যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
যেটা মনে হলো আমরা একরৈখিক ভাবতে ও চলতে পছন্দ করি। যেমন কবিতা মানে ছন্দবদ্ধ ছত্র, গান মানে সুলেল সুরের মূর্ছনা, চিত্র মানে সুন্দর মুখচ্ছবি, ভাষা মানে প্রমিত উচ্চারণ, দেশ মানে স্থিতিশীল প্রজাতন্ত্র, শান্তি মানে নিরবিচ্ছিন্ন সম্পদের যোগান।
এই টিপিক্যালিটির ব্যতয় হলে আমরা বিদ্রোহ করি, প্রতিবাদ করি। বাঙালীর এই প্রতিবাদের ধরণও একরৈখিক মানে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার মধ্যে সীমাবদ্ধ। যেহেতু একরৈখিক এই অভ্যস্ততা বা অভ্যস্ত হয়ে উঠতে ব্যতিক্রম ঘটার মত ঘটনা নিত্যঘটে সেজন্য প্রতিবাদও ঘটে হরহামেশা।
বাংলাদেশের মানুষের এই প্রতিবাদমুখর বৈশিষ্ট্য আমার অতিপ্রিয়। নিজেকে গর্বিত মনে হয় এমন এক দেশের নাগরিক বলে যেখানে আমরা যেকোনধরণের বৈদেশিক প্রভাবকে সহজে মেনে নেই না। আমাদের মাঝে ইংরেজী একপ্রকার প্রত্যাখাতই - বাংলা মিডিয়ামে পড়াশুনা করে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নেয়া যায় অনায়েসেই। ইংরেজী কখনই বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষের (ওয়েস্ট বেংগল ও হিন্দু সম্প্রদায় বাদ দিয়ে) কাছে ঐতিহাসিকভাবেই আদরনীয় ছিলো না, যতটা এটা শিখতে বাধ্য করা হয়েছে ততটুকুই শিখেছি আমরা।
আমরা পছন্দ করি না বিশ্বের অন্য কোন সংস্কৃতি, ভাষা ও রাজনৈতিক আচরণ।
কারণটাও সহজ। আমাদের মিলিত সংস্কৃতি, ভাষা ও রাজনীতির ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করার উপাদানই বেশী। ভারতীয় উপমহাদেশে আমরা সর্বপ্রথম ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছি নানান ভাষার শব্দে, লিখিত রূপে, ব্যকরণে, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ঔপনেবিশকতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেছে বাঙালীরাই সর্বপ্রথম।
আমাদের দর্শন, সাহিত্য ও নিজস্ব সংস্কৃতির এই একরৈখিক অবস্থানকে আমি সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী বলে মনে করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।