এই বিশ্ব প্রকৃতিতে ভূতপ্রেতের অস্তিত্ব থাক বা না থাক, অন্ধকার রাতে বাঁশ বাগানের পাশ দিয়ে কিংবা গাব গাছের নিচ দিয়ে একা কোথাও যেতেই গা ছমছম করে ওঠে, ভয়ে শুরু হয় কাঁপাকাঁপি। এই বুঝি বিকট অট্টহাসি দিয়ে চেপে ধরল ঘাড়! কিন্তু আসলেই কি পৃথিবীতে ভূতপ্রেত বলে কিছু আছে? বিশ্বের ইতিহাসে অনেক স্থানই ভূতের আড্ডাখানা হিসেবে পরিচিত। স্বল্প পরিসরে এখন এমন কতগুলো ভূতের আড্ডার খবরই জানব।
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম কুখ্যাত একটি বাড়িকে বলা হয় ভূতের আড্ডাখানা। ১৯১০ সালের কথা।
কেনটাকি রাজ্যে একটি দোতলা স্বাস্থ্যনিবাস হিসেবে নির্মিত হয় ওয়েভারলি হিলস। হাসপাতালটিতে ৪০-৫০ জন রোগীর চিকিৎসা করা যেত। টেলিভিশনে অনেকবার ওয়েভারলি হিলস সেনেটরিয়াম সম্পর্কে প্রতিবেদন দেখানো হয়েছে। হাসপাতালটির ভুতুড়ে কর্মকাণ্ডের জন্য বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। এ হাসপাতালে কিছু ছায়া দেখা যায়, শোনা যায় অদ্ভুত কণ্ঠস্বর ও চিৎকার।
ভূতের আড্ডার আরেকটি বিখ্যাত স্থান হলো
ফ্রাঙ্কলিন প্যালেস। এর অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ডে। বাড়িটির নির্মাণশৈলীই অনেক ব্যতিক্রম। বাড়ির বয়সও কম নয়। ১৮৬০ সালে জার্মান নাগরিক হ্যানেস টাইডম্যানের জন্য এটি বানানো হয়েছিল।
কিন্তু এ বাড়িতে আসার পরপরই তার চার কন্যার মৃত্যু হয়, যাদের তিনটিই ছিল শিশু। সব মৃত্যু দেখে মনে হয়েছে, এতে টাইডম্যান নিজেই জড়িত। এ বাড়ির দর্শনার্থীরা জানান, এখনো এখানে পদশব্দ, দরজা বাড়ি খাওয়ার শব্দ আর বাচ্চাদের কান্না শোনা যায়।
ইংল্যান্ডের দক্ষিণ ডিভনে বেরি পমেরয় গ্রামের কাছেই অবস্থিত একটি প্রাসাদ। ১৫ শতকের শেষের দিকে নির্মিত এই প্রাসাদটি বর্তমানে পৃথিবী বিখ্যাত দুই নারী ভূতের বাসস্থান বলে সবার কাছে পরিচিত।
কারা এই দুই বিখ্যাত ভূত। এদের একজনের নাম 'ব্লু লেডি' এবং অপরজন 'হোয়াইট লেডি' আর অভিজ্ঞতা বলে যে প্রাসাদটিতে ব্লু লেডির উপস্থিতিই বেশি দেখা যায়। প্রাসাদের আশপাশে বেড়াতে আসা লোকদের সে মোহনীয় জাদুকরী ক্ষমতায় বশ করে নেয়, তারপর সে হারিয়ে যায়। তার জাদুতে আচ্ছন্ন হয়েছে লোকেরা ঘুরেফিরে প্রাসাদের ছাদের আনাচে-কানাচে। এক সময় তারাও হারিয়ে যান।
হোয়াইট লেডি হচ্ছে মার্গারেট পমরয়। সে অবশ্য দূরে কোথাও যেতে পারে না। তার বাস প্রাসাদের নিচের কুঠুরি, বা ডানজনে। বলা হয়ে থাকে তার আপন বোন তাকে সেখানে আটকে রেখেছিল আমৃত্যু। তাই তার আনাগোনা কেবল ওইটুকুতেই।
তবে নিচের ওই অন্ধকার কুঠুরি থেকে তার আর্তচিৎকার আর আহাজারি অনেকেই শুনতে পেয়েছে।
এবারের ভূতের আড্ডাটির অবস্থান চেকপ্রজাতন্ত্রের একটি রোমান ক্যাথলিক গির্জা। কিন্তু আর দশটা গির্জার সঙ্গে এর মূল পার্থক্য শুধু এটুকুই যে, একে সাজিয়ে তুলতে ব্যবহার করা হয়েছে মৃত মানুষের হাড়গোড় এবং কঙ্কাল। বলা হয়ে থাকে এ যাবত পর্যন্ত ৪০০০০-৭০০০০ মানুষের সৎকার করা হয়েছে এই চ্যাপেলে। আর এদের মধ্যে অনেকেরই হাড়গোড় শোভা বাড়িয়েছে এই জায়গাটির অন্দরমহল সাজসজ্জায়।
এত সাজানো-গোছানোর পরও এর বদনাম কিন্তু একটুও কমেনি। বরং পৃথিবীর অন্যতম ভূতের জায়গা হিসেবে এর সুনাম যথেষ্ট।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।