দেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ঘাটতির জন্য বিএনপিকে দুষলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবারের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর বক্তব্য দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ দোষারোপ করেন।
"বিদ্যুৎ সংকটে মানুষের জীবন দুর্বিষহ একথা ঠিক," বলে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, "আমরা করবটা কী?"
তিনি বলেন, "১৯৯৬ সালের সরকার গঠনের পর বিভিন্নভাবে আমরা চার হাজার তিনশ' মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে গেছি। কিন্তু এরপর ২০০১ সালের বিএনপি এসে এক ফোঁটা বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি। "
"গত সাত বছরে চাহিদা বেড়েছে উৎপাদন বাড়েনি।
তাদের অপকর্মের ফল ভোগ করছেন দেশের মানুষ। আর, তারা সংসদে এসে দোষ দিচ্ছেন আমাদের," বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ খাতে আশা হিসেবে তিনি বলেন, "বিভিন্নভাবে কাজ করে সাত'শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। শিগগিরই আরো আট'শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হচ্ছে। বিদ্যুতের উৎপাদন আরো বাড়াতে আরো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
"
গ্যাসের সমস্যায়ও বিএনপিকে দোষী করে শেখ হাসিনা বলেন, "চারদলীয় জোট গ্যাস এক্সপ্লোরেশনে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কাকে কত দেবে, কত খাবে, সে পড়তা মেলেনি বলেই কোনো ব্যবস্থা তারা নেননি। "
তার সরকার গ্যাস উত্তোলনে নানা কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তাকে আটক করে 'স্লো পয়জন' করা হয়েছে বলেও সংসদে অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, "গ্রেপ্তার করে আমাকে 'স্লো পয়জন' করা হয়।
আমার তো একটা চোখ নষ্ট হওয়ার পথে ছিলো। থাক এ বিষয়ে আর বলতে চাই না। "
জিয়াউর রহমানকে সেনাসদস্য হত্যাকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেন হাসিনা।
১৯৭৭ সালের ৯-৩০ অক্টোবরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে একশ ২০ জন, ১৯৭৭ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ১৯৭৮ সালের ২৭ জানুয়ারি কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৭২ জন, ১৯৭৭ সালের ১৮-২১ অক্টোবর রাজশাহী কেন্দ্রিয় কারাগারে ৩৮ জন এবং বগুড়া কারাগারে ১৬ জন সেনা সদস্যকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা তার ৫৭ মিনিটের বক্তব্যের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানকে ধন্যবাদ জানান।
গত ৯ মার্চ ছিলো রাষ্ট্রপতির জন্মদিন। জাতীয় সংসদের সব সদস্যের পক্ষ থেকে জিল্লুর রহমানের সুস্বাস্থ্য কামনা করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা।
সন্ধ্যা সাতটা পাঁচ মিনিটে বক্তৃতার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "এক বছরে যতটুকু কাজ করা সম্ভব তার চেয়ে বেশি কাজ আমরা করেছি।
"আমরা সরকার গঠনের পর আমাদের সরকারের এক বছরের কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে উঠে এসেছে," জানান শেখ হাসিনা।
কৃষি, শিক্ষা, তথ্য প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে সরকারের নেওয়া উন্নয়ন প্ররিকল্পনা সংসদের সামনে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, "বর্তমান সরকারের এক বছরে বাংলাদেশ সন্ত্রাসী জঙ্গী দেশের দুর্নাম ঘুচিয়েছে। " ()
সরকার সম-উন্নয়নে বিশ্বাস করে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বিরোধী দলের নেত্রীর পাঠানো প্রকল্পের তালিকা দেখিয়ে তিনি বলেন, "এভাবেই আমরা সমোন্নয়নে কাজ করছি। "
ফখরুদ্দীন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "বিএনপি'র নির্বাচনে কারচুপি করার অপচেষ্টা থেকেই ওয়ান ইলেভেনের সৃষ্টি হয়েছিল। "
তিনি বলেন, "বিএনপি সরকার সেনাবাহিনীর নয়জন কর্মকর্তাকে ডিঙ্গিয়ে মইউদ্দিনকে সেনাপ্রধান করেন।
"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "তাদের (বিএনপি) নেত্রী বিদেশে চলে যাবে সব রেডি। এক কোটি টাকার ফরেন কারেন্সি কেনা হয়েছিলো। সে কাগজও আছে। তাকে বিদেশে পাঠানো আমি সমর্থন করিনি। আমিই প্রতিবাদ করেছিলাম।
"
"আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল বলেই চালের দাম কমেছিল। বিএনপি ক্ষমতায় এলে চালের দাম ৭০/৮০ টাকা হতো। বর্তমান সরকারের আমলে সকলের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে" বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিডিআর বিদ্রোহের পর খালেদা জিয়ার অবস্থান নিয়ে আবার সংসদে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে প্রশ্ন তুলে শেখ হাসিনা বলেন, "মা'র পেট থেকে একটা মানুষ কয়বার জন্মায়।
কী জিঘাংসা, প্রতিহিংসা আর জঘন্য মনোবৃত্তি থাকলে ১৫ আগষ্ট জন্মদিন পালন করেন। খুনীদের উৎসাহিত করতেই তিনি এটা করেছিলেন। "
খালেদা জিয়া ছাড়া বিরোধীদলের অধিকাংশ সদস্যই এসময় উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা যখন তুলে ধরেন তখন সরকারি দলের সদস্যরা টেবিল চাপড়ান।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।