My scars remind me that the past is real, I tear my heart open just to feel........
সামহোয়ারইনে এর আগে রক গান নিয়ে বেশ কিছু পোস্ট দিয়েছি আমি। কিন্তু আজকেরটা একটু অন্যরকম। এই পোস্ট হাইস্কুলের কিছু বন্ধুর একসাথে বড় হওয়ার গল্প, ১৮ বছরের বন্ধুত্বের ফসল কিছু অসাধারণ রক গানের কম্পোজিশনের গল্প, যার শুরু ক্যালিফোর্নিয়ার হানটিংটন বীচে।
Matthew Charles Sander ছিলেন এক মূর্তিমান আতংক স্কুলের টিচারদের জন্য। নিজেই বলেছেন, 'আমি খুব লক্ষি ছেলে(!) আর ইবলিসের(!) মাঝামাঝি একটা কিছু; মনের দিক থেকে অসাধারণ কিন্তু বদমাইসি/মারামারি ছাড়া কিছুই করতামনা'।
এইটথ গ্রেডে স্কুল থেকে টিসি দেয়া হয় এইসব কাজের জন্যই।
কে জানত এই ভয়ংকর স্বভাবের ছেলেটাই একদিন আমেরিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় একটা ব্যান্ডের ভোকাল হবে। ১৯৯৯ সালে তিন বন্ধু Zachary James Baker, James Owen Sullivan আর Matt Wendt (ইনি মাসখানেক পরেই ব্যান্ড ছেড়ে দেন)একসাথে যখন ব্যান্ড করার ডিসিশন নিলেন, নাম হিসেবে পছন্দ করলেন বাইবেলের Cain and Abel (পবিত্র আল-কুরআনে যাদের হাবিল কাবিল বলা হয়েছে) ঘটনা থেকে, ব্যান্ডের নাম পছন্দ করলেন Avenged Sevenfold. ঘটনা শুনে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এরা ক্রিশ্চিয়ান রক ব্যান্ড না, বা কেউই ব্যাক্তিজীবনে খুব একটা ধার্মিক যে তাও না। যাই হোক, অল্প কিছুদিন পরে লীড গিটারে ব্যান্ড পেল Brian Elwin Haner, Jr. কে। লাস্ট যোগ দিলেন Jonathan Lewis Seward. এর যোগ দেয়াটা অদ্ভুত, বাকিদের জ্যামিং শুনতে বসে থাকতেন, এভাবেই একদিন ব্যান্ডের মেম্বারই হয়ে গেলেন।
তখনই তারা ঠিক করলেন সবারই একটা স্টেজ নাম থাকবে। দেখা যাক নাম কি হল একেক জনের,
Matthew Charles Sander - M. Shadows
Zachary James Baker - Zacky Vengeance
James Owen Sullivan - The Rev
Brian Elwin Haner, Jr. - Synyster Gates
Jonathan Lewis Seward - Johnny Christ
এভাবেই শুরু। মাত্র ১৮বছর বয়সেই বের হল ডেব্যু এলবাম, Sounding the Seventh Trumpet. জাত তখনই চেনা গিয়েছিল, আজতক এলবামটা সারা পৃথিবীতে ২০০,০০০ কপি বিক্রি হয়েছে। মোটামুটি সবাই চিনে ফেলেছিল তখনই। এর পরপরই সুযোগ পেলেন 'টেক একশন ট্যুর'-এ যাওয়ার, Mushroomhead আর Shadows Fall-এর সাথে।
২০০৩ সালে বের হল Waking the Fallen. অল্টারনেটিভ মেটালের এক চমৎকার কালেকশন হল এলবামটা। অর্ধেকের বেশি গানই ছিল মেটালকোরের সাথে অল্টারনেটিভ রকের সংমিশ্রন, মানুষ পছন্দও করল। সত্যি বলতে কি, মিউজিকের নিজস্ব একটা স্টাইলই বানিয়ে ফেলেছিল সেভেনফোল্ডরা। ক্যারাঙ, বিলবোর্ড, রোলিং স্টোনসে দীর্ঘদিন এদের জেনরি লেখা ছিল 'হেভি মেটাল/ হার্ড রক/ মেটালকোর'। মেটালকোরের ক্যাঁচক্যাঁচানি আমার কাছে বিরক্তিকর লাগে, কিন্তু এখন বুঝি এদেরটা কেন লাগত না, অল্টারনেটিভ মেটালে নতুন একটা ধারাই নিয়ে এসেছিল এরা! ব্যান্ডের ভোকাল থাকত ৪জনেরই শুধু বেজিস্ট গান গাইতেন না।
ঐ এলবামের 'আনহলি কনফেশনস' গানটা আজও নতুন মনে হয়। মিউজিক ভিডিওটা অনেকবার প্রচারিত হয়েছে এমটিভির হেডব্যান্জার'স বলে। ভিডিওটা নিচে যোগ করলাম, অত আহামরি না, কিন্তু গানটা খুবই সুন্দর!
