আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যারা পরকালকে বিশ্বাস করেন তাদের জন্যঃলোক দেখানো আমলের পরিনাম

আমি আমার স্বল্প জ্ঞান থেকে আপনাদেরকে কিছু শেয়ার করতে চাই এবং আপনাদের কাছ থেকে মূল্যবান কিছু নিতে চাই।

"বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। সেদিন কি খুব বেশী দূরে, যেদিন অবনত মস্তকে নগ্ন পায়ে মহান রব্বুল আ"লামিনের সামনে আমাদের সকলকে দাড়াতে হবে? কি হবে সেদিন? যারাআমরা বিশ্বাস করি তারা সকলেই জানি সেদিন হবে আল্লাহর চুড়ান্ত ফয়সালা। আমরা এটা কি জানি আল্লাহ রব্বুল আ"লামিন সেদিন কাদের দিয়ে তাঁর ফয়সালা শুরু করবেন ? তাহলে আসুন সহীহ হাদীসের আলোকে আমরা তা জেনে নেই। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হ"তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুল (সঃ) বলেছেন , ক্বিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে ব্যক্তিকে বিচারের জন্য পেশ করা হবে , সে হবে একজন (ধর্মযুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী) শহীদ।

তাকে আল্লাহর এজলাসে উপস্হিত করা হবে। অতঃপর আল্লাহ পাক তাকে (দুনিয়াতে প্রদত্ত) নে'য়ামত সমূহের কথা প্রথমে স্মরন করিয়ে দিবেন। আর সেও তা স্মরন করবে। এরপর আল্লাহ তা'য়ালা তাকে জিজ্ঞেস করবেন, এতসব নে'য়ামতের বিনিময়ে তুমি কি আমল করেছো? উত্তরে সে বলবে, আমি তোমার সন্তুষ্টির জন্য (কাফেরদের সাথে) লড়াই করেছি। এমনকি শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়েছি।

তখন আল্লাহ বলবেন ,তুমি মিথ্যে বলছো। বরং তুমি এই উদ্দেশ্যে লড়াই করেছো, যেন তোমাকে বীর- বাহাদুর বলা হয়। আর তোমার অভিপ্রায় অনুসারে দুনিয়াতে তা তোমাকে বলা হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে আদেশ দেওয়া হবে। তখন তাকে উপুড় করে টানা-হেচড়া করতে করতে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

অতঃপর সেই ব্যক্তিকে বিচারের সামনে উপস্হিত করা হবে, যে নিজে দ্বীনি ইলম শিক্ষা করেছে এবং অপরকেও শিক্ষা দিয়েছে। আর পবিত্র কুরআন অধ্যায়ন করেছে (এবং অপরকেও শিক্ষা দিয়েছে)। তাকে আল্লাহ পাকের দরবারে হাযির করা হবে। প্রথমে তাকে নে'য়ামত সমূহের কথা স্মরন করিয়ে দিবেন এবং সেও উহা স্মরন করবে। অতঃপর আল্লাহ তা'য়ালা তাকে জিজ্ঞেস করবেন, এই সমস্ত নে'য়ামতের শুকরিয়া জ্ঞাপনের জন্য তুমি কি আমল করেছ? উত্তরে সে বলবে, আমি নিজে ইলম শিক্ষা গ্রহন করেছি এবং অপরকেও শিক্ষা দান করেছি।

তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছো । আমার সন্তুষ্টির জন্য নয়, বরং তুমি এজন্য ইলম শিক্ষা করেছ , যেন তোমাকে বিদ্বান বলা হয় এবং কুরআন অধ্যায়ন করেছ, যাতে তোমাকে ক্বারী বলা হয়। আর তোমার অভিপ্রায় অনুসারে তোমাকে বিদ্বান ও ক্বারী বলাও হয়েছে। অতঃপর তার সম্পর্কে নির্দেশ দেওয়া হবে। সুতরাং তাকে উপুড় করে টানতে টানতে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

অতঃপরএমন ব্যক্তিকে বিচারের জন্য আল্লাহর দরবারে উপস্হিত করা হবে, যাকে আল্লাহ তা'য়ালা বিপুল ধন-সম্পদ দান করে বিত্ত্ববান করেছিলেন। তাকে আল্লাহ তা'য়ালা প্রথমে প্রদত্ত নে'য়ামত সমূহের কথা স্মরন করিয়ে দিবেন। আর তখন সে সমস্ত নে'য়ামতের কথা অকপটে স্বীকার করবে। অতঃপর তাকে জিজ্ঞেস করবেন, এই সমস্ত নে'য়ামতের শুকরিয়ায় তুমি কি আমল করেছ? উত্তরে সে বলবে, যে সমস্ত ক্ষেত্রে ধন-সম্পদ ব্যয় করলে তুমি সন্তুষ্ট হবে এমন একটি পথও আমি হাতছাড়া করিনি। তোমার সন্তুষ্টির জন্য উহার সব কটিতেই আমি ধন-সম্পদ ব্যয় করেছি।

আল্লাহ তা'য়ালা তখন বলবেন ,তুমি মিথ্যা বলছ। আমার সন্তুষ্টির জন্য নয়, বরং তুমি এই উদ্দেশ্যে তা করেছ , যাতে তোমাকে বলা হয় যে,'সে একজন দানবীর'। সুতরাং (তোমার অভিপ্রায় অনুসারে দুনিয়াতে) তোমাকে 'দানবীর' বলা হয়েছে। অতঃপর তার সম্পর্কে নির্দেশ দেওয়া হবে। সুতরাং নির্দেশ মোতাবেক তাকে উপুড় করে টানতে টানতে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

(মুসলিম, মেশকাত-আলবানী 'কিতাবুল ইলম' হা/২০৫)। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত উপরোক্ত হাদীসটি থেকে সহজেই অনুমান করা যায় যে, লোক দেখানো আমলের কী ভয়াবহ পরিনতি। কাজেই এখন থেকেই আমাদের নিয়তকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। প্রতিটি কাজ একমাত্র বিশ্বপ্রভু আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির জন্যই করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে সে ত্ওফিক দিন- আমীন!!


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।