আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প‌্যারিসে বিজয় দিবস উদযাপন...

আমি তোমার মনের ভেতর একবার ঘুরে আসতে চাই, আমায় কতটা ভালবাসো সেই কথাটা জানতে চাই..
ফ্রান্সে হাড় কাপাঁনো শীত এবং শত ব্যস্হতাকে উপেক্ষা করে প্রবাসী বাংলাদেশীরা পালন করল বিজয়মেলা। বিজয়ের মাসের প্রথম অনুষ্ঠানটি আমরা আয়োজন করেছি উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, ফ্রান্স শাখার উদ্যোগে। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে: মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ডকুমেন্টরি ফরাসী ভাষায় অনুবাদ করে প্রদর্শিত হয়। ভিডিও চিত্রটিতে ভারত ভাগ, ৫২'র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পূর্ব বাংলার রাজনীতি, প্রবাসী সরকারের দিনগুলো, যুদ্ধের ভয়াবহতা, শেয়াল কুকুরের টেনে খাওয়া লাশের দৃশ্য, ৭১ এ বাঙ্গালী জাতির উপর নির্মম-ভয়াবহ অত্যাচার দেখে অনেক দর্শকের অশ্রু সিক্ত হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে: মুক্ত আলোচনা।

"মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল শক্তির ঐক্য গড়তে এগিয়ে আসুন"- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আয়েজিত এই উৎসবে স্বাধীনতা বিরোধী সকল শক্তিকে প্রতিহত করার তাগিদ এসেছে, এসেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার আহবান। উপস্হিত ছিলেন ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদুত এনামুল কবির, অভারভিলিয়ের মেয়র মিঃ জ্যাক সালভাতর, ফ্রান্সে বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন ব্যক্তি, এটিএন বাংলা, চ্যানেল এস, বাংলা টিভির সাংবাদিক এবং ফরাসী দর্শক। বাংলাদেশী বই, নকশীকাঁথা, দেশীয় খাবারের স্টল। মুক্তিযুদ্ধের খন্ডচিত্র নিয়ে প্রদর্শনী। তৃতীয় পর্বে: সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে সমবেত কন্ঠে 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি'.... উপস্হিত সবাই তখন দাড়িয়ে দেশের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

এরপর একে-একে উদীচী'র শিল্পীরা গাইতে থাকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ভিত্তিক গানগুলো যা মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে গোটা বাঙ্গালী জাতিকে উজ্জীবিত করেছিল সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত থাকতে। সেই সমস্হ গান আজও যেমন মানুষের শরীরের লোমকে শিহরিত করে তেমনি স্বরণ করিয়ে দেয় মুক্তিযুদ্ধ দিনের বাঙ্গালীর আন্তরিক এবং অন্তস্হলের অকুত আকুতিকে যা সম্ভব করেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম। যুদ্ধের সময় পাকিস্হানীরা এক মহিলাকে ধরে নিয়ে গন ধর্ষন করে, সেই মানষিক ভারসাম্যহীন ভূমিকায় প্রদর্শিত মর্মস্পর্শী নাটিকার দৃশ্য। অনুষ্ঠান শেষ হয়: 'সবকটা জানালা খুলে দাওনা' গানটি এবং স্হানীয় শিল্পীর এই নৃত্যের মাধ্যমে। বিদেশে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে এরকম অনুষ্ঠান আয়োজন করা কঠিন।

দুই মাস ধরে প্রত্যেক রবিবার রিহার্সেল সহ প্রস্তুতি হয়েছিল। এই বিজয় উৎসবে ফ্রান্সের বুকে যেন জেগে উঠেছিল এক টুকরো বাংলাদেশ। আমরা যারা এতদিন বড়দের কাছ থেকে স্বাধীনতার গল্প শুনে এসেছি এবার তারা যুদ্ধভিত্তিক এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেখে নিল স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের এক ঝলক। বিজয়ের মাসে প‌্যারিসে উদীচীর এই আয়োজন ছাড়াও বাংলাদেশ দূতাবাস ১৬ ই ডিসেম্বর পতাকা উত্তোলন, সংক্ষিপ্ত আলোচনা এবং রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান পালিত হয়েছে।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।