যে মুখ নিয়ত পালায়......। । এই লেখাটা শিল্প সাহিত্যের লোকদের নিয়ে( এবং অবশ্যই ইহা ফালতু পোস্ট)। তাদের জীবনের অনেক মজার কাহিনী।
প্রথমেই শুরু করা যাক জার্মান কবি ঔপন্যাসিক গ্যোয়েটে কে দিয়ে।
তার কাব্যনাটক ফাউস্ট(zeTযেটা ছফা অনুবাদ করেছেন) বিশ্বাসাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়। গ্যোয়েটের এক পুত্র ছিল। বিরাট বদ। তার বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য মহান গ্যোয়েটে দুশ্চিন্তিত থাকতেন। ১৮৩০ সালে সেই ছেলে রোমে মারা যায়।
গ্যোয়েটের কাছে ছেলের মৃত্যুসংবাদ জানানো হলে তিনি বলেছিলেন, আমি যে একটা মরণশীল প্রাণীর জন্ম দিয়েছিলাম তা আমার অজানা ছিল না।
গ্যোয়েটে কে নিয়ে আরেকটা গল্প। তার মা মৃত্যুশয্যায়। তখন এক পার্টিতে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ পত্র নিয়ে একজন আসল। তিনি আমন্ত্রণ পত্র বাহক কে বলে দেন, যাও গিয়ে বল, ফ্রাউ গ্যোয়েটে যোগদান করতে পারবেন না।
তিনি এই মুহুর্তে মৃত্যুর প্রস্তুতিতে ব্যস্ত।
উইন্সটন চার্চিল। ১৯৪০ এ ব্রিটিশ প্রেসিডেন্ট হন। তার সাহিত্য প্রতিভা ও বিশ্বস্বীকৃত। এই লোক অত্যন্ত বাকপটু ছিলেন।
বৃদ্ধ বয়সে একবার হাউস অব কমনস এ তিনি উপস্থিত। একজন এমপি বললেন, লোকে বলে বুড়ো হয়ে আজকাল ওর বোধশক্তি কমে গেছে।
চার্চিল একটু দূরে ছিলেন। তিনি শুনে সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠেন, লোকে এও বলে যে আজকাল উনি কানেও কম শুনেন।
চার্চিল ভালো বক্তৃতা দিতে পারতেন।
তার এক বন্ধু একদিন বলল, এই যে হাজার হাজার লোক তোমার বক্তৃতা শুনতে আসে, তোমার অহংকার হয় না?
চার্চিল উত্তরে বললেন, না। কারণ আমাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলানো হলে এর চেয়ে দশ গুণ বেশী দেখতে জড়ো হবে।
স্যামুয়েল জনসন। বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক। তিনি বেশী বিখ্যাত তার অভিধান রচনার জন্য।
তার সেই অভিধান প্রকাশিত হওয়ার কিছুদিন পর দুজন মহিলা তার কাছে সে বলেন, ডক্টর জনসন আপনার অভিধান খুব ভালো হয়েছে। বিশেষ করে আপনি আপনার অভিধানে কোন অশ্লীল শব্দ রাখেন নি।
জনসন বেশ অবাক হয়ে সাথে সাথেই বললেন, ও ! আপনারা তাহলে ওইরকম শব্দ আছে কি না খোঁজে দেখেছেন?
মহিলাদ্বয় বিব্রত হয়ে প্রসঙ্গ বদলাতে বাধ্য হন।
স্যামুয়েল জনসনকে নিয়ে আরেকটা গল্প। এক লোকের বিবাহিত জীবন অসুখী ছিল।
স্ত্রী মারা যাবার কিছুদিন পর দেখা গেল সে আবার বিয়ে করেছে। জনসন কে একজন এই খবরটা দিতেই তিনি বলে উঠেন, এটা হচ্ছে অভিজ্ঞতার উপর প্রত্যাশার বিজয়।
ড্রাইডেন একজন ইংরেজ কবি। ব্যাঙ্গাত্বক কবিতায় বিশেষ পারদর্শী এই লোকের স্ত্রীর অভিযোগ ছিল স্বামী শুধুই বই নিয়ে থাকেন, তার দিকে ঠিকমত নজর দেন না।
একদিন ড্রাইডেন বই পড়ছিলেন।
তার স্ত্রী বললেন, আপনি সারাদিন বই নিয়ে থাকেন। আমার মনে হয় আমি বই হলে ভাল হত। আপনার কাছাকাছি থাকা যেত।
ড্রাইডেন মুখ তুলে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন, তাহলে দয়া করে বর্ষপঞ্জি হও,সেক্ষেত্রে বছর বছর বদলাতে পারব।
উইলিয়াম আর্কিবল্ড স্পুনার ছিলেন পন্ডিত লোক।
তবে তার সমস্যা ছিল তিনি শব্দের অক্ষরের অবস্থান উল্টাপালটা করে ফেলতেন প্রায়ই। যেমন একবার রানী ভিক্টোরয়াকে “আওয়ার অল্ড কুইন” বলতে গিয়ে বলে ফেললেন “আওয়ার কুইয়ার অল্ড ডীণ”। ইংরেজি ভাষায় একটি শব্দ আছে তার নামে “স্পুনারিজম”। মানে ইচ্ছাকৃত বা ভুলবশত শব্দের অক্ষরগুলোর অবস্থান পরিবর্তনের ফলে যে মজার অর্থের সৃষ্টি হয় তাই স্পুনারিজম।
এই আর্কিবল্ড স্পুনারকে একবার দেখা গেল গ্রীনউইচের রাস্তায় উদভ্রান্তের মত ঘুরছেন।
তাকে জিজ্ঞেস করা হল, কি বিষয়?
তিনি বিড় বিড় করে জানালেন, দি ডাল ম্যান, গ্রীন উইচ ক্যাফেতে এক লোকের আসার কথা। কিন্তু ক্যাফেটাই খুজে পাচ্ছেন না।
লোকজন তখন তাকে বুঝিয়ে বলল, শব্দটা আসলে দি গ্রীন ম্যান, ডাল উইচ এ।
এডগার দেগা। ফরাসি চিত্রশিল্পী।
একবার তার ছবি নিলামে ভালো দামে বিক্রি হল।
দেগাকে একজন প্রশ্ন করল, এই রকম একটি ঘটনা দেখে আপনার মনে কী ধরনের অনুভূতি হয়?
দেগা বলেছিলেন, ঘোরদৌড়ের পর বিজয়ী ঘোড়ার জকি কে যখন পুরস্কার দেয়া হয় তখন ঘোড়ার মনে যেরকম অনুভূতি হয়, ঠিক সেরকম।
কাহিনী গুলোর মূল সুত্রঃ দি লিটল ব্রাউন বুক অব এনেকডেটিস। koকবির চৌধুরী আংশিক অনুবাদ করেছেন।
এছাড়া উইকিপিডিয়া তেঃ
গেটে
চার্চিল
স্যামুয়েল জনসন
জন ড্রাইডেন
স্পুনার
এডগার দেগা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।