১. ভীষণ নার্ভাস ছিলাম...: সাপ্তাহিক ২০০০, ৩১ মার্চ ২০০৬
... আমি ভীষণ অর্ন্তমুখী একজন মানুষ। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর, কথা বলা- এসব চিন্তাও করতে পারি না। টোকন একদিন বলল, ‘ধ্রুব দা আপনার বাসায় শুটিং করব। ’ আমি রাজি হলাম। তখনো জানতাম না আমাকে অভিনয় করতে হবে।
শুটিংয়ের এক পর্যায়ে টোকন বলল, ‘আমাকে দু-একটা সংলাপ দিতে হবে। ’ আসলে আমি ক্যামেরার সামনে আগে কখনোই যাইনি। আমি একজন লুকিয়ে থাকা মানুষ। তাই ভীষণ নার্ভাস ছিলাম। ব্ল্যাকআউটে অভিনয় প্রসঙ্গে এইটুকুই বলতে পারি।
তবে ছবি নিয়ে টোকন কি করছে না করছে, সব সময় খোঁজ রেখেছি...
_ধ্র“ব এষ : প্রচ্ছদ শিল্পী, লেখক ও অভিনেতা, ব্ল্যাকআউট
২. মনে নেই, মনে পড়ে... : কালের খেয়া, সমকাল সাহিত্য সাময়িকী, ১০ নভেম্বর ২০০৯
ব্ল্যাকআউট’এর গল্প শুরুটাও স্মৃতভ্রিমরে। কবি মাদলরে শহুরে ভোরে নাক গলায় গ্রামীন শশৈবরে কুয়াশার ঘোর লাগা ভোররে স্মৃত। ি মায়রে বাগ না মনেে লুকয়িে সগিারটে ফোঁকা কশিোর পরনিামে যাকে নাকে খৎ দতিে হয় কম্বিা সইে সদ্যতরুনী যে তাঁকে প্রথম কশৈোররে সাঁকো পার করয়িে তরুণ করে দয়িছেলি- এইসব স্বপ্নস্মৃতরি ধাওয়া খয়েে ঘটমান বাস্তবরে ছাইদানি উল্টে দয়িে মাদলরে সকাল শুরু হয় শহররে চলিকেোঠায়, বলো হয়তো তখন বারোটা বজেে বশি মনিটি। বন্ধু রাফি তখন প্রমেে পড়ছেে নগররে পলেব আভজিাত্যরে সীমাতইে বড়েে উঠা, বড় হলে মডলে হতে চায় এমন এক অনন্দ্যি সুন্দরী- মটি’ির। সময়রে সবুজ ডাইনি যখন কবি মাদলরে কাঁধে প্রতেরে মত সওয়ার হয়, নঃিসঙ্গ মুর্হূতগুলো যখন এক অজানা কারণে র্দীঘ থকেে র্দীঘতর হতে থাকে তখন বন্ধুর এই প্রমে মাদলরে রক্তমাংশরেও কোথায় কোথায় যনে তীব্র হ্রষো ছড়ায়... অতঃপর আত্মরততিইে ঘটে আত্মসর্মপন, নজিকেে নজিইে ভঙ্গেে ফলেে বহ্বিল হয়ে থাকা।
অন্যদকিে রাফওি লাল ঘোর লাগা চোখে এঁকে ফলেতে চায় মটিকি,ে নজিরে ক্যানভাসে পতেে চায় কল্পনার রঙে গুলয়ি। ে রাফি মটিকিে নয়িে স্বপ্ন দখেে আর মটিি দখেে মডলে হওয়ার স্বপ্ন। মটিি রাফরি মডলে হয় বটে কন্তিু তাঁর কল্পনার রঙরে সাথে মশি খায় না। কারণ সে শল্পি কলা না জানলওে মডলে হওয়ার রুলস অফ দি গমে জান,ে অ্যাডফল্মিরে মডলে হয়ে শুট্যংিয়ে পাড়ি জমায় বদিশে। ে ফানুস ভসেে গলেে পড়ে রাফওি ফরেে তাদরে আসমানদাররি চলিকেোঠায়, মটিওি মাদলরে শালমলীর মত রাফরি মনে না থাকার অর্ন্তগত হয়ে যায়, কখনবা কবেলমাত্র মনে পড়াতইে ফরিে আস।
ে
গল্পটি সমাজরে এই গোত্ররে বাসন্দিাদরে, এমনকি যারা তাদরে খানকিটা হলওে জাননে তাদরে কাছওে একবোরইে আটপৌরে একটি গল্প। তাহলে ‘ব্ল্যাকআউট’ের মাহত্ম ক?ি সটো লখিে বোঝানো গলেে টোকন নজিইে হয়তো ফল্মি না বানয়িে লখিে ছাপতে দতিনে গল্পট। ি
