বন্ধ চোখে মুহূর্তটা ফাঁকি দিয়ে চলে যায়, স্বপ্নগুলো নির্মম বাস্তবতা ছাড়া কিছু নয়। চূর্ণ ধুলিকণা, সবই যেন চূর্ণ ধুলিকণা।
আমি অতি সাধারণ একজন মানুষ। আমার পিতামাতা মুসলিম, তাই জন্মসূত্রে আমিও একজন মুসলিম। আমি যে মুসলিম হয়ে নিজের উপর বিরক্ত তা নয়, আবার মুসলিম হয়ে খুব বেশি গর্ববোধও করছি না।
কারন পিতামাতা মুসলিম হওয়ায় ইসলাম নিয়ে যাচাই-বাছাই করার অনেক আগেই আমি মুসলিম হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত হয়ে গেছি। আমি এখন তাই ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা, যাচাই-বাছাই করছি, বোঝার চেষ্টা করছি। তবে যেহেতু আমি ইসলাম সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানি না, তাই আমার চিন্তা ভাবনায় ভুল থাকাটাই স্বাভাবিক। আমি ইসলামের একটি বিষয় নিয়ে একমত নই, এই বিষয়টি আমি তুলে ধরার চেষ্টা করছি। ভুল-ভ্রান্তি সকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আশা রাখি।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি অন্যতম স্তম্ভ হল হজ্জ্ব। আমি যতদূর জানি, হজ্জ্ব হল প্রত্যেক ধনী মুসলিমের উপর ফরজ। হজ্জ্ব হল মক্কা, মদীনার নানা ইসলামিক ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমন করে নির্দিষ্ট নিয়মে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রক্রিয়া।
হজ্জ্ব অতি প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত। ইসলামী ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, হযরত ইব্রাহীম (আ) তার পুত্রকে কুরবানী করার কাহিনী বিজড়িত স্থান গুলোকে ভ্রমণ করার মাধ্যমেই হজ্জ্বের উৎপত্তি।
হযরত ইব্রাহীম (আ) এর সময় থেকেই মানুষ মক্কা ও মদীনায় হজ্জ্ব করে আসছে। তবে হযরত মুহাম্মদ (স) এর আমলে তা পূর্ণতা পায়। আমরা সকলেই জানি, মক্কা ও মদীনা সম্পূর্ণ মরুভূমি অঞ্চল, এখানে কোন রকম ফসল জন্মায় না। প্রাচীনকালে একমাত্র হজ্জের মৌসুমে আরববাসীরা যে অর্থ উপার্জন করত, সেই অর্থেই আরববাসীদের সারা বছরের ব্যয়ভার মিটত। এভাবে যখন অনেক মানুষ আরবে হজ্জ করতে আসা শুরু করল, তখন যে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জিত হত, তা দিয়েই আরবীয়রা ব্যবসা বাণিজ্য শুরি করল।
আরবীয়রা হয়ে উঠল বণিক জাতি, আর্থিক ভাবে সচ্ছল।
হযরত মুহাম্মদ (স) এর ইসলাম প্রচারের ফলে হজ্জ আরো অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠল। বর্তমানে ইসলামের ব্যপক প্রসারের ফলে, সারা পৃথিবী থেকে অগণিত মানুষ আরবে হজ্জ করতে যায়। এই হজ্জের সময় প্রতিবছর আরব সরকারের যে পরিমান অর্থ উপার্জন হয়, তা আরবের বাৎসরিক ব্যয়ের তুলনায়ও অনেক বেশি। এই বিপুল উপার্জনের ফলে সৌদি আরব বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম ধনী রাষ্ট্রগুলোর একটি।
অনেকে হয়তো আমার সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন, বলবেন সৌদি আরবের অনেক তেল, স্বর্ণ যা বিক্রি করেই তারা আজ এত ধনী। কিন্তু একটু চিন্তা করলেই দেখবেন, আরবের এত খনিজ সম্পদ, কিন্তু এই বিপুল খনিজ সম্পদ উত্তোলনের অর্থ আরব সরকারের ছিল না। একমাত্র হজ্জে উপার্জিত অতিরিক্ত অর্থ দিয়েই তারা এসব খনিজ উত্তোলন শুরু করেছে। আর যেহেতু ইসলাম ধর্মের দিনদিন প্রসার ঘটছে, আরবীয়দের জন্য হজ্জ হয়ে উঠেছে একটি অনন্তকালের অর্থ উপার্জনের উপায়।
মানুষ হজ্জ করতে যায় তার সকল পাপ মোচনের আশায়।
কোন বান্দা যদি অনুতপ্ত হয়ে হজ্জ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, তবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। আমরা জানি, আল্লাহ সব দেখেন, শোনেন, বোঝেন। তিনি তার সকল সৃষ্টিকেই অনেক ভালবাসেন। তাই যদি হয়, তিনি তো তার সকল বান্দাকে যে কোন জায়গায়ই ক্ষমা করে দিতে পারেন। কবল মাত্র মক্কা মদীনায় গিয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার কি কোন যৌক্তিকতা আছে? আর যদি যৌক্তিকতা থেকেও থাকে, তবে কেন হজ্জ শুধুমাত্র ধনী মুসলমানদের জন্য ফরজ? তা তো সকলের জন্যই সমানভাবে ফরজ হওয়ার কথা।
তবে কি হজ্জ কেবলমাত্র আরবকে পৃথিবী ধ্বংসের পূর্ব পর্যন্ত আর্থিকভাবে সচ্ছল রাখার একটি বাজে উপায় নয়?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।