আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদ্যৎ সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান ও জাতীয় পরিচয় পত্র - কিছু ভাবনা ।

পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি

বিদ্যুৎ সমস্যা ঃ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই। আমাদের এখন জান বাঁচানো ফরয অবস্থা । বাংলাদেশের যে কোন ধরনের মৌল চাহিদা মেটানোর কাজেই এখন বিদ্যুৎ সবার আগে চাই। যেমন- খাদ্য সংরক্ষণের জন্য কোল্ড স্টোরেজ, খাদ্য উৎপাদনের জন্য সেচ, উৎপাদিত খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করণ ও নতুন কোন ভোগপণ্য ( যেমন আলু থেকে চিপ্স , চাল থেকে ক্র্যাকার , ডাল থেকে বেসন ইত্যাদি) প্রস্তুতের কারখানা স্থাপন, সারাদেশে ইন্টারনেট চালু ইত্যাদি । কিন্তু চাহিদার তুলনায় উৎপাদনের ব্যবস্থা হচ্ছে না , আরেক দিকে তেল-গ্যাস-কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন যেমন সমস্য সাপেক্ষ , সেই রকম ক্ষণস্থায়ী ।

ব্যয় বহুলও বটে । দুষণের পরিমাণও সেই রকম। পক্ষান্তরে সূর্যকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে সোলার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে পারলে প্রথম ধাপে সোলার প্যানেলের খরচটুকুই যা একটু বেশি। কিন্তু টেকসই এই প্রযুক্তি আত্মনির্ভরশীল এবং প্রায় দূষণমুক্ত । বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অন্য যে কোন চাহিদার তুলনায় সেচের জন্য পাম্প এই জ্বালানি খরচ হয় সবচেয়ে বেশি ।

এর বাইরে রাতে সামান্য আলো কিংবা মোবাইলের চার্জ দেওয়ার জন্য ছাড়া বিদ্যুৎ তেমন লাগে না । মানুষ দিনের আলো থাকতেই বেশির ভাগ কাজ করে ফেলে । সুতরাং, আমরা যদি সেচের জন্য সোলার প্যানেল ভিত্তিক বিদ্যুত এর ব্যবস্থা করতে পারি তাহলে মূল চাহিদা মিটে যায়। এখন এর খরচ দেবে কে? খরচ ও ব্যবস্থাপনার জন্য এলাকাভিত্তিক সামাজিক সংগঠন গুলোকে কাজে লাগানো যেতে পারে। এন জি ও, এনার্জি ক্লাব ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষিত গোষ্ঠীকে ছোট ছোট বিজনেস হিসেবে চালু করা যায় ।

বাংলাদেশে ২১ হাজার এন জি ও কাজ করে । এদেরকে যদি বাধ্য করা হয় - যেই এলাকায় কাজ করে , ক্ষুদ্র ঋণ দেয় , সেই এলাকার সেচের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ তাদেরকেই করতে হবে , তাহলে পাব্লিক প্রাইভেট পার্টনারশীপের মাধ্যমে এইটা করা সম্ভব। সরকার ৫০% এবং সংগঠন ৫০% খরচ ভাগ করে নেবে। প্যানেল বসানো হয়ে গেলে পল্লী বিদ্যুতের মত , সংগঠন সরকারের কাছে বিল করবে । বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরবরাহ সম্পূর্ণ লোকাল ও প্রাইভেট সংগঠনের দায় দায়িত্ব।

সরকারের কাজ হলো কৃষক সেচ ও বিদ্যুৎ পেলো কিনা মনিটর করা আর বিদ্যুতের দাম দেওয়া । ধীরে ধীরে বিদ্যুতের বিলটাও কৃষকের উপরে দিয়ে দেওয়া যায় । ১ম বছরে সরকার ১০০% দিলো। পরের বছর কৃষক ২৫%, সরকার ৭৫% , পরের বছর কৃষক ৫০% -সরকার ৫০% । এভাবে ধীরে ধীরে একটা স্বয়ং সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সেচ ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে।

সেচের কাজ সারাদিন রোদ কাজে লাগিয়ে চলবে। জাতীয় গ্রীডে কি হইলো না হইলো তা দিয়ে ফসল উৎপাদন ব্যহত হবে না। সবাইকে অনুরোধ করছি এই লিংকটা দেখার আফ্রিকার গ্রামে মাত্র ৫ পাউন্ড খরচে গ্রাম্য সাধারন মানুষ সোলার প্যানেল ভিত্তিক হারিকেন, রেডিও , মোবাইল চার্জার বানিয়ে ১৫-২০ পাউন্ডে বিক্রি করছে । বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের একটি প্রকল্প সাফল্য দেখিয়েছে যেখানে গ্রামের মহিলারা সোলার প্যানেল এসেম্বেল করে বিক্রি করেছে। ৯০ হাজার বাড়িতে নাকি সোলার হোম সিস্টেম বসিয়েছে।

বর্তমানে ৩ লাখ বাড়িতে সোলার হোম সিস্টেম বসানোর কাজ চলছে। কত খরচ পড়ে তার হিসাবটা ওয়েবসাইট থেকে পেলাম না । তবে, আমার কিছু আইডিয়া ওদের সাথে মিলে গেছে - The project will support an ongoing renovation of the electricity distribution network as well as provide financing for renewable energy projects such as biomass and biogas power plants, solar water pump for irrigation, and solar mini grids. প্রজেক্টের বিবরণ এখান থেকে নামিয়ে নিতে পারেন। তবে , বিশ্ব ব্যাংকের চেয়ে আমার সোলার এইড অর্গের এপ্রোচটা বেশি ভালো লেগেছে । ওদের প্রজেক্টে মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে ।

