জীবনে প্রথমবার গেটিস হয়েছিলাম পাশের বাড়ীর এক পিচ্ছির জন্মদিনে। তখন অবশ্য আমিও পিচ্ছি-ই ছিলাম। তাদের ঘরোয়া জন্মদিনের অনুষ্ঠানে
দাওয়াত না থাকলেও ফটোসেশনরে সময় ডাক পড়ল। সবার সাথে গিয়ে দাঁড়ানোর।
যেহেতু ছবি হচ্ছে ইতিহাস, আর তাই ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করতে সেই পিচ্ছির মা-বাবা'র মনে হয়েছিল আরো কিছু বাচ্চাকাচ্চা জড়ো করে ছবিটাকে আরো তাৎপর্যপূর্ণ করা হোক।
যাতে পিচ্ছি বড় হলে হলে বলতে পারে, দেখো তোমার জন্মদিনে কি আয়োজন হতো। কতো মানুষকে দাওয়াত দেয়া হতো।
পিচ্ছি হয়তো বড় হয়ে এ কারনে হলেও মা বাবার প্রতি এক্সট্রা কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ থাকবে।
তারপর থেকে আমার গেটিস জীবনের কোনো পরিসমাপ্তি ঘটেনি। নানা ঘরোয়া অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মিছিলেও জননেত্রী, দেশনেত্রীর গেটিস সৈনিক হিসেবে গিয়েছি।
আমার প্রিয় একজন মোজাম্মেল প্রধান, গোপনে যাকে এমপি বলি। যদিও আগে বলতে ভয় লাগতো। কারন, শামীম ওসমানের নির্বাচনী এলাকা নারায়ণগঞ্জ-৪ এর মানুষ মোজাম্মেলকে শামীম ওসমান বর্তমান থাকা অবস্থায় এমপি বলা যথেষ্ট বিপদজনক ছিল।
যাই হোক, সেই এমপি সাহেব ব্লগে সাম্প্রতিক সময়ে এক আড্ডার ডাক দিয়েছেন এবং উপস্থিত থাকবেন-এর নামের তালিকায় প্রথমেই দেখলাম আমার নাম। গেটিস হিসেবে এখানেও ঢুকে গেছি।
মোজাম্মেল আমার গেটিস জীবন জানে কি না জানিনা। আমি দেখে অবাক হয়েছি।
পরে মোজাম্মেল এর সাথে কথা হলে বেশ ভাব নিয়ে বললাম, এটা কি মোজাম্মেল, একজন সন্মাণিত(!) ব্লগারের অনুমতি ছাড়া তার নাম ব্যবহার করেছেন? তাকে গেটিস বানিয়ে দিয়েছেন।
যদিও মোজাম্মলকে একবার জিজ্ঞাসা করেছিলাম, মতিঝিলে অবস্থানকারীরা আমন্ত্রিত কিনা? হতে পারে সেটাই আগ্রহ হিসেবে কনভার্ট হয়ে গিয়েছিল প্রিয় মোজাম্মেলের কাছে।
মোজাম্মেলের পোষ্টে তখন অনেক আড্ডায় আগ্রহী ব্লগারের সমর্থন।
তাই তাকে বেশি ভাব নিয়ে বলতেও পারছিনা। যদি আবার নাম বাদ দিয়ে দেয়!
মোজাম্মেল জানালো, ইশতিয়াক ভাই এইটা কী আর আমাদের মধ্যে বলা লাগে?
আমার তখন সন্মানিত(!) ব্লগার হিসেবে নিজের সকল ভাব এক নিমিষে উড়ে গেল। ভার্চুয়াল জগত থেকে ফিরে গেলাম বাস্তবে।
সংগঠক মোজাম্মেলের অনুষ্ঠানে আমি গিয়েছি। কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজক হিসেবে সে বরাবরই সফল।
তাই এই কঠিন আয়োজন করার সাহস!
আমার বিশ্বাস এটাও মোজাম্মেলের সফল আয়োজন হবে।
ব্লগে বিরোধীতা থাকেই। এটা চিরায়িত। এই আড্ডায়োজন নিয়েও এমন বিরোধীতা আছে। ব্যাক্তিগত পছন্দ অপছন্দের বিষয়টা যেমন অস্বীকার করা যায় না তাই এটা থাকবেই।
তবে এ নিয়ে যে কারোই ঝাপিয়ে পড়ার কারন নেই।
যাদের ভাল্লাগবে আসবে। লাখ টাকার শখ পূরণ করবে মাত্র ৫০ টাকায়। যাদের ভাল্লাগবেনা আসবেনা। ৫০ টাকা বেঁচে যাবে।
একান্ত প্রত্যাশা এই ব্লগাড্ডা সফল হবে।
আমার কাছে মনে মানুষের এই ছোট্ট জীবনে নতুন কোনো মানুষের সাথে পরিচয়ের চেয়ে বড় আবিস্কার আর নেই। অপার রহস্যের ভান্ডার মানুষকে জানার চেয়ে বড় কোনো জ্ঞান আর নেই।
মোজাম্মল তার এই ডাকের মাধ্যমে নতুন কিছু পরিচয়ের আয়োজন করতে যাচ্ছে তার চেয়ে বড় বিষয় এই মানুষগুলো সেই মানুষ, যাদের আমরা চিনিনা, অথচ যাদের সাথে আমরা দিনের বেশি সময় এমনকি মাঝে মাঝে পুরোদিনই কাটিয়ে দিচ্ছি।
এবং সেটা দীর্ঘদিন ধরে।
একমত হচ্ছি, দ্বিমত করছি, ঝগড়া করছি, ভালোলাগা শেয়ার করছি, আরেকজনের বেদনায় কষ্ট পাচ্ছি।
সেই মানুষগুলোকে 'নিজের চোখে' দেখার এই আয়োজনকে কোনোভাবেই খারাপ চোখে দেখিনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।