এহসানুল ইসলাম সাদেকী (শিফা)’র পিতা এমডি শরীফ (৫০) বলেন, শুধু সাদেকী নয় ডিজিএফআই’র সহযোগিতায় বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ থেকে আরও ৮ জনকে গোপনে অপহরন করেছে এফবিআই। অপহৃতদের পরিবার এগিয়ে এসে বিচার দাবী করুন, এ অন্যায় প্রতিহত করুন।
বাংলাদেশী বংশদূত মার্কিন নাগরিক সাদেকী (২১)’র ন্যায় বিচার ও মুক্তির দাবীতে আজ সোমবার দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানব বন্ধন শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি এ কথা বলেন।
মানব বন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ঢাকা মেডিকের কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশগ্রহন করে।
মানব বন্ধন শেষে সাদেকী (২১)’র পিতা শরীফ সাংবাদিকদের আরও বলেন, তার ছেলেকে ২০০৬ সালের ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় ঢাকার বারিধারা থেকে অপহরন করে ডিজিএফআই’র সদস্যরা।
ঢাকা ক্যন্টনমেন্টে ৪ দিন আটকে রাখার পর মার্কিন গেয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’র হাতে সাদেকীকে তুলে দেওয়া হয়। এরপর তার কোন খোঁজ পাওয়া না গেলে বিবিসি ও সিএনএন অনুসন্ধান মূলক রিপোর্ট শুরু করে।
এক পর্যায়ে আমেরিকান হোমল্যন্ড সিকিউরিটি বাধ্য হয়ে অপহরনের কথা স্বীকার করে। সিআইএ’র একটি সামরিক বিমানে করে তাকে প্রথমে জাপানের গোপন বন্দিশালায় নিয়ে যাওয়া হয়। জাপান সরকার অনুমতি না দিলে সাদেকীকে জর্মান হয়ে আলাস্কার কোর্টে হাজির করা হয়।
কিন্তু সাদেকী’র শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম দেখে কোর্ট তাকে নিউইয়র্ক নিযে দ্রুত চিকিৎসার নির্দেশ দেন।
পরে নিউইয়র্ক কোর্ট সাদেকীকে জামিন প্রদান করলেও হোমল্যন্ড সিকিউরিটি জামিন বাতিল করে ‘সন্দেহ জনক’ ব্যাখ্যায় পুনরায় গ্রেফতার দেখিয়ে আটলান্টার গেপন বন্দীশালায় আটক রাখে।
সাদেকীর পিতা আক্ষেপ করে আরও জানান, ১৭ এপ্রিল ২০০৬ থেকে আজ পর্যন্ত সাড়ে তিন বছর নির্দিষ্ট কোন অভিযোগ না থাকার পরেও সাদেকীকে কারাগারে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। বাংলাদেশের সাথে আমেরিকার বন্দি প্রত্যাপর্তণ চুক্তি না থাকা সত্বেও পাসপোর্ট বিহীন ভাবে সাদেকীকে অমেরিকা নিয়ে যাওয়া এবং এই অপহরনের অভিযোগে তার পুত্রবধু হ্যাপী শাহনাজের দয়ের করা একটি মামলার রায়ে গত ২৬ আগষ্ট হাইকোর্ট সাদেকীর আটক ও পাচারের সমস্ত গোপন প্রকৃয়াটি অবৈধ এবং বেআইনী হিসেবে ঘোষনা করেছে। বারবার সরকারের সাহায্য চাওয়া হলেও সাদেকীকে ফিরিয়ে আনতে সরকার কোন ভূমিকা নেয়নি।
‘আই অ্যাম এ মুসলিম ইজ দ্যাট মাই অনলি ক্রাইম !’ আমেরিকার আটলান্টা আদালতে বিচারকের সামনে সাদেকীর করা এ প্রশ্নে বিশ্বব্যাপী মার্কিনিদের মুসলিম বিদ্বেষের চিত্র আরও প্রকট হয়ে ওঠে।
সাদেকীর মুক্তি প্রদানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শান্তিতে নোবের বিজয়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সহযোগীতা চেয়েছে ঢাবি ও বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। মানব বন্ধনে জাস্টিস ফর শিফা, রিলিজ শিফা ইমিডিয়েটলি, মার্কিন মুসলিম নিধন রুখে দাড়াঁও- ইত্যাদি লিখিত বিভিন্ন ব্যনার ও ফেস্টুন শিক্ষার্থীদের হাতে শোভা পায়।
সাদেকীর বিরুদ্ধে পাকিস্থান ভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন এলইটি’র কাছে তথ্য পাচার ও জঙ্গীদেও সাথে যোগাযোগ আছে বলে অভিযোগ করে সিআইএ। আটলান্টা কোর্টের জুরিরা ইতিমধ্যে সাদেকীর কেস সম্পর্কে তাদের মতামত প্রদান করেছেন, এখন অপেক্ষা বিচারকের রায়ের।
দোষী প্রমানিত হলে সাদেকীর ৬০ বছরের কারাদন্ড হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সাদেকীর পিতা এমডি শরীফ বিচারকার্যকে পক্ষপাতমূলক বলে অভিযোগ করেছেন।
আগামী ২২ অক্টোবর সাদেকীকে পুনরায় আমেরিকার আটলান্টা কোর্টে বিচারের জন্য হাজির করা হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।