বখতিয়ার আহমেদ : সহকারী অধ্যাপক, নৃতত্ত্ব বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
বর্তমানে গবেষণা সূত্রে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন।
৩. ব্ল্যাকআউট : একটি আসন্নতার দরজা : সংবাদ সাহিত্য সাময়িকী, ১০ নভেম্বর ২০০৬
... ব্ল্যাকআউট সিনেমাটি আমি দেখেছি মনোযোগের শরীরে কোনো যতিচিন্থ না বসিয়েই।
একটা গেটলক বাসের মতো কোথাও না থেমে আমি ছুঁয়ে গেছি গন্তব্যের সবটুকু রাস্তা। আর এইভাবে ব্ল্যাকআউটকে অনুসরণ করার ফলে আমার মনে হয়েছে এটা এমন এক মানুষের গল্প, যার সত্ত্বা দুইভাগে বিভক্ত। সিনেমায় তারা মুর্ত হয়েছে দুই বন্ধুর চেহারায়। একজন বহির্মুখি, অন্যজন অর্ন্তজগতের। চোখের স¤প্রসারণ যে দুরবীণ এবং অনুবীণ- একই নলে যেন তারা সংযোজিত হয়েছে।
এবং এখানে তারা অন্যদের দেখে না_ দেখে নিজেদের। এ ওকে দেখে আর ও একে। আর এই দেখার ভিতর দিয়েই ক্রমশ তারা আবিস্কার করে এমন এক যৌথতাকে যা সম্পূর্ণ হতে সাহায্য করে। এরপর শুরু হয় একের দিকে অন্যের যাত্রা। সিনেমার শেষে সেই যাত্রারম্ভের প্রথম দৃশ্যটিকে দেখিয়েছেন টোকন ঠাকুর।
সাহিত্যে উপন্যাসগুলি ঠিক এই কাজটি করে। নিজের অন্তিমের ভিতর দিয়ে উন্মুক্ত করে দিয়ে যায় এক আসন্নতার দরজা...
অমিতাফ পাল : কবি, ছোটগল্পকার ও অনুবাদক, একটি স্যাটেলাইট চ্যানেলে নিউজরুম এডিটর হিসেবে কর্মরত
৪. কবিতা ও চিত্রের মেলবন্ধন ক্যামেরার মধ্যস্থতায় : ভোরের কাগজ সাহিত্য সাময়িকী, ১০ নভেম্বর ২০০৯
সিনেমাতেই বোধহয় কবিতা ও চিত্রের মেলবন্ধন সম্ভব ক্যামেরার মধ্যস্থতায়। ছবির আখ্যানগুলো গড়ে উঠেছে একজন শিল্পী ও একজন কবির জীবনের নানা স্তরগুলো নিয়ে। ছবির মূল চরিত্র দুটি একজন শিল্পী ও একজন কবি। কবিতা ও শিল্প জগতের নানা বিষয়গুলো ঘুরেফিরে এসেছে।
এসেছে বোধের জায়গাগুলো। অনুভুতির স্তরগুলো ভেঙে ভেঙে কীভাবে শিল্প হয়ে ওঠে, সেই দ্বন্দ্বগুলো। কীভাবে যন্ত্রণার অনলে দগ্ধ হয়ে পুড়ে পুড়ে ভেঙেচুরে যায় সবকিছু।
নতুন প্রজন্মের নির্মাতারা অনেকেই ভালো ছবি করছে। নতুন চিন্তার সমন্বয় হচ্ছে, ওই েেত্র আমি মনে করি টোকনও তার নিজস্ব আসন করে নিতে পারবে।
তবে টোকনের সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে, ও স্রোতের বিপরীতে যেতে পারে। শিল্পের ব্যাপার ও আপসরফায় বিশ্বাসী নয়। টোকনের পথ চলা পায়ে পায়ে এগিয়ে যাক।
রশীদ আমিন : ছাপচিত্র ও তৈলচিত্রী, অধ্যাপক, ফাইন আর্ট ডিপার্টমেন্ট, ইউডা, ঢাকা। বর্তমানে চিত্রকলায় উচ্চতর গবেষণার কাজে বেইজিং বসবাস করছেন।
৫. মনে তার নিত্য আসা যাওয়া: কালের খেয়া, সমকাল সাহিত্য সাময়িকী, ১০ নভেম্বর ২০০৯
