আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হে নিদ্রা তোমার জন্য...

"...কোন মানুষকেই তার কাজের জন্য বেশি প্রশংসা বা বেশি নিন্দা করা উচিত নয়। কারণ আমরা সকলেই অবস্থা, পরিবেশ, শিক্ষা, অভ্যাস, বংশগত ধারা ইত্যাদির উপর নির্ভরশীল..." -Lincoln
যে কোন বয়সেই ইয়োগা করা যায় (ছবিতে দেখুন)। তবে একটু সাবধান। যারা ঘুমাতে চান না তারা সামুব্লগে বসে থাকুন। ঘুমের বারটা বাজানোর এটাই বড় দাওয়াই।

আর যারা ঘুমাতে চান তারা নিচের টিপস গুলি থেকে এক বা একাধিক টিপস পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। ১। ঘুমের জন্য নির্দিষ্ট একটা রুটিন মেনে চলুন। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান। একই সময়ে উঠুন।

যান্ত্রিক যুগের অনেক যন্ত্রনা। যন্ত্রনাগুলি বিছানায় নিয়ে যাবেন না। বিছানায় যাওয়ার ঘন্টা খানিক আগেই তা ঝেড়ে ফেলুন। এবং ঘুমানোর জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিন। ২।

দিনের ঘুম পরিহার করুন। ন্যাপ, ক্যাট স্লিপ পুরোপুরি বর্জনীয়। দিনের এই আরাম রাতের ঘুম হারাম করে পাশাপাশি ওজন বাড়ায়। গৃহিনীরা অভিযোগ করেন, এতো কম খাই (প্রায় হাওয়া খান) তাও ওয়েট কমে না। কমার কথাও না।

হাওয়া খেয়েও তারা যে পরিমান ক্যালরি গ্রহন করেন ঘরে বসে সে পরিমান ক্যালরি বার্ন করা সম্ভব নয়। তাই হাওয়া খেয়েও বপু বেড়েই চলে। তার উপর আছে লাঞ্চের পরের ভাত-ঘুম। অবশ্য যারা নিয়মিত জিমে যান তাদের কথা আলাদা। আলাদা হলেও তারা জানেন ফিটনেস ধরে রাখতে কী পরিমান পরিশ্রম করতে হয়।

৩। প্রতিদিন সকালে বা বিকালে ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাল্কা ব্যায়াম করুন। হাটা একটা ভাল ব্যায়াম। শোবার আগে কোন ব্যায়াম করবেন না। ৪।

রাতের খাবার গ্রহনের পরপরই বিছানায় যাবেন না। ঘুমাবার ২ থেকে আড়াই ঘন্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন। পেট খালি থাকলে যেমন ঘুম হয় না তেমনি ভরপেটে ঘুম আসে না। ভরপেটে বিছানায় যাওয়াও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। পরিমিত খাবার খান।

৫। ঘুমাবার ৩/৪ ঘন্টা আগে থেকেই ধুমপান, চা, কফি বা এলকোহল জাতীয় কিছু খাবেন না। আমরা সবাই জানি এগুলি শুধু ঘুমই না শরীরের জন্যেও ক্ষতিকর। ৬। শুয়ে বই পড়তে পারেন।

খানিক্ষণ পড়ুন তারপর ভাবুন। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে যাবেন। আমি খটমটে টাইপের বই হাতে নিয়ে বিছানায় যাওয়া মাত্র ঝিমুনি চলে আসে। কারো কারো ক্ষেত্রে হাল্কা ধরনের বই যেমন হাল্কা উপন্যাস ভাল কাজ দেয়। আমি উপন্যাস পড়তে গেলে প্রথমে চিৎ হওয়া থেকে উপুর হই।

সাসপেন্স- ক্লাইমেক্স শুরু হলে শোয়া থেকে উঠে বসি। বুঝতেই পারছেন ঐ রাতে আমার ঘুমের কি দশা হয়। ধর্মীয় বই-পুস্তকও পড়তে পারেন। আপনার ঘুমের জন্য উপযুক্ত বই আপনিই বেছে নিন। না হলে আমার মত সারারাত বসে কাটাতে হবে।

৭। টিভি ছেড়ে বা গান বাজিয়ে ঘুমাবেন না। বিজ্ঞানীরা বলেন, এতে ঘুমের ঘোরেও ঘুম বাধাগ্রস্থ হয়। সাউন্ড স্লিপ হয় না। এটা নাকি সাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