ছোট ছোট চাহিদা ( বাড়িতে বিদ্যুৎ) এভাবে মিটে গেলে কল কারখানার চাহিদা জাতীয় গ্রিড থেকেই মেটানো সম্ভব। --------------------------------------------- জাতীয় আইডি বা পরিচয় পত্র নিয়ে অনেক কথা বার্তা লেখা হয়েছে । এই আই ডি নাম্বারটাকে বিভিন্ন ভাবে কাজে লাগানো যায়। পাসপোর্টের বদলে এইটাকেই স্মার্ট কার্ড হিসেবে ব্যবহার করলে এতে অনেক তথ্য রেকর্ড করে রাখা সম্ভব এবং ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের মত বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। তো, এই ধরনের স্মার্ট কার্ড বানানোর প্রস্তাব গৃহিত হইতে বহুত দেরী থাকলেও আপাতত নিম্ন লিখিত ক্ষেত্রগুলোতে ন্যাশনাল আই ডি ব্যবহারের অনুরোধ রইলো ।

নিচের যে কোন কাজে জাতীয় পরিচয় পত্রধারী ১০-২০% রিডাকশন বা তার চেয়েও বেশি রিডাকশন পাবেন যদি তিনি এই পরিচয় পত্র ব্যবহার করে কাজ করেনঃ 1. যে কোন জাতীয় পরিচয়পত্রধারী ট্রান্সপোর্ট , রেস্টুরেন্ট , দোকান ইত্যাদি জায়গায় ( বিশেষ করে স্টুডেন্টরা) বিলে এই রিডাকশন পাবেন । ক্যাশ মেমোতে উল্লেখিত থাকলে এই বিল জমা দিয়ে বিশেষ ট্যাক্স রিবেট পেতে পারেন। 2. টেলিফোন, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদির বিল এই আই ডি দিয়ে পে করলে রিডাকশন পাবেন। 3. যে কোন ধরনের ট্যাক্স ( ইনকাম, ভ্যাট, টেলিভিশন, পৌরকর, ইন্সুরেন্স, গাড়ির ট্যাক্স ইত্যাদি) এ রিডাকশন পাবেন। 4. সরকারী যে কোন ধরনের বেতন, স্কলারশীপ ইত্যাদি এই আই ডি নাম্বার সহ কোন ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি পে করা হবে এবং তা হবে সার্ভিস চার্জ ছাড়া ।

5. যে কোন ধরনের বাড়ি ভাড়া , বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনা, টাকার অংকে বড় কোন ক্রয় ইত্যাদি দলিলে এই নাম্বারের উল্লেখ থাকতে হবে । 6. যে কোন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নাম্বার দিয়েই স্টুডেন্ট নাম্বার বিবেচিত হবে । একবার এই নাম্বার একজন পেলে তা কখনোই পরিবর্তিত হবে না । বরং সারা জীবন এই নাম্বারটি তার নাগরিক পরিচয় ও অন্যান্য সব কাজে ব্যবহৃত হবে। এক্ষেত্রে আলাদা করে ভোটার আই ডি না বানিয়ে স্কুলে ভর্তির সময় থেকেই ন্যাশনাল আই ডি নাম্বার দেওয়া যায় ।

পাবলিক পরীক্ষায় এই কার্ড /নাম্বার এডমিট কার্ডের কাজ করবে। ১৮ বছর হয়ে গেলে এইটাই ভোটার তালিকায় সংরক্ষণ করা যেতে পারে । 7. যে কোন প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মচারী যদি তাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর ব্যবহার করে বেতন নেয় ( বিশেষ করে ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ) তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান বিশেষ ট্যাক্স বেনিফিট পাবে। এম পি ও ভুক্ত স্কুল কলেজের শিক্ষকদের বেতন তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে , তাদের ব্যক্তিগত একাউন্টে মাসের প্রথমেই পৌছে দেওয়া যায়। একটি ন্যাশনাল ডাটা ব্যাংকে প্রতিটা আইডির বিপরীতে বাংলাদেশের প্রতিটা নাগরিকের পরিচয়, ঠিকানা, ফোন নাম্বার , শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য এবং আয় সংক্রান্ত তথ্য সেভ করে রাখা যায়।

যত রকমের টাকা পয়সার লেন দেন আছে , তাদের সব কয়টায় ( যতটা সম্ভব) যদি এই নাম্বার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয় , তাহলে দুর্নীতি কমে যেতে বাধ্য। ------------------------------------ বাংলাদেশে নাকি ফাইল নড়ে না । আমার মনে হয় , এইটা কৌতুহল মাত্র- কুরিয়ারে যেমন প্যাকেট গুলা ট্র্যাক করা যায় , সেই রকম ফাইল ট্র্যাকিং করলে কেমন হয় ? কারো পেনশনের ফাইল কিংবা ট্যাক্স ফাইল একবার কারো টেবিলে গেলে কতক্ষণ সেই টেবিলে বা রুমে থাকলো তার নিয়মিত আপডেট আমার মনে হয় লোকে পয়সা দিয়ে হলেও দেখতে চাইবে। ফাইলের গায়ে দোকানের জিনিস্পত্রের মত বার কোড লাগিয়ে দিলে কেমন হয়?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।