যেখানে বাঁধ সেখানেই বিপর্যয়। তাই বাঁধ মুক্ত জীবনের জন্য চাই বাঁধ মুক্ত পৃথিবী
গতকাল বিকেলে প্রথম যখন খবরটা পেলাম তখন বেশ মন খারাপ হলো। (সেই শিশু ঘড়িয়ালটি মারা গেছে বিস্তারিত ডেইলি স্টারের এই পাতায়) কারণ যতটা না এর সাথে জড়িয়ে থাকা কিছু স্মৃতি তার চেয়ে বেশি হচ্ছে একটি প্রজাতি পৃথিবী থেকে বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে- এই নষ্টালজিক ভাবনাটা কিছুতেই তাড়াতে পারছি নি মন থেকে। চোখের সামনে একটি প্রজাতি পৃথিবীতে চির দিনের জন্য হারিয়ে যেতে বসেছে অথচ এই পদ্মাতেই ছিল তার কত না বিচরন। জানি ঘড়িয়ালের বিলুপ্তির এই বিষয়টি আমাদের অনেকের কাছেই দুঃখবিলাসিতার মতো মনে হবে।
কিন্তু একবার ভাবুন তো আজকের এই ঘড়িয়ালের মতো মানুষ যদি পৃথিবীতে বিলুপ্তির হমকিতে পড়ে তাহলে আমাদের মনের অবস্থা কেমন হতো? অথবা আমরা কী করতাম? অথবা আমাদের করনীয় কী?
অনেকেই হযতো ভাবছেন কি হাস্যকর আর অবান্তর ভাবনা। সারা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে আছে ছ'শ কোটির বেশি মানুষ। আর তারা কিনা বিলুপ্তির হুমকিতে পড়বে? কিন্তু প্রকৃতি যেভাবে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে (আসলে দ্রুত) তাতে ভাবনাটি অমূলক নয়। আজ যেমন উন্নয়নশীল দেশ উন্নত দেশে পরিনত হতে আর উন্নত দেশ তাদের আরাম-আয়েশ আরও বাড়াতে যেভাবে প্রকৃতির উপর অত্যাচার করে যাচ্ছে তা প্রকৃতি কতটা মেনে নেবে বা আদৌও মেনে নেবে কি না তাই এক বিরাট প্রশ্নবোধক চিহ্ন। আমরা যেমন ঘড়িযালের বিলুপ্তিতে নড়েচড়ে ভাবছি না (ভাবনাটা এরকম- আর যাই হোক আমাদের তো আর কোন ক্ষতি হচ্ছে না বা কি যায় আসে ঘড়িয়ালের মতো প্রাণী পুথিবীতে থাকা বা না থাকায়!)।
তেমনি উন্নত আর উন্নয়শীল দেশও ভাবছে ডুবলে ডুবুক আর পানির অভাবে মরুক মালদ্বীপ বা বাংলাদেশ আমাদের কি? আমরা তো আর মরছি না। আর তেমনটি হলেও আমাদের আছে উন্নত প্রযুক্তি একটা সমাধান হবেই হবে। কিন্তু আজ কে না জানে পৃথিবী দাপিয়ে বেড়ানো অতিকায় ডায়নোসর বিলুপ্ত হয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে কত জাতি যার অনেকই আজও অজানা।
তাই অনুন্নত, উন্নয়নশীল আর উন্নত দেশ যে যে দৃষ্টিকোন থেকেই নিজেকে নিরাপদ ভাবুক না কেন ঘড়িয়ালের এই প্রায় বিলুপ্তি হয়ে যাওয়ার বিষয় অবশ্যই একটি হলুদ সংকেত।
কারণ এটি প্রকৃতির উপর সীমাহীন অত্যাচারেরই একটি অনিবার্য ফলাফল। আজ ঘড়িয়াল বিলুপ্তির পথে কিন্তু তা মানুষের জন্য অবশ্যই একটি লাল সংকেত! তবুও যদি সাধু সাবধান না হয় তবে একটা সময় পর আর ফেরার সময় থাকেব কি? কে জানে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।