আমি অবশ্য মাঝে মাঝে গান ছেড়েই ঘুমাই। এবং ভাল ঘুমও হয়। প্রতিদিনতো আর একই ওষুধ কাজ করবে না। ৮। চোখে-মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন।

ভাল লাগবে। যারা নামাজ পড়েন তারা পুরোপুরি অজু করে ফেলুন। নামাজ না পড়লেও অজু করতে পারেন। শরীর ও মনে প্রশান্তি ভাব আসবে। ৯।

ঘুমের বড়ি খাবেন না। ঘুমের বড়ি খেলে ঘুম হয় বটে তবে সেই ঘুমে আপনি তরতাজা অনুভূতি পাবেন না। সাড়াদিন শরীর ম্যাজম্যাজ করবে। ঝিমুনি আসবে। অফিসে নিজের অজান্তে ঘুমিয়েও পড়তে পারেন এবং বিগ বসের অজান্তে ঘুমন্ত আপনি তার সামনেও পড়তে পারেন।

তখন মান-সম্মান নিয়ে টানাটানি। সুতরাং সাধু সাবধান। :-) ১০। মেডিটেশন করতে পারেন। মেডিটেশন করে অনায়াসে ঘুমিয়ে পড়তে পারবেন।

এটা পরিক্ষীত সত্য। তবে একটু চর্চার ব্যাপার। সম্ভব হলে পছন্দসই কোন একটা মেথডের (সিলভা মেথড, কোয়ান্টাম মেথড বা অন্য কোন কোর্স) কোর্স করে ফেলুন। শুধু ঘুম না বাস্তব জীবনকেও মেডিটেশন সহজ করে দেবে। মেডিটেশন কঠিন কিছুও নয়।

নিজে নিজেই চর্চা করতে পারেন। দম গণনা ও নিজের সাথে নিজে কথা বলাই মেডিটেশন। ১১। যারা বিশ্বাসী তারা মন শান্ত রাখার জন্য ধর্ম-কর্মের দিকেও ঝুকতে পারেন। এটাতো ধ্রুব সত্য যে সৃষ্টিকর্তার উপর আর কোন শক্তি নেই।

তার কাছে নির্দ্বিধায় আত্মসমর্পণ করা যায়। ঘুমাবার আগে প্রার্থনা করতে পারেন। মন শান্ত হবে। মন শান্ত হলে আপনা আপনি ঘুমিয়ে যাবেন। ১২।

যদিও বলেছি শোয়ার আগে কোন ব্যায়াম করবেন না। তবে হাল্কা ২/১ টা ইয়োগা আসন নিতে পারেন। যেমন পদ্মাসন বা সুখাসন, গোমুখাসন এবং ভূজঙ্গাসন। আমি অভিজ্ঞতায় দেখেছি আসন তিনটি বেশ কার্যকর। আবার ঠিকঠিক না করতে পারলেও ক্ষতির কোন আশংকা নেই।

পদ্মাসন (পাহার-পর্বতে বা সমুদ্রের পারে যেতে হবে না; বিছানায়ই করুন) গোমুখাসন ভূজঙ্গাসন (এটা কঠিন হবে) এটা চেষ্টা করে দেখুন ১৩। সব প্রস্তুতি শেষ করে শুয়ে পড়ুন। দম গণনা করুন। ১..২..৩..৪..। অনেকে কাউন্ট ডাউনের কথা বলেন।

আমি দেখেছি দম গণনায় এর প্রয়োজন হয় না। দম একভাবে গণনা করলেই হয়। কখন ঘুমিয়ে গেছেন পরের দিন মনে করার চেষ্টা করে দেখুনতো পারেন কি না। যা কিছু বললাম তার সবই আপনারাও জানেন। পেপার পত্রিকায় এ নিয়ে এতো বেশি লেখালেখি হয় যে প্রায় গিলিয়ে দেয়া হয়।

এসব পড়ে আমার মত অনেকেই বক্তৃতাও দেন। কাজেরকাজ কিছুই হয় না। তারপরও লেখার উদ্দেশ্য স্মরণ করিয়ে দেয়া। যদি কারো উপকারে আসে। আমরা হলাম জ্ঞানপাপি।

জানি অনেক কিছু কিন্তু মানি না। তাই ফলও পাই না। ফল পেতে হলে মানতে হবে।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।