আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের তুলকালাম



বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ির শুনানি নিয়ে ঘটেছে তুলকালাম কা-। বেগম জিয়ার আইনজীবী শুনানি ২ মাস পেছানোর আবেদন করার পর এ্যাটর্নি জেনারেল এর বিরোধিতা করলে শুরম্ন হয় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের হৈচৈ, টেবিল চাপড়ানো। পরিস্থিতি সামলাতে আদালত পুলিশ ডেকে গ্রেফতারের কথা বললে পরিস্থিতি আরও মারমুখী হয়ে ওঠে। এর ফলে আদালত শুনানি রবিবারের জন্য মুলতবি করেছে। বিচারপতি মোঃ ইমান আলী এবং বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ মঙ্গলবার পরবতর্ী শুনানীর দিন ধার্য করেছে।

দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের সময় শুনানি শুরম্ন হয়। বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী সাবেক বিচারপতি টিএইচ খান দু'মাস সময় প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, এই শুনানি ২ মাস পিছিয়ে দেয়া হোক। কারণ মামলার বাদী বিভিন্ন কাজে ব্যসত্ম। রাজনৈতিক ব্যসত্মতার কারণে তাঁর সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি।

এ সময় এ্যাটর্নর্ি জেনারেল মাহবুবে আলম সময় পেছানোর বিরোধিতা করে আদালতে বলেন, আপনাদের যথেষ্ট সময় দেয়া হয়েছে। এই মামলার শুনানী করতে খালেদা জিয়ার উপস্থিতির প্রয়োজন নেই। আইনজীবীরাই এই মামলার শুনানি করতে পারবেন। এই তর্কবিতর্কের মধ্যে আদালত শুনানী শুরম্ন করে। তখন টিএইচ খান বলেন, আমরা পারব না।

এ শুনানিতে প্রস্তুত নই। এর মধ্যেই শুরম্ন হয়ে যায় হৈ চৈ, চেঁচামেচি। আদালত সময় দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। সময় বাড়ানোর আবেদন নাকচ করে দেয়। তখন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ভীষণ উত্তেজিত হয়ে ওঠেন।

টেবিল চাপড়িয়ে শেম শেম করতে থাকেন। এ সময় আদালত আইনজীবীদের সতর্ক করে বলে, আদালতের কাজে ব্যাঘাত করলে পুলিশকে ডাকতে বাধ্য হবো। এ সময় খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, পুলিশ ডাকেন। গ্রেফতার না করা পর্যনত্ম এখানে বসে থাকব। আপনি কত জনকে গ্রেফতার করবেন।

সারাদেশের আইনজীবী আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। আপনার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। আদালত এ ব্যাপারে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মতামত জানতে চাইলে তিনি আদালতে বলেন, খালেদা জিয়ার বাড়িটি ১৬৫ কাঠা জমির ওপর নির্মিত। এই বাড়িতে বহুতল ভবন নির্মাণ করে নিহত বিডিআর অফিসারদের পরিবারের মাঝে বণ্টন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে ঘোষণা দিয়েছেন। তাই দ্রম্নত শুনানির প্রয়োজন।

তাছাড়া এই মামলার শুনানির জন্য অনেকবার তারিখ নির্ধারণ হয়েছে। বার বার সময় প্রার্থনা করাটা কালৰেপণ করা মাত্র। এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, মিস্টার এ্যাটর্নি আপনি কি আদালতে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। এ সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তাঁরা আদালতে একসঙ্গে চিৎকার শুরম্ন করেন।

আদালত এ সময় বলে, আপনারা এত আইনজীবী এসেছেন কেন? তখন ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, এটি নেত্রীর মামলা হওয়াতে সবাই এসেছে। স্বইচ্ছায় যে কোন আইনজীবী এখানে আসতে পারেন। তখন আইনজীবী সানাউলস্নাহ মিয়া বলেন, আমি ১৪ হাজার আইনজীবীর প্রতিনিধিত্ব করি। তিনি আদালতের উদ্দেশে বলেন, এত হাজার হাজার মামলা ২০০৪ সালের মামলা শুনানিতে আসেনি। অথচ এই মামলায় এত আগ্রহী কেন? এ সময় এক আইনজীবী বলেন, আদালত আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের মতো আচরণ করছে।

এ সময় আদালত মওদুদ আহমেদের উদ্দেশে বলে, পিস্নজ সেভ আস দ্য সুপ্রীমকোর্ট। শুনানি শেষে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালত থেকে হৈ চৈ করে বের হয়ে আসেন। এ সময় তাঁরা বাইরে মিছিল করতে চাইলেও পরে তা করেনি। আইনজীবী বলেছেন, এই আদালতে তাঁরা শুনানি করবেন না। লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হবে।

বিচারপতির আচরণের কারণে সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে যাবে। এ জন্য সুপ্রীমকোর্ট বার সমিতি সভা ডাকবে। শুনানি শেষে এ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদেরকে বলেন, একটি বাড়ি নিয়ে এ ধরনের আচরণ খুবই দুঃখজনক। অন্যদিকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, আইনজীবীদের গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে অপমান করাটাও দুঃখজনক। মামলার শুনানিতে বেগম জিয়ার পৰে ছিলেন টিএইচ খান, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার ফজলুল হুদা, খন্দকার মাহবুব হোসেন, বদরম্নদ্দোজা বাদল, মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ।

অন্যদিকে সরকারের পৰে ছিলেন এ্যাটনর্ী জেনারেল মাহবুবে আলম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।