আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেই দু'জন! (ছোট নাটক)

এত লেখালেখির কি আছে তাইতো বুঝলাম না!!

[আবছা কাল অন্ধকার। জায়গাটা কোথায় তা ঠিকমত বুঝা যাবেনা। তবে অপার্থিব,অলৌকিক কোথাও তা স্পষ্টতই বুঝা যাবে। দু'জন পাশাপাশি হাঁটতে থাকবে। এদের কারোই মুখ দেখা যাবেনা।

শুধু পৃষ্ঠদেশ দেখা যাবে। মাঝে মাঝে পাশ দিয়ে মুখের আদল দেখা যাবে। তবে আবছা আলোয় ঠিকমতন চেনা যাবেনা। একজনের গায়ে সাদা পাঞ্জাবি,কালো কোট। তার হাতদু'টি একটি আরেকটিকে পিছনের দিকে ধরে থাকবে।

অপরজনকে দেখে সমরাঙ্গনের লোক বলে মনে হবে। দু'জনের হাঁটার ধরণ হতেই বুঝা যাবে যে এরা পানির উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে অজানা কোন গন্তব্যের দিকে। পানির ছলাত ছলাত শব্দও কানে আসবে। ] ১ম জনঃ এখন কার ইনিংস চলছে মিডিয়াগুলোতে?তোমার না আমার? ২য় জনঃ আপনার,আমারটাতো গত পাঁচ বছর চললই। ১ম জনঃ হুম্‌ম্‌ ২য় জনঃ আপনিই বলুনতো,এই হাস্যকর ব্যাপারটা বাঙ্গালিরা সহ্য করছে কিভাবে?তারাতো বলতে গেলে একটা চক্রের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে।

১ম জনঃ বাঙ্গালিরা এখন আর আগের মত নেই। তারা আর এখন অত কিছু চিন্তা করেনা। তারা এতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। একবার তারা মিডিয়াজুড়ে তোমার গুনগান শুনে। আর তার পরেরবার আমার গুনগান শুনে।

২য় জনঃ কি অদ্ভুত! ১ম জনঃ কি হাস্যকর! ২য় জনঃ আচ্ছা,আপনার কি মনে হয়না সবচেয়ে হাস্যকর ব্যপার হচ্ছে বাঙ্গালিরা এখনও লড়াই করে কে তাদের "স্বাধীনতার ঘোষক" তা নিয়ে? ১ম জনঃ এতবার তোমার বা আমার নাম নেয়া হয়েছে যে আমি নিজেও ভুলে গেছি। ২য় জনঃ কিন্তু আমি ভুলিনি। ২৫ তারিখ রাতে আপনার বজ্রকন্ঠইতো বাঙ্গালির স্বপ্নকে একত্রিত করেছিল। ১ম জনঃ এটা তোমার বিনয়। তুমি যদি কালুর ঘাট হতে ২৬ তারিখ ঘোষণা না দিতে তবে এটা কখনই সম্ভব হতনা।

২য় জনঃ আমিতো ছিলাম সৈনিক। আর আপনি ছিলেন নেতা। আপনার ধ্বণিত অগ্নিকন্ঠইতো আমাকে ও সবাইকে প্রেরণা দিয়েছে। ১ম জনঃ তারপরও আমিতো ছিলাম পাকিস্তানে বন্দি। তোমরাইতো স্বাধীন করলে দেশটাকে।

২য় জনঃ আসলে আমরা দু'জনেই হয়তো চেয়েছিলাম বাঙ্গালির মুক্তি। ১ম জনঃ ঠিক তাই। ২য় জনঃ আজ কিছু হলেই আপনার,আমার বড় বড় ছবি নিয়ে কত মিটিং মিছিল হয়। ১ম জনঃ কত দাঙ্গা,হাঙ্গামা,পুলিশী অত্যাচার......বাঙ্গালির মুক্তি আজও হয়নি। ২য় জনঃ আর হবেও বা কি করে?তাদের চেতনাইতো মরে গেছে।

১ম জনঃ থাক,এসব নিয়ে আর এত ভেবনা। আমরা আর কিইবা করতে পারি। আমরাতো আজ এসব হতে অনেক ঊর্ধ্বে। ২য় জনঃ তারপরও দেশের মানুষের জন্য মন কাঁদে। ১ম জনঃআমারও একই অবস্থা।

কিন্তু কিছু করবার জো নেই। আজ কিছু হলেই শুধু নাম পরিবর্তন নিয়ে লাফালাফি করা হয়। যেন নামের পরিবর্তন করাটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ২য় জনঃ কিন্তু আমরা যা চেয়েছিলাম,সেই বাঙ্গালির ভাগ্যের পরিবর্তন আজও হলনা। আমরা শুধু এন্তেজার করব।

বাঙ্গালির চেতনার মুক্তির............... [তারা আরও কি যেন বলবে। কিন্তু তা শোনা যাবেনা। তারা হেঁটে হেঁটেদূরে চলে যেতে থাকবে। ধীরে ধীরে পর্দা নামবে। ]


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।