আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভিজিএফ চাল বিতরণে ব্যাপক দলীয়করণ ও অনিয়মের অভিযোগ

বড়াইগ্রাম(নাটোর) উপজেলার সমস্যা সম্ভাবনা নিয়ে এই ব্লগে আলোচনা করা হবে। বেশী করে নিমগাছ লাগান, আপনার পরিবেশ ভাল থাকবে।

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দুস্থ মানুষদের জন্য সরকারের দেয়া ভিজিএফ চাল বিতরণে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় ব্যাপক দলীয়করণ ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পরিবর্তে সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা তালিকা করায় প্রকৃত দুস্থরা চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এদিকে, তালিকা করা নিয়ে খোদ আওয়ামীলীগ নেতাদের মধ্যে ঐক্যমত না হওয়ায় কোথাও কোথাও চাল না পেয়ে দরিদ্র অসহায় মানুষেরা খালি হাতে বাড়ি ফিরে গেছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বড়াইগ্রাম উপজেলার ২ টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে মোট ২৮ হাজার ৮৫০ টি দুস্থ পরিবারের মধ্যে ১০ কেজি হারে বন্টনের জন্য মোট ২৮৮.৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। নিয়মানুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তালিকা করার কথা থাকলেও তালিকা করেছেন স্থানীয় সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা। দলীয় নেতাকর্মীরা তালিকা করার ক্ষেত্রে কিছু দুস্থ মানুষের নাম রেখে অবশিষ্টগুলো বেছে বেছে দলীয় নেতাকর্মী, নির্বাচনী কর্মী ও তাদের অনুসারীদের নাম তালিকাভূক্ত করেছেন। এমনকি তালিকায় ভিজিডি, বিধবা ও বয়স্কভাতার কার্ডধারী ব্যক্তি, একই পরিবারের দুই ভাই, পিতা-পুত্র, ৫/৭ বিঘা জমির মালিক, এমনকি বিদেশে চাকুরী করে এমন পরিবারকেও শুধু দলীয় পরিচয়ের কারণে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। চাল বিতরণের নির্দিষ্ট দিনেও এসব নেতারা ইউনিয়ন পরিষদে এসে নিজ হাতে বিতরণ কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন।

ফলে ভিজিএফ বিতরণের পুরো কর্মকান্ডে নির্বাচিত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান-মেম্বাররা অসহায় হয়ে পড়েছেন। এমনকি কোন কোন ইউনিয়নে চাল বিতরণকারী নেতারা একই ব্যক্তির মাধ্যমে ৫/৭ জনের চাল উঠিয়ে অবশিষ্টগুলো নিজেরা নিয়ে গেছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মেম্বার জানিয়েছেন। এদিকে, বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের জন্য ৩৩১ টি কার্ড বরাদ্দ দেয়া হলে স্থানীয় দু’জন আওয়ামীলীগ নেতা পৃথক দুটি তালিকা জমা দেয়ায় এবং তাদের মধ্যে কোন ঐক্যমত স্থাপন করতে না পারায় সে ওয়ার্ডের চাল বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে গত মঙ্গলবার চাল দেয়ার নির্দিষ্ট দিনে দুটি তালিকার অন্তর্ভূক্ত এ ওয়ার্ডের প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ ইউনিয়ন পরিষদে এসে চাল না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে গেছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চেয়ারম্যান-মেম্বাররা দলীয়করণের অভিযোগ করে বলেন, এবার সরকারী দলের নেতারা ইচ্ছেমত ভিজিএফ তালিকা করে এনে তাতে আমাদের সই করতে বাধ্য করেছেন।

বর্তমানে ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায়ের প্রতিটি কমিটিতে বাধ্যতামূলকভাবে স্থানীয় সাংসদের মনোনীত একাধিক প্রতিনিধি থাকায় দলীয়করণ এখন ওপেন সিক্রেট হয়ে গেছে বলে তারা জানান। অতীতে কখনও এরকম হয়নি বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন। চান্দাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আতাউর রহমান জিন্নাহ দলীয়করণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, দলীয় কিছু নেতাকর্মীদের অবৈধ রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে আমরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা অসহায় হয়ে পড়েছি। দলীয় বিবেচনায় তালিকা হওয়ায় তালিকায় বেশ অনিয়ম হচ্ছে বলে তিনি জানান। বড়াইগ্রাম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এসএম শামীম এহসান বলেন, আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কেউ মৌখিক বা লিখিতভাবে কিছু জানায়নি।

কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসলে সেটা খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।