আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘ন্যুড’ আর ‘ন্যাকেডের’ পার্থক্য

ব্যস্ত শহর ঠাঁস বুনটের ভিরে আজো কিছু মানুষ স্বপ্ন খুজে ফিরে........
মকবুল ফিদা হুসেইন । নামটির সাথে অনেকেই পরিচিত। ভারতের এই চিত্র শিল্পী কিছুদিন আগে কাতারের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। বাংলাদেশের তসলিমা নাসরিনের মত এই শিপ্লী ভারতীয় হিন্দু মৌলবাদীদের হুমকির মুখে গত প্রায় ৪ বছর ভিন দেশে অবস্থান করছেন। ২০০৬ সালে নগ্ন "ভারত মাতা" ছবিটি আঁকার পর থেকেই দেশ চুড়ান্ত তোপের মুখে পরেন।

এই ছবিতে ভারতের মানচিত্রটিকে একটি নগ্ন নারী হিসাবে দেখানো হয়েছে,আর যার দেহের নানা অংশে ভারতের বিভিন্ন স্থানের নাম লিখা হয়েছে। হিন্দু মৌলবাদি যারা এর পুর্বে ফিদা হুসেইনের নগ্ন হিন্দু দেব দেবির চিত্রকর্মের বিরুধীতা করে আসছিল তারা এটাকে জাতীয় ইস্যুতে রুপান্তর করে। যদিও মজার ব্যাপার এ নিয়ে ২০০৮ সালে এক মামলায় বলা হয়- হুসেনের ভারত মাতা চিত্রটি অশ্লীল নয়,এটি কাম উদ্দীপকও নয় এবং এই চিত্র কোনো বিকৃত কামনার উদ্রেক করে না। চরম দুর্দশাগ্রস্ত একজন নারীর বিমূর্ত চিত্রের মাধ্যমে জাতির একটি অবয়ব দেখাতে চেয়েছেন তিনি। তিনি আরো জানান, চিত্রটির নান্দনিক নগ্নতা, অশ্লীলতাকে বাধাগ্রস্ত করে।

চিত্রটি তার মতে কোনো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে না। অতঃপর সুপ্রিমকোর্ট এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল খারিজ করে দেন। ভারত সরকার যদিও তাকে দেশে ফিরলে নিরাপত্তা দেয়া হবে বলছে,তার পরেও তা আসত্ব করতে পারেনি হুসেইন কে। এই শিল্প কর্মের কথা শুনার পর আমার নিজেরও একটা আগ্রহ জন্মায়, ভাবনার অনেক উপাদান এখানে আছে বলেই মনে হয়। সেই প্রচীন কাল থেকেই শিল্প সাহিত্যের সাথে অশ্লিলতা একটি বিতর্কের নাম।

সেই সাথে ধর্মিয় অনুভুতি বা জাতিগত অনুভুতিতে আঘাত মুক্ত সাহিত্য চর্চার পথে একটি অন্তরায় ছিল সব সময়। যারা বিতর্কে তুলেছে নানা সময় আলোচিত সকল সাহিত্য আর শিপ্ল কর্মের তাদের দাবি, স্বাধীনতা আর সেচ্ছা চারিতা এক নয়। কারো স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার আছে বলেই সে অন্যের অনুভুতিতে আঘাত করতে পারে না। আর বরাবরই এসকল অভিযোগের পালটা জবাবে, ওই সকল শিপ্ল কর্ম আর সাহিত্য কর্মের শৈপ্লিক আর নান্দনিকতাকে বুঝে উঠতে না পারার ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন তার স্রষ্টা। কোন সমাজ যদি পশ্চাদ পদ হয় তবে তার পক্ষে সময়ের চেয়ে সামনে চলা শিল্পের রস বুঝে উঠা সম্ভব না।

নগ্ন ভারত মাতা ছবির পক্ষে হুসেনের অবস্থান, যে কোনো নগ্ন শিল্পকর্ম বিচার করার আগে ‘ন্যুড’ আর ‘ন্যাকেডের’ পার্থক্য বুঝতে হবে। দুটো শব্দ বা তার মানে ও দ্যোতনা এক নয়। দেখুন তো সেই ছবিটি...
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।