আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ সম্পর্কে যত মিথ্যা প্রোপাগান্ডা

জামায়াত শিবির এবং তাদের পরিচালিত মিডিয়া মেশিনগুলো যেমন দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক নয়াদিগন্ত, দৈনিক সংগ্রাম, দিগন্ত টিভি এবং সোনার বাংলা ব্লগ মিথ্যা প্রোপাগান্ডার উৎসবে মেতে উঠেছে। তাছাড়া ফেসবুকে একের পর এক ভুয়া পেজ খুলে তারা মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। বিভিন্ন কমিউনিটি ব্লগে তাদের সমর্থক ব্লগার বাহিনী মিথ্যা প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত করতে চাইছে সাধারণ মানুষকে। শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে তারা একের পর এক মিথ্যাচার করে গেছে। তাদের মিথ্যাচারের কয়েকটি নমুনা তুলে ধরছি : ০১) তারা প্রথমে বলল, শাহবাগে নাকি গাঁজাখোররা এই আন্দোলন করছে।

কিন্তু গণজাগরণ মঞ্চে বিপুল লোক সমাগম হওয়ায় তারা এই প্রোপাগান্ডা বন্ধ করে দিয়েছে। লাখ লাখ লোক গাঁজাখোর - এই কথা কোন গাঁজাখোরও বিশ্বাস করবে না। ০২) তারপর তারা বলল, শাহবাগে সব নাস্তিকরা জমায়েত হয়েছে। পরে বাস্তবে দেখা গেল, শাহবাগে দাড়ি টুপি পরা লোকও গেছেন। বয়স্ক মুরুব্বিরাও গেছেন।

তারপর দেখা গেল, শাহবাগে জামাত করে নামাজ আদায় করছে লোকজন। তখন তারা এই প্রোপাগান্ডা বন্ধ করে দিল। ০৩) তারপর তারা প্রচারণা চালাল, শাহবাগে নাকি সব বেশ্যা আর পতিতারা গেছে। কিন্তু আমরা টেলিভিশনে পরিষ্কার দেখলাম, যেই মেয়েরা সেখানে গেছে, তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের কর্মী। এদেরকে এভাবে বেশ্যা এবং পতিতা বলে চালানো প্রোপাগান্ডা ধোপে টিকে নি।

বরং যেই লাকি আক্তারকে পতিতা বা বেশ্যা বলেছে, তাকে এখন সবাই অগ্নিকন্যা হিসেবে চেনে। ০৪) তারপর তারা প্রচারণা চালাল যে, শাহবাগে নাকি ছেলে মেয়েরা রাতের বেলা অবাধ যৌনতায় মেতে উঠেছে। কিন্তু টেলিভিশন মিডিয়া সারাক্ষণ লাইভ করায় তাদের এই মিথ্যাচারও টিকল না। এত গুলি মিডিয়া লাইভ করছে যেখানে, সেখানে আদৌ কি যৌনকর্ম সম্ভব ? সুতরাং তাদের এই মিথ্যাচারও শীঘ্রই বন্ধ হয়ে গেল। ০৫) তারপর তারা বলল, পুরো আন্দোলনটি আওয়ামী লীগের সাজানো নাটক।

বিএনপি নেতা হান্নান শাহ এই কথা প্রকাশ্যে বললেন। কিন্তু যখন দেখা গেল, আওয়ামী লীগ কেন, কোন রাজনৈতিক নেতাদের বেইল নাই শাহবাগে, তখন তারা এই প্রোপাগান্ডাও বন্ধ করে দিল। ০৬) এবার মাঠে নামল জামায়াতের মূল প্রোপাগান্ডা মেশিন - দৈনিক আমার দেশ। তারা বলল, শাহবাগে ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থান ঘটেছে। কিন্তু আমরা টেলিভিশনে দেখছি, সেখানে আছে আপামর জনতা।

মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের সমর্থকরা সেখানে গেছে। সুতরাং আমার দেশের ফ্যাসিবাদী শক্তি বলে মিথ্যা প্রচারণাও টিকতে পারে নি। বরং এই মিথ্যাচারের কারণেই গণজাগরণ চত্বরে দৈনিক আমার দেশের কপিতে আগুন দিয়েছে জনতা। কিন্তু গণজাগরণ সম্পর্কে এখন মিথ্যাচারে ভরা প্রোপাগান্ডা এখনও চালিয়ে যাচ্ছে দৈনিক আমার দেশ। উল্লেখ্য, জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক তাসনীম আলম এই পত্রিকার অংশীদার।

০৭) মিথ্যা প্রোপাগান্ডার পাশাপাশি আন্দোলনকারী তরুণদের বিভ্রান্ত করার জন্য নানা কৌশল নিয়েছে বিএনপি এবং জামাত জোট। বিএনপি এই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করল, এক সপ্তাহ পর। কিন্তু তারা দাবী তুলল, যুদ্ধাপরাধীর বিচারের পাশাপাশি অন্যান্য ইস্যুকেও যোগ করতে হবে। অনেক অনেক ইস্যু যোগ করায় মূল ইস্যু যাতে চাপা পড়ে যায়, তাই তারা এই শর্ত দিল। তাদের এই কৌশলে কাজও হল।

অনেকে এখন বিভ্রান্ত। মানুষকে বোকা বানিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোই তাদের মূল উদ্দেশ্য। সত্যিকার অর্থে বিপুল সংখ্যক মানুষ এই সব মিথ্যাচারে কান দেয় নি। কারণ মিডিয়া অনেক। এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে সত্যকে চাপা দিয়ে রাখা যায় না।

মিথ্যাচার ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে মানুষকে সাময়িক বোকা বানানো যায় মাত্র, কিন্তু চিরকাল বোকা বানিয়ে রাখা যায় না। বরং এই সব মিথ্যাচার করে জামাত শিবির ও তাদের দোসররা, তাদের মুখোশ খুলে আসল চেহারাটা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে। এদের মিথ্যাচারে মানুষ আর বিভ্রান্ত হবে না। সুতরাং বিভ্রান্ত হবেন না। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে আর প্রশ্রয় দেবেন না।

এরা নানা কুট কৌশলে সিদ্ধহস্ত। এরা ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। এরা মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। শাহবাগ আন্দোলন - যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন। সারা দেশের মানুষ আজ এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম।

এই গণজাগরণ এই দেশের আপামর জনগণের। এই দেশকে যারা স্বীকার করে না, তাদের এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার নাই। অবিলম্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে ফাসি দিতে হবে এবং ধর্ম ব্যবসায়ী জামাত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। জামাত শিবিরের লোকজনকে চিরতরে রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠাতে হবে। অন্য কোন নাম দিয়ে এই অপশক্তি রাজনীতিতে ফিরে না আসতে পারে, সে ব্যাপারে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ নিতে হবে।

তাছাড়া জামাত শিবিরের সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বয়কট ও বাজেয়াপ্ত করতে হবে। জামাত শিবির পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য পাবেন এখানে : Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.