ব্ল্যাকআউট-এ যে গল্পটি আছে, তা এক অর্থে সরল। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে এটা নিটোল গল্পের আকারে তা উপস্থাপিত হয়নি। স্মৃতি, স্বপ্নাকাক্সা, মৃতস্বপ্ন, বিষাদ, মাস্টারবেশন, কবিতা, চিত্রকলা, সঙ্গীত, মদ, গাঁজা, সমকালীন বাস্তব চরিত্র যথা ধ্র“ব এষ, কফিল আহমেদ- সব মিলে ব্ল্যাকআউট আমাদের বেড়ে ওঠারই গল্প। আমরা তার মধ্যেই এখনো বাস করছি। ফলে পর্দায় দেখা এ গল্পটির পেছনে বাঁক বও চোরা টানও কম নেই।
আমি গল্পটাকে ভেতর থেকে দেখছি। যিনি বাইরে থেকে দেখবেন, তার হয়তো অন্যরকম লাগবে।
একজন অতীতে, একজন বর্তমানে আর একজন ভবিষ্যতে বাস করে। মাদল যতোই বলুক কিচ্ছু মনে নেই; কিন্তু সবই মনে আছে। মন অধীন নয়, সে নিষেধ শোনে না।
জাফর আহমদ রাশেদ : কবি ও একটি জাতীয় দৈনিকের সাহিত্য সাময়িকী সম্পাদক
৬. মনে আছে-ব্ল্যাকআউট
ইতিবাচক নাকি নেতিবাচক দিক সেটা ব্যক্তিসাপে ব্যাপার, তবে মনে হয়েছে ব্ল্যাকআউট আমাদের ভেতর অস্থিরতাই তৈরী করে, প্রশান্তি নয়। কাজেই যারা তথাকথিতভাবে বিনোদিত হতে কিংবা ‘শান্তি লাভ করতে’ ফিল্মটি দেখতে বসবেন তাদের বাসনা কিন্তু অপূর্ণই থেকে যাবে। বরং তারা নড়েচড়ে বসতে পারেন, মানে ‘অস্থির’ হতে পারেন। এই অস্থিরতা হয়তো মূল চরিত্র দুটির ‘অসাধারণ’ জীবন যাপনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া থেকে, পারস্পরিক সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকে, অনিশ্চয়তা, অপারগতা, ব্যর্থতা, আর অবদমিত কামনার অসহায়ত্ব থেকে উৎসারিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে দর্শকের ভেতরে। টোকন ঠাকুরকে যারা চেনেন তারা জানেন তিনি একাধারে দুই শিল্পী-কবি ও চিত্রকর।
এ থেকে মনে হতে পারে মাদল (কবি) ও রাফি (চিত্রকর) বুঝি টোকনেরই খণ্ডিত দুই শিল্পীসত্তা, এবং সেই অর্থে ব্ল্যাকআউট তাঁর আÍজৈবনিক ফিল্ম। হতে পারে। হলে কোনো তিও নাই। কিন্তু এখানে তৃতীয় একটি মাত্রা যুক্ত হয়েছে। তা হলো টোকন ঠাকুরের ফিল্মমেকার হিসাবে আÍপ্রকাশ।
হয়তো যা তাঁর কবিতা ও চিত্রকর্মের মধ্য দিয়ে বলা সম্ভব হয়নি, তা-ই প্রকাশ করেছেন এই ফিল্মের মাধ্যমে। তাই আমি পরিচালকের এইসব ব্যক্তিতথ্য ভুলে গিয়ে কেবল একজন ফিল্মমেকারের কাজ হিসাবেই ফিল্মটিকে বিচার করার পপাতি। তথাকথিত ব্যবসা-সফল ও জনপ্রিয় সিনেমার তালিকায় যে ব্ল্যাকআউটকে পাওয়া যাবে না তা হয়তো টোকনও জানেন। তবে তাঁর অকপট সাহসী উপস্থাপনার জন্য এই ফিল্মটি বাংলাদেশের সিনেমায় ‘অন্যরকম কাজ’ হিসাবেই চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
ফিরোজ এহ্তেশাম : কবি ও সাংবাদিক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।