দেশে একযোগে ১৮টি অপারেটর চালু করল আইপি টেলিফোন সার্ভিস। এটা এক ধরনের ভিওআইপি টেলিফোন। তবে এ ফোন বৈধভাবে শুধু দেশের ভেতরেই ব্যবহার হবে। যাঁরা এ ফোনের সংযোগ পেতে আগ্রহী তাঁদের অবশ্যই ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে। শুধু কথা বলা নয়, এ ফোনের মাধ্যমে পরস্পরকে দেখার সুয়োগও রয়েছে।
বাংলাদেশে এই প্রথম এ ধরনের প্রযুক্তিতে টেলিফোন সেবা চালু হলো।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার একটি হোটেলে এই সেবা উদ্বোধন করেন বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। অনুষ্ঠানে জানানো হয় মাত্র ১০০ টাকা লাইনরেন্টের বিনিময়ে এ ফোনের সংযোগ পাওয়া যাবে। ওই ১০০ টাকায় আইপি থেকে আইপি ফোনে কথা বলা যাবে এক মাস। অন্য কোনো অপারেটরে কথা বলতে হলে মিনি ে ট কলচার্জ লাগবে ৬৫ পয়সা।
অপারেটররা জানান, তাঁরা কলচার্জ আরো কমানোর পক্ষে। কিন্তু এতে রাজি নয় বিটিআরসি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের 'এটুআই' প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
গত বছর বিটিআরসি ২২টি কম্পানিকে আইপি টেলিফোন সার্ভিসের লাইসেন্স দেয়। এর মধ্যে যে ১৮টি কম্পানি গতকাল তাদের সেবা শুরু করল, সেগুলো হলো_অ্যাডভান্স ডাটা নেটওয়ার্ক সিস্টেম, অগি্ন সিস্টেম, বিডিকম অনলাইন, বেক্সিমকো, ব্র্যাকনেট, বিটিএস কমিউনিকেশন, কানেক্ট বিডি, ঢাকাকম, গ্রামীণ সাইবার নেট, গ্লোবাল অ্যাকসেস, এইচআরসি টেকনোলোজিস, ইনফরমেশন সার্ভিস নেটওয়ার্ক, ইনোভেটিভ অনলাইন, লিংক-৩ টেকনোলোজিস, মেট্রোনেট বিডি, অপটিম্যাক্স বিডি, রয়েল গ্রিন অনলাইন ও টেলনেট কমিউনিকেশন।
অনুষ্ঠানে বিডিকম অনলাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুমন আহমেদ সাবির আইপি টেলিফোন বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন। তিনি কালের কণ্ঠকে জানান, কয়েক দিন আগে থেকেই নির্বাচিত কিছু গ্রাহকের মাধ্যমে এ সেবা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। গ্রাহকরা তাঁদের সাধারণ টেলিফোন সেটে অ্যাডাপ্টার লাগিয়ে আইপি টেলিফোন ব্যবহার করতে পারবেন। এডাপ্টারের দাম পড়বে হাজার দুয়েক টাকা। অবশ্য সাধারণ আইপি টেলিফোন সেটই পাওয়া যায় দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকায়।
এতে এডাপ্টার লাগাতে হবে না। পরস্পরের ছবি দেখতে হলে বাজার থেকে ভিডিও টেলিফোন সেট কিনে নেওয়া যেতে পারে। ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে এ সেট পাওয়া যায়। এ ছাড়া ডেস্কটপ কম্পিউটার এবং ল্যাপটপে সফটওয়্যার ইন্সটল করেও তাতে আইপি টেলিফোন সংযুক্ত করা যাবে। এ ক্ষেত্রে ছবির জন্য ওয়েবক্যাম ব্যবহার করতে হবে।
বর্তমানে ইন্টারনেটে স্কাইপি বা ইয়াহু ম্যাসেঞ্জারের মতো সফটওয়্যার ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষের সঙ্গে বিনামূল্যে কথা বলা যায় বা পরস্পরকে দেখা যায়। এটি একান্তই পিসি-টু-পিসি প্রযুক্তি। ফিক্সড বা মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ এতে নেই। তবে আইপি টেলিফোনে এ সীমাবদ্ধতা থাকছে না। ৬৫ পয়সা মিনিটে দেশের যেকোনো অপারেটরে কথা বলা যাবে।
'ইন্টারনেট সার্ভিস প্রেভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ' (আইএসপিএবি) আয়োজিত ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, সেই ব্যবসা সবচেয়ে ভালো, যে ব্যবসায় সব মানুষের কাছে সেবা পেঁৗছে দেওয়া যায়। ব্যবসার ধর্মই হওয়া উচিত জনগণের সেবা। সরকার টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে সব সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পেঁৗছে দেওয়ার বিষয়ে আন্তরিক।
মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ বলেন, আমি মনে করি, আমাদের ভালো কিছু পদক্ষেপের অন্যতম হচ্ছে এই আইপি টেলিফোন। আমরা এসএমএস সার্ভিসের চার্জ আরো কমাতে চাই।
এ বিষয়ে মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই আইপি টেলিফোন সংযোগ দেশের ৮৪ হাজার প্রাইমারি স্কুল, ১৮ হাজার মাধ্যমিক স্কুল ও ৯ হাজার মাদ্রাসায় দেওয়া যায় কি না তার সাম্ভব্যতা খতিয়ে দেখা দরকার। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এই আইপি টেলিফোনে শুধু কথা বলা নয়, আরো অনেক কিছু শেখা যাবে।
আইএসপিএবির সভাপতি আখতারুজ্জামান মঞ্জু বলেন, একই সময়ে ১৮টি প্রতিষ্ঠানের একযোগে এই সেবা শুরু করার বিষয়টি অভাবনীয়।
তথ্য সূত্র:
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।