এক অসাম্প্রদায়িক উজ্জল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি
বিষয়টা নতুন নয়। তবে চমকপ্রদ। আমাদের দেশে গজিয়ে উঠেছে আজ হাজারখানেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যাল্যয়। যার না আছে কোন ক্যাম্পাস,না আছে সুস্থ পরিবেশ মানষিক বিকাশের। ক্যাম্পাস বলতে ঐ বিল্ডিংটা বা যে শপিং কমপ্লেক্সে সেটা গড়ে ঊঠেছে সেই শপিং কমপ্লেক্স এবং তার সিড়ি।
আর ক্লাসরুম?একটা উদাহরণ দিই। ড্যাফোডিলস ইন্টারন্যাশনাল য়ুনিভার্সিটি বেশ পরিচিত একটি বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের প্রথম ৫টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যাল্যের মধ্যে ১টি। এই বিশ্ববিদ্যালয়টির কোন ক্লাস রুমে কোন জানালা নেই। যদি বিদ্যুত চলে যায় চর্মচোখে কিছু দেখার উপায় নেই।
অন্ধকারে কিচ্ছু দেখা যাবে না। জেনারেটর বা আইপিএস না চালানো পর্যন্ত।
গিয়েছিলাম এই য়ুনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (সিইসি)বিভাগের ক্লাস রুমে। গিয়ে খানিকটা তাজ্জব বনে গেলাম।
১টা অভিজ্ঞতার কথা বলি।
বহুদিন আগে পুরান ঢাকার ইসলামপুর এলাকার কিংগাডারগার্টেন ১টা স্কুলে কয়েকদিন পড়িয়েছিলাম। স্কুলটা অনেক ভাল ছিল। যেসব বাচ্চাদের বর্নপরিচয় করান হয় মানে যারা কেজিতে পড়ে তাদের খুব যত্ন সহকারে পড়ান হয় সেখানে,তাদের ক্লাসরুমে আছে ১টা কম্পিটার। সিডি চালিয়ে পড়ান হয়। “অ” তে অজগরটি আসছে তেড়ে...বললে কম্পিউটারে সত্যি ই অজগরকে তেড়ে আসতে দেখা যায়।
ড্যাফডিলসের সিএসসির ক্লাস রুম দেখে ইসলামপুরের সেই বাচ্চাদের ক্লাস রুমের কথা মনে পড়ে গেল। ১টা পার্থক্য ছাড়া আর কোন পার্থক্য নেই। পার্থক্যটা হল বাচ্চাদের ক্লাস রুমে ১টা কম্পিঊটার ছিল কিন্তু ড্যাফোডিলসের সিএসসি ক্লাস রুমে কোন কম্পিঊটার ই নেই। অদ্ভুত পরিস্থিতি। ১জন শিখখার্থীকে ভর্তি হবার সময় প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পরিষোধ করতে হয়।
তাদের কি নূন্যতম মূল্যমানের ১টা কম্পিঊটার প্রাপ্য নয়?কিংবা ১টা সার্বক্ষনিক প্রযেক্টর?
কি হাস্যকর। আরো নির্মম হাস্যকর ব্যাপার হল শিক্ষার্তিদের সে চাহিদাও নেই।
এর মানে কি!১টা প্রশ্নের উত্তর জানলে ই এর মানে জানা যাবে। কেন শিক্ষার্থিরা বিশেষ করে যাদের বাবা মায়ের টাকা আছে তারা প্রাইভেত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হয়?
উত্তরঃ
১। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন জট।
২। প্রায় না পড়াশুনা করে(যতটুকু না পড়লেই না,বিষয়ের গভিরে না গিয়ে)১টা ভাল পয়েন্ট নিয়ে বের হওয়া যায়। শিক্ষকদের উপর নির্দেশ ই থাকে কাউকে বি+ এর নিচে দেয়া যাবে না।
৩। ইচ্ছে করলে বেশি ক্রেডিট নিয়ে ৪ বছরের আগে কোর্স শেষ করা যায়।
৪। টাকা যে আছে সেটা লোকজনকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া। মানে রথ দেখাও হল কলা বেচাও হল।
কিন্তু এতে সামগ্রিকভাবে তারা বা দেশ কতটুকু লাভবান হচ্ছে!কোনভাবে ই দেশ বা তারা লাভবান হচ্ছে না। তাদের জীবন থেকে অনেক সময় বেচে যাচ্ছে ঠিক ই।
কিন্তু তাদের অধিত বিষয়গুলো সম্পর্কে যতটুকু জানার কথা ছিল ততটুকু সম্পর্কে তারা জানল না। ফলে দেশে এমন কিছু মানুষ তৈরি হল যারা পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্তিদের সমমর্যাদার হলেও সম যোগ্যতার নয়। এ পরিস্থিতিতে ১টা অসাম্য তৈরি হয়।
এছাড়াও এদের ১টা মিথ্যা অহং বোধতো আছে ই। আর সেটা হল টাকার।
এবং আছে ওয়েস্টার্ন কালচারের প্রতি অন্ধ আনুগত্য। পশ্চিমাদের অনুকরনে সব কিছু করাকেই এরা সভ্যতার চরম ঊতকর্ষতা(স্মার্টনেস)মনে করে। গভির চিন্তা ও বাঙ্গালি মূল্যবোধ কী জিনিস এরা বেশিরভাগ ই জানে না। জানলেও যে প্রতিষ্ঠান এবং পরিবেশ থেকে এরা উঠে আসে সে বাতাবরন তাদের তা ধারণ করা তো দূরের কথা শ্রদ্ধা করতেও শেখায় না।
অনেক ভাল মানুষ নিয়ে ই তৈরি হয় ১টা ভাল সমাজ।
কিন্তু ভুল ব্যাবস্থাপনার স্বীকার এই মানুষগুলকে নিয়ে যে অসাম্য সমাজ তৈরি হল তার কী পরিনতি হবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।