আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুশায়া ঢাকা শীত :ভাপা পিঠা: পর্ব-২

বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d

শীত এখন আর নেই তেমন। একেবারেই শেষের দিকে। তবে এবার একটু হলেও বুঝেছি শীতের উপস্থিতিটা। একটু কাঁপুনি দিয়েই গেছে।

যদিও এই পোষ্টটা দিতে একটু দেরীই হয়ে গেলো। একবার ভাবেন তো, আপনি চাদর মুড়ি দিয়ে মাটির চুলার পাশে বসে আছেন, আর চুলার উপরে ভাপা পিঠা বানানোর বিশেষ মাটির পাতিল, তার ভিতরে গরম পানি টগবগ করে ফুটছে, আর তার উপরে ভাপে ভাপা পিঠা হচ্ছে, খড়ি পোড়া গন্ধ চারিদিকে, গরম পিঠা মুখের মধ্যে দিয়ে হা করে ভাপ বের করছেন। এমন দৃশ্য উপভোগ করেননি কত দিন? কেউ হয়ত অনেকদিন আবার কারো হয়ত সেই দিনগুলো অনেক দুরে ফেলে এসেছেন। যেখানে ফিরে যাওয়ার হয়ত আর কোন পথও নেই। আবার কেউ হয়ত চাইলেই ঝাঁপ দিয়ে চলে যেতে পারেন সেই মাটির কোলে।

স্থানভেদে এই ভাপা পিঠাকে “ধুপী” বলা হয়। ভিজিয়ে রাখা আতপ চাল ঢেঁকিতে ছাটার পর যে আটা বের হয় সেটা দিয়ে এই ভাপা পিঠা তৈরী করা হয়। কিন্তু যদি কলেছাঁটা আটা দিয়ে তৈরী করা হয় যে জন্য এর আসল স্বাদ পাওয়া যায় না। তৈরী প্রণালী বলার আর প্রয়োজন নেই। সবাই কম বেশী জানেন।

এই ভাপা পিঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো গুড়। পাটালী গুড় ব্যাবহার করা হয় এটাতে। গুড়ের ঝুড়ির একটা আবরণ দেয়া হয় পিঠার ভিতরে। যেটা স্বাদ বহুগুনে বাড়িয়ে তোলে। স্থানভেদে এই পিঠার সাইজ একেক রকম হয়।

আমি কোন কোন জায়গায় এই পিঠা একটি প্লেটের সমানও দেখেছি। তবে সেগুলোতে আমি গুড় দিতে দেখিনি। সেই পিঠা ঠান্ডা হবার পর খেতে দেখেছি অনেককে। তবে বর্তমান নগর সভ্যতায় ঘরে পিঠা বানানোর রেওয়াজ উঠে গেছে। ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই।

কারণ ওটা বানাতে যে সরঞ্জাম ও পরিবেশ প্রয়োজন সেটা জোগাড় করা মুশকিল। কিন্তু এখন পাড়ায় বা মহল্লায় মহিলারা রাস্তার ধারে এই পিঠার পসরা নিয়ে বসে। সেখানে ছোট পরিসরে পিঠা বানায় তারা। আর তাকে ঘিরে মানুষের পিঠা খাওয়ার আর কেনার ধুম পড়ে। যদিও পুরা ব্যাপারটা কর্মাশিয়াল আর তাই এটি মেকিতে পরিপূর্ণ।

আর তাই স্বাদটাও মেকি। অনেকটা "দুধের স্বাদ ঘোলে মিটানো"। শীতের সাথে পিঠার একটা সম্পর্কও আছে। আর তাই আমাদের সংস্কৃতিতে প্রতিবছর ঘুরে ঘুরে শীতের সাথে পিঠারও উৎসব শুরু হয় সব গ্রামেই। এটা আমাদের ঐতিহ্য।

এ ঐতিহ্য টিকে থাক যুগ যুগ ধরে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।