পরে বলবো
দনাজপুর সরকারী কলেজের দ্বিতীয়বর্ষের একজন ছাত্রী তার বন্ধুর সঙ্গে সাইবার ক্যাফের রুমে বসে গল্প করছিল। তাদের মধ্যে প্রেমের আলাপের এক পর্যায়ে দু’জন পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে। এ দৃশ্য সাইবার ক্যাফেতে গোপনে স্থাপন করা ক্যামেরায় বন্দি হয়ে যায়। এরপর ওই দৃশ্য পর্ণো ছবি আকারে মোবাইল ফোনের দোকানে বিক্রি করে দেয়া হয়। এ দৃশ্য মেমোরি কার্ডের মাধ্যমে লোড করে একজন আরেকজনের মোবাইল ফোনে পাঠাতে থাকে।
এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর মোবাইল ফোনে তার এক বান্ধবী এসএমএসের মাধ্যমে সাইবার ক্যাফের দৃশ্য পাঠায়। এ ছবি ওই ছাত্রী দেখে হতবাক। অভিযোগ পড়ে পুলিশে। এ রকম শত শত অভিযোগপত্র জমা পড়ে রয়েছে দিনাজপুর জেলার ১৩ থানার পুলিশদের কাছে। এক পর্যায়ে পুলিশ শহরের একটি মোবাইল মার্কেটে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ পর্ণো ছবির মেমোরি কার্ড উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, মোবাইল ফোনে পর্ণো ছবি পাঠানোর বিষয়টি তরুণ-তরুনীদের কাছে ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে। এ ধরনের অপরাধ কিশোর-তরুণ-তরুণীদের বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মেমোরি কার্ডে যেসব অশ্লীল দৃশ্য আদান-প্রদান করা হচ্ছে তা যদি ব্যবহারকারীদের অভিভাবক দেখে তাহলে তারা হতভম্ব হয়ে যাবেন। দিনাজপুর শিশু পার্কে প্রেমিক-প্রেমিকার একটি অশ্লীল দৃশ্য মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করে তা বাজারে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সঙ্গে আরেকজনের অশ্লীল সম্পর্কের দৃশ্যও ভিডিও করে মেমোরি কার্ডের মাধ্যমে ছাড়া হয়েছে।
মোবাইল ফোনের এক দোকানদার জানায়, মোবাইল ফোনের দোকানে পর্ণো ছবি ভিডিও ফুটেজের বেশিরভাগ ক্রেতাই তরুণ। কতগুলো ভিডিও ফুটেজ আছে যেগুলো খুবই পরিচিত। এগুলোর বেশ কিছু কোড নাম রয়েছে। যেমন-রমনা পার্ক, নর্থ সাউথ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চিটাগাং ইউনিভার্সিটি, কারমাইকেল কলেজ, রেইন ইত্যাদি নামে ভিডিও ফুটেজগুলো বিক্রি হয়। নতুন ভিডিও ফুটেজের খোঁজে অনেক তরুণ দোকানে আসে।
একেকটি ভিডিও ফুটেজ ১শ’ টাকা থেকে ২শ’ টাকায় বিক্রি করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথ ভিডিও ফুটেজ ৪ শ’ টাকায় বিক্রি হয়। পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ না করলে এ ধরনের পর্ণো ছবি পাঠানোর বিষয়টি রোধ করা সম্ভব নয়। কারণ অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার স্বার্থে এ ধরনের পর্ণো ছবির ভিডিও ফুটেজ বিক্রি করবে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২/১ দিন বন্ধ করা সম্ভব।
কিন্তু স্থায়ী কোন সমাধান সম্ভব নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন। এসব ব্যাপারে দিনাজপুর সরকারী কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. মাসুদুল হক বলেন, মোবাইল ফোনের মেমোরি কার্ডের মাধ্যমে ভিডিও ফুটেজ আদান-প্রদান ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এসব পর্ণো দৃশ্য বিক্রি বন্ধের জন্য মোবাইল ফোনের দোকানগুলোর ব্যাপারে একটি আইন করা প্রয়োজন। তরুণ প্রজন্মকে এর হাত থেকে রক্ষা করতে হলে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। View this link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।