ব্যাপক সফল হওয়ার পর, পরের এলবামের জন্য আটঘাট বেঁধেই নামে এভেন্জড সেভেনফোল্ডরা। ভোকাল শ্যাডো মিয়া ট্রেনিং নেন এক বিখ্যাত ভোকাল কোচের কাছে (Ron Anderson, ইনি এক্সেল রোজ (বন্দুক/গোলাপ) আর ক্রিস কর্নেল (গানের গোলাম) এর কোচ ছিলেন )। আর যায় কই।
লিড সিঙ্গেলস ছিল Bat Country, যথেষ্ট রোটেশন পায় এমটিভিতে (আমার কেন জানি ভাল লাগেনি)। তবে সবচেয়ে সাড়া তোলে Seize the day গানটা। মনে আছে গানস এন্ড রোজেস-এর ডোনট ক্রাই গানটা? একবিংশ শতাব্দীর ভার্সন মনে করতে পারেন গানটাকে, ভিডিওটাও অনেকটা সেভাবেই বানানো হয়েছে। সত্যি কথা বলতে কি, এই এলবাম থেকেই সেভেনফোল্ডরা মেটালকোর থেকে কিছুটা সরে আসা শুরু করে, চেন্জ হতে থাকে কিছুটা হার্ড-রক ব্যান্ডের দিকে। Seize the day-এর ভিডিওটা নিচে যোগ করলাম,
মাঝখানে বেশ কিছুদিন কনসার্ট করে বেড়ায় দুনিয়াভর।
২০০৬ এ গান গায় অজফেস্টের মেইন স্টেজে, ২০০৬এর রক এম রিং-এ, এছাড়াও ট্যুরে যায়, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইউরোপ, জাপানে। ২০০৭ এ ব্যাংককেও এসেছিল।
অবশেষে, ২০০৭ এর অক্টোবরে বের হয় এখন পর্যন্ত ওদের সবচেয়ে জনপ্রিয় এলবাম, সেলফ টাইটেলড এলবামটা। কোন ব্যান্ডই মনে হয় না এত ম্যাচুউরড হওয়ার পর সেলফ টাইটেলড এলবাম বানায়। প্রতিটা সিঙ্গেলসই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়, বিলবোর্ডের মেইনস্ট্রিম চার্টে ১ নাম্বার হতে না পারলেও জনপ্রিয়তার দিক থেকে কোন অংশে কম ছিলনা।
অলমোস্ট ইজি, ডিয়ার গড, আফটার লাইফ প্রতিটা গানই ছিল শ্রুতিমধুর। তবে এই এলবামে এদের মেটালকোর টাইপের কোন গানই ছিলনা। দুইটা গান যোগ করছি, অলমোস্ট ইজি আর আফটার লাইফ। অলমোস্ট ইজি অল্টারনেটিভ মেটাল। রিদমটা ভালই লাগে।
নিচের গানটা, আফটার লাইফ, আমার চোখে ২০০৮ সালের সেরা হার্ড রক। শুধু তাই নয়, এরপরে এটার কাছাকাছি মানের কোন হার্ড-রক আমি এই সপ্তাহ পর্যন্ত পাইনি। ওয়ারফেজের পুরান জনপ্রিয় গানগুলো মনে আছে? সুরটা কিছুটা সেগুলোকেও মনে করিয়ে দেয়। মেইন গানে একটা ভায়োলিন ইন্ট্রো আছে, ভিডিওতে সেটা নেই। আবার, সেকেন্ড কোরাসের পর রেভ-এর ভোকাল আছে কিছুক্ষণ।
লিরিকস পুরাটা দিচ্ছিনা, শুধু কোরাসটুকু তুলে ধরলাম নিচে,
I don't belong here, I gotta move on dear escape from this afterlife
’Cause this time I'm right to move on and on, far away from here
Got nothing against you and surely I'll miss you
This place full of peace and light, and I’d hope you might
Take me back inside when the time is right
ড্রামার দ্যা রেভ-এর সুর করা, ভোকাল দিয়েছেন বেজিস্ট জনি ছাড়া সবাই। ব্যান্ডের মেম্বার-রা নিজেরাও বলেছেন এটা আজ পর্যন্ত ওদের সবচেয়ে সেরা কম্পোজিশন। ভিডিওটা লিরিকসের সাথে যথেষ্ট সামন্জস্যপূর্ণ। দেখুন,
২০১০ সালের জুলাই নাগাদ পরের এলবাম বের হবে এভেন্জড সেভেনফোল্ডের। তার আগে ব্যান্ড মেম্বারদের বর্তমান ফেম কতটুকু, কি অবস্হা কিছুটা জানাই।
