আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রতিগপ্প: অসমাপ্ত

http://www.choturmatrik.com/blogger/আরণ্যক
ছোট্ট একটা মাঠ। তার কোনায় একটা বেন্চি পাতা। নিজের চিন্তায় নিমগ্ন এক মধ্যবয়সী হেলান দিয়ে বসা। আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে একদৃষ্টিতে দূরে গাছটার দিকে তাকিয়ে আছেন তিনি । তিনি আসলে গাছটাকে দেখছেন না ।

এখন থেকে অনেক বছর আগে তাদেরই পূর্বপুরুষদের হাত দিয়ে শুরু হয়েছিলো এই সমাজব্যবস্থা । এই সমাজে সুষম ভারসাম্যমূলক জনসংখ্যা ছিলো । সবার হাতেই কাজ ছিলো । টাকা পয়সার প্রচলন উঠে গিয়েছিলো । মানুষ তার গাড়ীতে অন্য মানুষদের লিফট দিতো ।

কৃষকের বাড়ীতে ইন্টারনেট দিতো টেকি লোকজন । কৃষকতার ফলানো সবটা শস্যই কেন্দ্রীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রনের হাতে তুলে দিতো। অপ্রয়োজনীয় বিলাস দ্রব্য যেটিয়ে দূর করা হয়েছিলো । মানব কল্যান বিহীন গবেষনাও বন্ধ হয়েছিলো । যেহেতু টাকার প্রচলন নাই -- ধনী গরীবের বৈষম্যও শেষ হয়ে গিয়েছিলো ।

মানুষকে হিপনোটাইজ করে সুন্দর অসুন্দরের ধারনা দূর করা হয়েছিলো। সমাজ থেকে অপরাধের ধারনাটাই দূর হয়ে গিয়েছিলো। কারন মানুষের কাছে পর্যাপ্ত খাবার, পর্যাপ্ত সময় ছিলো । যাদের অহংকার খুব বেশী তাদের সম্মানে সমাজ থেকে চলে যেতে বলা হয়েছিলো । শুধু রিপ্রডাকশনের জন্যই সেক্স এমনটাই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিলো ।

মোটামুটি বলা যায় -- পৃথিবীতে স্বর্গের রুপ । একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন লোকটা । অথচ একটা প্রজন্ম না যেতেই পুরো ব্যবস্থাটাই কেনো বিগড়ে যেতে বসেছে সেটাই চিন্তা করছেন। শুরুটা সম্ভবত ফুল নিয়ে হয়েছিলো । কিশোর-যুবকরা তাদের সংগিনীদের ফুল দিতে চায় ।

সবাই সুখী হবার কারনে ফুল চাহিদা খুব বেড়ে গিয়েছিলো । ফুলচাষীটা আবার তাদের মতো করে ছোট আকারে টাকার প্রচলন শুরু করলো । কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রন অবশ্য ব্যপারটা জানার আগেই অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিলো । ফুলচাষীদের হাতে তখন অনেক টাকা। জন্ম নিলো মাঝের দালাল শ্রেনী তারা ফুলচাষীদের চাটুকার ।

ফুলচাষীরা নিজেদের মহান ভেবে অহংকার করা শুরু করলো । তাদের ছাড়া প্রেম অচল । রিপ্রডাকশন বিষয়ে নীতির কোন তোয়াক্কাই করলো না তারা । কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রন তাদের সামনে নতজানু হয়ে গেলো শুধু মাত্র নরম মনের মানুষেরা সেখানে ছিলো বলে । স্বর্গের উল্টো পিঠে নরক থাকে -- এটার মতোই যেসব উঠে গিয়েছিলো তা আজ আরো ভয়ানক রুপে ফেরত আসতে শুরু করেছে ।

তরুনদের সাথে এখন বুড়োরাও পিছিয়ে নেই । তারা মরার ভয়ে হেন কোন কাজ নেই যে করছে না । মরার আগে সমস্ত কিছুর অভিজ্ঞতা তাদের নিতেই হবে । ~~~ মধ্যবয়স্ক লোকটি ভেবেই চলছেন -- আর সুন্দর কোন কিছু ধ্বংস দেখার অভিজ্ঞতায় নির্জীব বোধ করছেন কিছুটা -- চোখের কোন দিয়ে দেখলেন ১৬-১৭ বছরের কয়েকটা ছেলে-মেয়ে গল্প করতে করতে উঠে আসছে । ~~~ "এই দেখ আরেকটা বসে আছে এখানে" উচ্ছল টাইপের একটা মেয়ে বলল।

বিরক্তির ছাপ পড়া চেহারার একটা ছেলে বলল - "ধুর! আমার সব বোরিং লাগছে" নেতা গোছের যে ছিলো সে বলল "তাহলে যা - এইবার তোর পালা" চকচকে একটা ছুরি হাতে ছেলেটা এগিয়ে যায় তার একঘেয়েমি দূর করার আশায় । ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~ প্রাককথন: প্রতিকাব্য: হাত খরচের জন্য জংলীফুল -- এই লেখাটার উৎস।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.