আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছাগচিহ্ন টিউটোরিয়াল ২: ছাগপালনের সুবিধা অসুবিধা!

চতুর্মাত্রিক.কম (choturmatrik.com)

আগের পোস্টে আপনাদের সাথে একজন ছাগুকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি যিনি একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশিষ্ট রাজাকার ফজলুল কাদের চৌধুরির চরিত্রকে ধুয়ে মুছে সাফ করার চেষ্টা করেছিলেন। অতীতে তার মাঝে আরো ছোটখাট ছাগবৈশিষ্ট্য দেখা গিয়েছে। অধুনা তিনি একাত্তরে যুদ্ধশিশু নিয়ে অত্যন্ত জ্ঞানগর্ভ মতামত রাখেন। সেখানে তিনি দাবি করেন বীরাঙ্গনাদের সন্তান, যাঁরা পাকি-হানাদার, রাজাকারদের নির্যাতন, ধর্ষণের কারণে জন্মেছেন, তাঁরা নষ্টবীজ, খারাপ, হারামি ইত্যাদি। পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট এমন ছাগু (খেয়াল করুন, ছাগুর বিশিষ্টার্থে প্রয়োগ।

ছাগল ও ছাগু আলাদা প্রাণী বুঝায়)-এর কাজকর্ম অতিশয় নিন্দনীয়। বিরক্তি উদ্রেককারী। হীন। নোংরামিতে পূর্ণ। যাক।

আজকে তিনি সেই নোংরা পোস্টটি ড্রাফট করার কারণ বেশ দম্ভভরে বর্ণনা করছেন। শিরোনামে "কৈফিয়ৎ" লেখা থাকলেও পোস্টের ভেতরে যুদ্ধশিশুদের অবমাননাকারী একবারও ক্ষমা চাননি। বরং ইসলামের দোহাই তুলেছেন কোন তথ্যসূত্র ছাড়াই। আমরা জানি যুগে যুগে, একাত্তরের পর থেকেই হীন ছাগুর দল নিজেকে বাঁচাতে ইসলামের আশ্রয় নেয়। আমরা ছাগুর প্রতি সহানুভূতিশীল এবং ধর্মভীরু জাতি বলেই বারবার সেই ফাঁদে পা দেই।

যুদ্ধশিশুদের প্রতি অবমাননাকারী, বীরাঙ্গনাদের অসম্মানকারী কোন ধর্মের আড়াল নিয়েও রক্ষা পাওয়া উচিত নয়। এবারে আসি টিউটোরিয়াল নিয়ে। আজকে ভাবছিলাম কী লেখা যায়। মনে হলো ছাগপালনের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে লিখি। জনহিতকর প্রকল্প হাতে নিই।

প্রথমেই অসুবিধাঃ (যাতে আপনারা ছাগপালনে উৎসাহী না হয়ে উঠেন) ১। ছাগু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গোঁয়ার। গোয়ার্তুমি (Stubborn, গোআ+তুমি নহে) করার কারণে আপনার দেয়া কোনো লজিক, রেফারেন্স সে মানে না। উইকি থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের দলিলও তার কাছে নস্যি! ২। ছাগু সর্বভূক।

অন্যান্য বিষয়ে কিমাশ্চর্যম নির্বুদ্ধিতার ভান করলেও খাওনের বেলায় কোন বাছবিচার নাই। তখন সে আপনার ঘর-বাড়ি-দেশপ্রেম-স্বকীয়তা-কথা বলার স্বাধীনতা সবকিছু খেয়ে ফেলবে। এই সকল খাওয়া দাওয়া করার হাতিয়ার করবে ইসলাম ধর্মকে। ধর্মকে পূঁজি করে, ধর্মের সত্যকে টুইস্ট করে নানাবিধ ফতোয়া বানিয়ে আপনাকে ঠকাবে। কর্পোরেট যেমন আমাদের আবেগ নিয়ে খেলে, ছাগু তেমনি আমাদের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে খেলে।

৩। ছাগু বর্ণচোরা। তার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখুন, কী মায়াময় নিরীহ দৃষ্টি! মূলত এই কারণেই আমরা সহানুভূতিশীল হয়ে উঠি। আফটার-অল, পশুপ্রেম মহৎ! তবে এই চাহনি বেশিদিন মায়াময় থাকে না। ভুল করে হলেও আপনি একটা পর্যায়ে ছাগুর সাথে মিশে মিশে নিজের গায়েও তার বোঁটকা গন্ধটি ধারণ করবেন।

আপনার কাছে মনে হবে, একাত্তরে অনেক রাজাকার অনেক ভালো কাজ করেছে। মনে হবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে এখন কী লাভ? মনে হবে শিবিরের সকলেই ভালো মানুষ। মনে হবে গোআ একজন ভাষাসৈনিক, মইত্যা মহান! এই যে আপনার বদল ঘটে যাবে, আপনি একজন মানুষ থেকে ছাগুবান্ধবে পরিণত হবেন এটা প্রকৃতির ভারসাম্যের প্রতি ঝুঁকি। আপনারা জানেন, বিশ্ব এখন প্রাকৃতিক ভারসাম্য নিয়ে কতোটা উদ্বিগ্ন! আসুন, আমরা ছাগুমিশামিশি থামাই। এবারে আসি ছাগপালনের সুবিধাঃ ১।

এইটাও জীববৈচিত্র্যের ক্যারিসমা! আসলে সমাজে ভালোর পাশে খারাপ, মানুষের পাশে ছাগু থাকবেই। নিজেরা মানুষ থেকে অপর ছাগুদের দেখে শেখা যায় যে অমনটি হতে নেই! অন্ধকার না থাকলে যেমন আলোর গুরুত্ব বোঝা কঠিন, তেমনি ছাগু আমাদের সামনে "স্যাম্পল-নট-টু-বিকাম" হয়ে উজ্জ্বল হয়ে আছে। ২। যতোই মুখে অস্বীকার করি, ছাগু না থাকিলে ব্লগিংয়ের মজা কম। সরস কাব্য-গদ্য-প্রবন্ধ আর কাঁহাতক ভালো লাগে।

যতোদিন যুদ্ধাপরাধের বিচার না হচ্ছে, ছাগুশিবির-জামাত এবং ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ না হচ্ছে ততোদিন ছাগুরা ম্যাৎকার দিবেই। আশা করি, ততোদিন আমরা এভাবে বিনোদিত হইবো। ৩। ছাগু আমাদের একাত্তরের জামাতের মন-মানসিকতা বুঝতে সাহায্য করে। বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরে জন্মেছে।

তারা যেন ঠিকমত জানতে পারে, একাত্তরে জামাত কেমন ছিলো, জামাত কীভাবে মুক্তিবাহিনীর দামাল ছেলেগুলোকে পাকিদের হাতে তুলে দিতো হাসিমুখে, ধর্ষণ করতো নিরীহ নারীদের, লুঠ আর অগ্নিসংযোগ করতো গ্রামের পর গ্রাম সেগুলোর জ্বলন্ত নিদর্শন ছাগু। ছাগুরা মাঝে মাঝে এইসব কুৎসিত কাজকে ধুয়ে পরিষ্কার করতে যায়, সাফাই গাইতে যায়। তখনই সেটার মাঝে নারকীয়, অমানবিকতাটি ফুটে ওঠে। এর বেশি ভালো দিক খুঁজে পেলাম না। (ছাগুদের মতো হইলে অবশ্য আরো কয়েকটা পাইতাম নির্ঘাত!!) ==== সকলকে ধন্যবাদ!


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।