২০০৬ সালে সেভেনফোল্ড; রিহান্না, প্যানিক এট দ্যা ডিসকো; এদের হারিয়ে জিতে নেয় শ্রেষ্ঠ নবাগতের এমটিভি এওয়ার্ড! আর ৫০০,০০০ কপি বিক্রি হওয়া সেলফ টাইটেলড এলবাম পায় ২০০৮ সালের এলবাম অফ দ্যা ইয়ারের ক্যারাঙ এওয়ার্ড।
ভোকাল, শ্যাডো মিয়া আগের চেয়ে অনেক ভদ্র হয়েছেন। গত বছর বিয়ে করেছেন হাইস্কুল থেকে সম্পর্ক হওয়া গার্লফ্রেন্ডকে।
ম্যাগাজিন ক্যারাঙ, Zacky Vengeance-কে মার্ক করেছে সবসময়ের ২য় সেরা রিদম গীটারিস্ট হিসেবে। উল্লেখ্য, ব্যান্ডের দুই গীটারিস্ট-ই নিজেদের সিগনেচার স্কেচার গীটার ইউজ করেন।
Zacky Vengeance একাই দুইটা মডেল ইউজ করেন। ভাল কথা, এই ভাইসাহেব আবার একটু ফ্যাশনেবলও বটে, নিজের নামে ড্রেস লাইনও আছে। আর ব্যান্ডের সব মেম্বারদের স্টেজ নেম ওনারই ঠিক করা।
বেজিস্ট জনি ভাই ভালই আছেন।
সিনিস্টার গেটস গীটার ভালই বাজান তা উপরের গান গুলো শুনলেই বুঝা যায়।
তবে এখানে আরেকটা জিনিস জানাচ্ছি- গীটার ওয়াল্ড ম্যাগাজিনের চোখে গেটস সর্বকালের সবচেয়ে ফার্স্ট গীটারিস্ট (এটা ঠিক বুঝলাম না, আমার চোখে মনে হয় ড্রাগন ফোর্সের হারমেন লী-কে)।
আর ড্রামার দ্যা রেভ?
অসম্ভব বন্ধুবৎসল এই ড্রামার গত ডিসেম্বরের ২৮ তারিখ মারা গেছেন। অনেকদিন এদের সাইটে ঢুকা হয়নি কাজের চাপে, গত শুক্রবার ঢুকে এই খবরটা দেখে আমার খুবই কষ্ট লেগেছে। শেষের এলবামের জনপ্রিয়তা পাওয়া সব কয়টা গান তাঁরই লেখা ছিল, লিরিকসগুলোতেও কেন জানি গড/ পরকাল এই টার্মগুলো বেশি আসছিল তাঁর। সেভেনফোল্ডে তাঁর ড্রামস কম্বিনেশনে বেসড্রামস দুইটা লাগত, লাকের জন্য তিনটা ইউজ করতেন।
বেঁচে থাকা অবস্হায় ৬টা গাড়ি ব্যবহার করতেন, সপ্তাহের ৬দিন ৬টা আর রোববার রেনডমলি। এনগেজড ছিলেন Leana MacFadden-এর সাথে। মৃত্যুর কারণ এখন পর্যন্ত স্বাভাবিকই জানা গেছে পোস্টমর্টেমে। পারিবারিক ফিউনেরালের পর অজানা কোন জায়গায় তাকে সমাহিত করা হয়। ১৮ বছরের বন্ধুত্বের সম্পর্ক মৃত্যু ছাড়া আর কারো কাছেই হার মানত না, বাস্তবেও তাই ঘটল।
প্রচুর মজা করতেন ব্যান্ডের বন্ধুদের সাথে, ব্যান্ডের ম্যানেজার পরে এক প্রেসনোটে বলেছিলেন, 'ব্যান্ডের সবচেয়ে বড় উৎসাহদাতাই আজ নেই। '
মারা গেছেন, কিন্তু বন্ধুদের মনে কখনো মারা যাবেন না দ্যা রেভ। ২০১০ সালে যে এলবামটা বের হওয়ার কথা, তার প্রায় সবগুলোর ড্রামস ট্র্যাক রেডি করে ফেলেছিলেন, সেগুলোর রেকর্ডও রেখে গেছেন হাইস্কুলের সেই প্রিয় বন্ধুদের কাছেই। ড্রিম থিয়েটারের ড্রামার মার্ক পোর্টনয়, এভেন্জড সেভেনফোল্ডের পরের এলবামে ড্রামারে রোলে থাকছেন। তিনি বলেছেন, দ্যা রেভের জায়গায় ড্রামসে থাকাটা খুবই অনারের তার জন্য।
আমিও তাই ভোকাল শ্যাডোর ভাষায় বলি, 'হয়ত রেভ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ড্রামার ছিলেন না, কিন্তু তার কম্পোজ করা আফটার লাইফ গানটা আমার জন্য যে প্রেরণা ছিল কিছু কঠিন সময়ে; আমিও তাঁকে ভুলব না। শান্তি। '
এমপিথ্রী ডাউনলোড লিংক:
Unholly Confessions Click This Link
Seize The Day Click This Link
Almost Easy Click This Link
Dear God Click This Link
Afterlife Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।