আজ থেকে প্রায় ৮ বছর আগের কথা যেটি আমার মনকে এখন ও দোলা দেয় এবং আমাকে ভাবায় সেই কাহিনিই এখন বর্ননা করব।
তখন আমি সপ্তম শ্রেনী থেকে অষ্টম শ্রেনীতে উঠার জন্য পরিক্ষা শেষ করেছিলাম। তখন পড়াশুনার কোন চাপ ছিলনা এবং আমি নানি বাড়িতে ছিলাম
একদিন আমি এবং আমার মামা একসঙ্গে ফুটবল খেলা দেখতে আমাদের পার্সবর্তি গ্রাম চাকরাইল যাচ্ছিলাম। আমার নানা বাড়ি থেকে চাকরাইল গ্রাম এর দুরত্ব ছিল প্রায় ৩ কিলোমিটার। ভাল কোন রাস্তা ছিলনা তাই চিকন রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছিলাম।
পথের মাজখানে একটি গভির কুপ ছিল,কুপের নিচ দিকে তাকাইলে ভয়ে গায়ে কাটা দিত। সেইদিন একটি কুকুর সেই গভির কুপে
পরে গিয়েছিল। কুকুরটি ভিতরে খুব আর্তনাদ করতেছিল তাই আমি এবং আমার মামা সেই কুপের দিকে দৌড় দিলাম। কিন্তু কি করব বুজতে পারতেছিলামনা। আশেপাশে খেয়াল করলাম দূরে কয়েকটি গরু বাধা দেখতে পেলাম তাই সেই দিকে দৌড় দিলাম।
সেখান থেকে গরুগুলোকে মুত্ত করে দড়ি নিয়ে ফিরে আসতে আমার প্রায় ৪০ মিনিট সময় লেগেছিল আর এই দিকে বেছারা কুকুরের অবস্থা নাজেহাল। আমি এবং আমার মামা সেই দড়িগুলো গিট দিয়ে অনেক লম্বা করলাম। একসময় আমরা কুপের মধ্যে দড়ি ফেলে দিলাম। কিন্তু সেটি কুকুরের কাছে পৌছালনা আর ৪-৫ হাত হলেই সেটি কুকুরের কাছে পৌছাবে। কি করব বুজতে পারছিলামনা হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি আসলো ।
আমরা আমাদের শার্ট খুলে ফেললাম এবং দড়ির সাথে গিট দিলাম । সেটি কুকুরের দূরুত্বে পৌছাতে পারলো। কুকুরটি বুজতে পারল এবং দড়িতে কামড় দিয়ে দিল। তারপর আমরা টেনে কুকুরটিকে উপরে উঠালাম। কুকুরটি মাটিতে শুয়ে পড়লো তারপর উঠে দাড়িয়ে আমাদের একেবারে নিকটে চলে আসতেছিল।
প্রথমে আমার ভয় পাচ্ছিল কিন্তু পরে দেখলাম কুকুরটি ধীরে ধীরে মামার পায়ের কাছে এসে মামার পা চাটতেছিল এবং পরে আমার পা চাটলো। তারপরে গায়ে একটা ঝারা দিয়ে চলে গেল। বুজলাম কুকুরটি আমাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ থেকেই আমাদের পা চেটেছিল। এখনো কুকুরটির সেই অসহায় চাহনির কথা আমার মনে দাগ কেটে আছে। সেইদিন আমাদের আর ফুটবল খেলা দেখা হলনা।
কিন্তু মনে একটি শান্তি পাচ্ছিলাম একটি জীবন বাচাইতে পারছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।