট্যুরারের পেছনে তীব্র গতিতে ধাক্কা মারে। আমরা সকলে জ্ঞান হারাই।
আহতও হই।
স্বভাবতই সকলের জেল হয়। এনজেল ফেসের পাশের শেলে প্রফেসারের স্হান হয়। সে সব সময় তার ভুলের জন্য ক্ষমা চায়।
আসলে কিন্তু দোষটা প্রফেসারের ছিল না।
দুটো গাড়ী প্রায় গা ঘেষে থাকায় কেউ খেয়াল করেনি যে, পেছনের বিকল গাড়ীটা দড়ি দিয়ে ট্যুরারের সঙ্গে বাঁধা ছিল। দড়ির টানেই সেই গাড়ীটা ট্যুরারের পেছন পেছন এসেছে। ট্যুরারকে পেছন থেকে ধাক্কা মেরেছে।
এর থেকেই প্রমাণিত হল, ক্রাইম ডাজ নট পে।
মূল : আলফ্রেড হিচকক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।