জলের অহং
গল্প স্বল্প: টিশপ
ছোট্ট কফিশপ। ঠিক ডরমেটরির পাশেই। বিকেল হলেই ভীড় বাড়ে।
নানা লোকজন , ভিন্ন দেশী , নানা বয়সী। আমরা প্রায় যাই ওখানটায় নমিতাদির সাথে ।
কথা হচ্ছিল রবীন্দ্রনাথ নিয়ে । স্বাতী আড্ডায় বসলে সব ভুলে যায়। বিশেষ করে টিনার কথা ! দিব্যি বাংলায় কথা বলতে শুরু করে। টিনা গ্রীক মেয়ে। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে স্বাতীর দিকে ! তবে ওর যথেষ্ট অগ্রহ আছে বাংলা শেখার ! টুকটাক শব্দ শিখেছেও মেয়েটা ।
কেক, মাফিন এসব আমার পছন্দ নয়। শুধু কফি খেয়ে যাচ্ছি। টিনার দুটো মাফিন খাওয়া শেষ। নমিতাদি শাদা শালটা গায়ে জড়িয়ে নিয়ে বললেন ....এই শীতে তেতো কফি আর ভাল লাগছেনা রে ! এই দিকেতো আর কোন দোকান টোকানোতো নেই ! ... একটা 'চায়ের দোকান' দিলে কেমন হয় ? তোরা আছিস নাকি আমার সাথে !
' ...পাগল , সেটা চালাবে কে শুনি ?' স্বাতীর চটপট উত্তর !
টিনা এক কথায় রাজি , 'আই ইউল বি ঊইথ ইউ নামিতা ...গো ফোর ইট। '
'নাহ্ আমার সময় নেই ! পড়াশুনার এমনিতেই যা অবস্থা !' আমি বললাম।
'আরে শোন , প্রতিদিন তোদের থাকতে হবে না। শুধু উইকেন্ডে আসবি। আমারতো আর তোদের মত পড়াশুনা নেই। আমি মেনেজ করে নেব। ' নমিতাদি মনের আনন্দে বলে গেলেন।
আচ্ছা নমিতাদি , তোমার হঠাৎ করে এই চায়ের দোকানের শখ হলো কেন বলোতো ?
আড্ডায় বসে চা , সিঙ্গারা খেতে না পারলে কি ভাল লাগে বল ?
'তাই বলে নিজেই দোকান দিয়ে.....! তোমার দোকানের কাষ্টমার পাবে কোথায় ? তোমার চা সিঙ্গারা খেতে কে আর আসবে বলো এ দেশে ?'
শাড়িপরা নমিতাদির হাতে চায়ের কাপ ... মিষ্টি হাসিতে অতিথি আপ্যায়ন ....আমাদের বিরামহীন আড্ডা... এরি মাঝে বেজে উঠবে রবীন্দ্রসংগীত --- আহা ....
স্বপ্নে বিভোর নমিতাদিকে সেদিন বাড়ি পর্যন্ত পৌছে দিয়ে আমরা তিনজন ডর্মে ফিরলাম।
পরদিন সকালে ফিজিক্স ক্লাসে ঢুকেছি কেবল।
'টিশপ , সাউন্ডস্ গুড ! হাউ সুন ইউ উইল স্টার্ট ? '
স্বাতী, টিনা আর আমাকে অবাক করে দিয়ে আমাদের বিলেতি টিচার মিটিমিটি হাসে !
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।