মোহাম্মদ আবুল হোসেন: এখন বিশ্বজুড়ে সচেতন নারীদের প্রধান টার্গেট হলো শরীরটাকে আকর্ষণীয় দেখানো। সেজন্য চাই একহারা গড়ন। লিকলিকে হাত-পা। এমন শারীরিক গড়ন বানাতে যেয়ে ডায়েট কন্ট্রোল করার কারণে অনেক মডেলের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। কিন্তু এ ধারণার ঠিক উল্টো ডোনা সিম্পসনের মধ্যে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির ৪২ বছর বয়সী ডোনা নিজেকে বিশ্বের সবচেয়ে মোটা নারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। এখন তার ওজন প্রায় ১৭৪ কেজি। কিন্তু তাতেও তিনি সন্তুষ্টু নন। তার চাই আরও ওজন। আগামী দুবছরের মধ্যে তিনি এখনকার ওজনের দ্বিগুন ভারি হতে চান।
এজন্য নিয়মিত অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করেন। তাতে তার দীর্ঘদিনের জীবনসঙ্গী ফিলিপের (৪৯) কোন আক্ষেপ নেই। তারও প্রত্যাশা তার স্ত্রী বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মোটা হওয়ার রেকর্ড গড়ুক। এজন্য তিনি ডোনাকে বেশি বেশি খাবার পরামর্শ দেন। অনলাইন মেইল এ খবর দিয়ে আরও জানিয়েছে, ডোনা এখন একটানা মাত্র ২০ ফুট পথ হাঁটতে পারেন।
এর পরই নিজের শরীর আর নাড়াতে পারেন না। কোথাও কেনাকাটা করতে গেলে একটি মোবাইল স্কুটারে করে যেতে হয় তাকে। তা নাহলে দোকানে দোকানে ঘুরে ঘুরে কিছু কিনতে পারেন না। প্রতিদিন তার নিত্যদিনের চলাফেরার জন্য দরকার হয় ১২ হাজার ক্যালরি শক্তি। তা তিনি কিভাবে পান?
এ নিয়ে অনেক জনের প্রশ্ন।
জবাবে ডোনা সিম্পসন বলেন, আমার প্রিয় খাবার হলো সামুদ্রিক সুশি। এক বারে তিনি এ খাবারের বড় বড় ৭০ পিস গ্রাস করতে পারেন। এ ছাড়া তার পছন্দের খাবার হলো কেক ও মিষ্টি জাতীয় খাবার। ময়দা ও চিনি দিয়ে বানানো বড়াজাতীয় খাবারও তার প্রিয়। পছন্দ করেন খোলা খাবার।
আর যতটুকু সম্ভব চলাফেরা করার চেষ্টা করেন। সব খাবার খেতে তার সপ্তাহে খরচ পড়ে ৭৫০ ডলার বা প্রায় ৫২ হাজার টাকা। তিনি নিজে একটি ওয়েবসাইট খুলেছেন। তাতে তার খাদকীয় কাণ্ডকারখানা দেখানো হয়। মানুষ ওয়েবসাইটে তার খাওয়া দেখে অর্থ দেয়।
তা দিয়ে চলে তার উদরপূর্তি। বাজারের সাধারণ পোশাকের ভিতর ডোনা সিম্পসনের শরীর ঢোকে না। তার জন্য পোশাকের মাপ হলো- এক্সএক্সএক্সএক্সএক্সএক্সএক্সএল। ইতিমধ্যে তিনি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড-এ বিশ্বের সবচেয়ে মোটা মা হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন। তিনি ২০০৭ সালে যখন একটি মেয়ে সন্তান প্রসব করেন তখন তার ওজন ছিল প্রায় ২৪২ কেটি।
তার সন্তান প্রসব করা নিয়ে তখন চিকিৎসরা ছিলেন ভীষণ উদ্বেগে। কারণ এতো মোটা মানুষের সিজারিয়ান অপারেশন কিভাবে করা যাবে, তাকে বাঁচানো যাবে তো- এমন অনেক প্রশ্নের মুখে ৩০ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠন করা হয় একটি মেডিকেল টিম। তারাই সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে প্রসব করান তার কন্যা জ্যাকুলিন’কে। অনেকেই ভাবতে পারেন এতো মোটা নারীকে নিয়ে নিশ্চয় তার পার্টনারের বিতৃষ্ণা জন্মেছে। কিন্তু না।
তার পার্টনার ফিলিপ তাকে আরও আরও মোটা হওয়ার জন্য যত যা করার দরকার তাই করতে সহায়তা করেন, পরামর্শ দেন।
মোটা মানুষদের ডেটিং সম্পর্কিত এক ওয়েবসাইটে তাদের দু’জনের জানাশোনা। সেই থেকে প্রেম। ডোনা সিম্পসন মুটিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটতে থাকে তার শৈশবেই। ওই সময় তার মা তাকে ও তার ভাইদের প্রচুর খাবার দিতেন।
বেশি বেশি দিতেন মোটা হওয়ার খাবার। মাত্র ৯ বছর বয়সে ডোনার ওজন হয়ে যায় প্রায় ৮২ কেজি। এর পর তার মা মারা যান। বাবা দ্বিতীয বিয়ে করেন। কিন্তু সৎমা তার খাবার অনেক কমিয়ে দেন।
ফলে ডোনা তখন বাধ্য হয়ে খাবার চুরি করে খেতে থাকে। এভাবে সময় যেতে যেতে ডোনা বিয়ে করেন। তখন তার বয়স ১৯ বছর। তার ওই স্বামী চাকরি করতেন এক রেস্তোরাঁয়। তিনি সেখান থেকে রাত ২/৩ টার দিকে বাসায় ফিরতেন।
সঙ্গে নিয়ে আসতেন অতিরিক্ত থেকে যাওয়া খাবার। সে খাবার সাবাড় করতে রাত জেগে থাকতেন ডোনা। তিনি বলেন- এভাবে যখন আমি বিশাল দেহের অধিকারী হতে থাকি আমার মধ্যে আলাদা এক সুখ অনুভূত হতে থাকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।